অমৃতসরে হামলার পিছনে সেই হাফিজ, দাবি দিল্লির

গত কালের অমৃতসর হামলার নেপথ্যে লস্কর নেতা হাফিজ সইদের মস্তিষ্ক রয়েছে বলেই মনে করছে দিল্লি। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের মতে, গত কয়েক মাসে পঞ্জাবে অন্তত এক ডজন পাকিস্তানি জঙ্গি মডিউলের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে একাধিক জঙ্গিকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:২৭
Share:

হাহাকার: হামলায় নিহত সন্দীপ সিংহের শেষকৃত্যে কান্না পরিজনের। সোমবার অমৃতসরে। পিটিআই

গত কালের অমৃতসর হামলার নেপথ্যে লস্কর নেতা হাফিজ সইদের মস্তিষ্ক রয়েছে বলেই মনে করছে দিল্লি। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের মতে, গত কয়েক মাসে পঞ্জাবে অন্তত এক ডজন পাকিস্তানি জঙ্গি মডিউলের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে একাধিক জঙ্গিকে। যাদের জেরা করে জানা গিয়েছে যে হাফিজ সইদ ও পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই হাত মিলিয়ে নতুন করে পঞ্জাবকে অশান্ত করতে সক্রিয় হয়েছে। তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে খলিস্তানি জঙ্গিরাও। গত কালের হামলার দায়িত্বে খলিস্তানি জঙ্গিরা ছিল বলেই মনে করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। পঞ্জাবের পরিস্থিতি নিয়ে আজ সকালে বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, স্বরাষ্ট্রসচিব, ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ ও র’-এর অফিসারেরা।

Advertisement

গোয়েন্দাদের দাবি, জম্মু-কাশ্মীরের পাশাপাশি পঞ্জাবকে অশান্ত করতে গত কয়েক বছর ধরেই আইএসআই সক্রিয় রয়েছে। ভারতীয় গোয়েন্দাদের মতে, সেই কাজে এ বার হাফিজ সইদের সাহায্য নেওয়া শুরু করেছে পাক গুপ্তচর সংস্থা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, সম্প্রতি খলিস্তানপন্থী কট্টর জঙ্গি নেতা গোপাল সিংহ চাওলা দেখা করে হাফিজের সঙ্গে। সেই বৈঠকে কী ভাবে পঞ্জাবে সন্ত্রাসের আবহ ফিরিয়ে আনা যায় তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘সম্প্রতি পঞ্জাবের একাধিক শহরে ডজনখানেকের বেশি জঙ্গি মডিউল ও স্লিপার সেলের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছে একাধিক কাশ্মীরি পড়ুয়াও।’’ ওই কর্তার দাবি, কাশ্মীরে ধরপাকড় শুরু হওয়ায় স্বভাবতই জম্মু-পঞ্জাব সীমান্তে জঙ্গি তৎপরতা বেড়ে গিয়েছে। তবে আশার কথা হল এখনও স্থানীয় পঞ্জাবি যুবকদের ওই নেটওয়ার্কের সঙ্গে সরাসরি কোনও সম্পর্ক পাওয়া যায়নি। এ দিকে গত কালের হামলার ঘটনায় সন্দেহভাজন দুই যুবকের ছবি প্রকাশ করেছে পঞ্জাব পুলিশ। তল্লাশি চলছে গোটা রাজ্য জুড়ে। সিল করে দেওয়া হয়েছে আন্তঃরাজ্য সীমানা।

আজ সকালে ভারতীয় সেনাই ওই হামলা করেছে বলে মন্তব্য করে বিতর্কে জড়ান আপ বিধায়ক এইচ এস ফুলকা। দিন কয়েক আগে সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়ত দাবি করেছিলেন, পঞ্জাবে ফের খলিস্তানি জঙ্গিরা সক্রিয় হয়েছে। আজ ফুলকা দাবি করেন, ‘‘নিজের বক্তব্য প্রমাণে সেনাপ্রধানই ওই হামলা করিয়েছেন।’’ মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক শুরু হওয়ায় পিছু হটেন ওই আপ নেতা। তিনি দাবি করেন, ‘‘আমার মন্তব্যকে বিকৃত করা হয়েছে। আমি ওই ভাবে কথাটা বলতে চাইনি। তবু বেফাঁস মন্তব্যের জন্য আমি ক্ষমা চাইছি।’’

Advertisement

নিরঙ্কারি সম্প্রদায়ের সঙ্গে অন্য সম্প্রদায়ের বিরোধের কারণেও ওই হামলা হতে পারে বলে গত কাল দাবি করেছিল পঞ্জাব প্রশাসনের একাংশ। আজ ঘটনাস্থল ঘুরে সেই দাবি খারিজ করে দেন মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘গ্রেনেড ছোড়া হয়েছিল প্রার্থনায় উপস্থিত ব্যক্তিদের হত্যা করার উদ্দেশ্যেই। তাই এটি কোনও ভাবেই দুই সম্প্রদায়ের সংঘর্ষের ঘটনা নয়। নিশ্চিত ভাবে একটি সন্ত্রাসবাদী হামলা।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement