গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
বর্তমানে নিলম্বিত (সাসপেন্ডেড) বিজেপি মুখপাত্র নূপুর শর্মার বিতর্কিত মন্তব্য এবং তৎপরবর্তী বিক্ষোভের ঘটনায় তোলপাড় পড়ে গিয়েছে ভারত-সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। এ বার এই প্রেক্ষিতে কড়া বিবৃতি জারি করে ভারত সরকারকে মুসলমানদের নিশানা না করার আবেদন জানাল অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
সম্প্রতি একটি সংবাদমাধ্যমে বিজেপি মুখপাত্র নূপুর শর্মার (বর্তমানে নিলম্বিত) বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে আরব দুনিয়ায় কার্যত একঘরে হয়ে যায় ভারত। একাধিক দেশ ভারতের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে শাসক দলের মুখপাত্রের মন্তব্যের বিরোধিতা করে। পশ্চিম এশিয়ার একাধিক বাণিজ্যিকস্থলে ভারতীয় পণ্য বয়কট করা হয়। বিরোধিতা, বিক্ষোভ শুরু হয় দেশের মধ্যেও। কিন্তু বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলো সেই বিক্ষোভ দমনে ‘অতিরিক্ত কড়া’ পদক্ষেপ গ্রহণ করে বলে অভিযোগ। এ বার সেই প্রেক্ষিতে কড়া বিবৃতি জারি করল অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। বিবৃতিতে লেখা হল, ‘বিক্ষোভ দমনে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ যেন অবিলম্বে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ থেকে বিরত হয়।’ বিক্ষোভ দমনের কড়া প্রক্রিয়ায় দেশে একটি শিশু-সহ দু’জনের মৃত্যু হয়েছে বলেও দাবি করেছে অ্যামনেস্টি। প্রেস বিবৃতিতে অ্যামনেস্টি লিখেছে, ‘শান্তিপূর্ণ উপায়ে যাঁরা প্রতিবাদ জানাচ্ছেন তাঁদের যে কায়দায় আইনশৃঙ্খলার ক্ষেত্রে ‘বিপজ্জনক’ হিসাবে চিহ্নিত করা হচ্ছে তা গভীর উদ্বেগের বিষয়। একইসঙ্গে মুসলমানদের নিশানা করে সরকার ক্রমাগত যে পদক্ষেপ করছে তাও চিন্তার বিষয়।’ রাষ্ট্র মুসলমানদের নিশানা করছে বলেও দাবি করেছে অ্যামনেস্টি। বিবৃতিতে তারা লিখেছে, ‘ভারত সরকার প্রতিশোধমূলক ভাবে বেছে বেছে সেই সমস্ত মুসলমানদের উপর নিপীড়ন নামিয়ে আনছে যারা মুখ খোলার স্পর্ধা দেখাচ্ছেন বা শান্তিপূর্ণ উপায়ে তাঁদের উপর হওয়া বিদ্বেষের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।’
এ বিষয়ে এখনও সরকারের কোনও প্রতিক্রিয়া আসেনি।
প্রসঙ্গত, ২০২০-তেই ভারতে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। মানবাধিকার রক্ষায় দৃষ্টান্তমূলক কাজের জন্য অ্যামনেস্টি স্থান পেয়েছে নোবেল শান্তি পুরস্কারের তালিকাতেও। সেই অসরকারি সংস্থাকেই আর্থিক গোলমালের অভিযোগে ‘এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)’ সমস্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এবং আর্থিক লেনদেন বন্ধ করে দেয়। প্রশ্ন তোলা হয় সংস্থায় গৃহীত বিদেশি অনুদানের স্বচ্ছতা নিয়েও। এর পরই ভারতে তাদের সমস্ত শাখা বন্ধ করে দেশত্যাগ করে অ্যামনেস্টি।