Amit Shah

Shah-Modi: শাহের প্রচারে মুখ মোদী, পাশে অবশ্য অজয়ই

২০১৪ ও ২০১৯ সালে উত্তরপ্রদেশে বিপুল সংখ্যায় লোকসভা আসনে জয় কেন্দ্রে বিজেপির ক্ষমতা দখল নিশ্চিত করেছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২১ ০৯:১০
Share:

ফাইল চিত্র।

ভারতীয় রাজনীতির প্রাচীন প্রবাদ— ‘দিল্লির তখ্‌তে পৌঁছনোর রাস্তা যায় লখনউ ঘুরে’। অর্থাৎ, লোকসভা নির্বাচনে জিতে কেন্দ্রে সরকার গড়তে আগে উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা ভোটে জেতা জরুরি। সেই আপ্তবাক্য মাথায় রেখেই শুক্রবার ভোটমুখী উত্তরপ্রদেশে প্রচার শুরু করে দিলেন অমিত শাহ। ডাক দিলেন ২০২৪ সালে কেন্দ্রে বিজেপিকে ক্ষমতায় ফেরাতে আগে রাজ্যে যোগী আদিত্যনাথের সরকারকে ক্ষমতায় ফেরানোর।

Advertisement

শাহের কথায়, “মোদীকে ২০২৪ সালেও প্রধানমন্ত্রী দেখতে চাইলে, যোগীকে ২০২২ সালে জিতিয়ে আনুন। আমরা উত্তরপ্রদেশকে দেশের এক নম্বর রাজ্য হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। উত্তরপ্রদেশে জয়লাভ ছাড়া কেন্দ্রে সরকার গড়া সম্ভব নয়।’’ অনেকে বলছেন, যোগীর শাসন এবং কোভিড মোকাবিলায় ব্যর্থতা নিয়ে রাজ্যবাসীর মনে প্রবল ক্ষোভ জমা হয়েছে। তাই মোদীকে সামনে রেখে ভোট চাওয়ার রাস্তা নিয়েছে বিজেপি।

২০১৪ ও ২০১৯ সালে উত্তরপ্রদেশে বিপুল সংখ্যায় লোকসভা আসনে জয় কেন্দ্রে বিজেপির ক্ষমতা দখল নিশ্চিত করেছিল। ২০২৪ সালেও তার পুনরাবৃত্তি নিশ্চিত করতে দলীয় কর্মীদের মাঠে নামার আহ্বান জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ। কিন্তু তাতে সম্ভবত তাল কিছুটা কাটল তাঁর পাশে বিতর্কিত স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনির উপস্থিতিতে।

Advertisement

সম্প্রতি লখিমপুর খেরিতে অজয়পুত্র আশিসের গাড়িতে চাপা পড়ে কৃষক মৃত্য়ুর ঘটনায় সরগরম হয়েছিল উত্তরপ্রদেশের রাজনীতি। এ দিন সেই অজয়কে অমিতের পাশে দেখে কংগ্রেস প্রশ্ন তুলেছে, ‘‘যখন অমিত শাহের পাশেই অজয় মিশ্র দাঁড়িয়ে, তখন কৃষকেরা আর ন্য়ায় বিচারের আশা করবেন কী ভাবে?’’ এ দিন বক্তৃতায় শাহের দাবি, যোগী-জমানায় উত্তরপ্রদেশে বাহুবলী আর নেই। তাকে বিঁধে কংগ্রেস মুখপাত্র সুপ্রিয়া শ্রীতনের কটাক্ষ, ‘‘বাহুবলী তো শাহের পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন।’’

এই রাজনৈতিক চাপানউতোরের মধ্যে শীতের শুরুতে লখনউয়ের বাতাসে যোগী বিরোধিতার সুর প্রবল। গত দুই লোকসভায় যে ব্রাহ্মণ ভোট বিজেপির হাত শক্ত করেছিল, এ বার ক্ষত্রিয় যোগীর দিক থেকে তা সরে যেতে পারে। অভিযোগ, যোগী-জমানায় রাজপুত ও ক্ষত্রিয়দের কাছে তাঁরা কোণঠাসা। ক্ষোভ যোগী মন্ত্রিসভায় প্রতিনিধিত্বের অভাব নিয়েও। শেষ বেলায় অজয় মিশ্র ও জিতিন প্রসাদকে স্থান দেওয়ায় তা উবে গিয়েছে, এমন বলা শক্ত।

ক্ষুব্ধ দলিত সমাজ। গত পাঁচ বছরে উত্তরপ্রদেশে দলিতদের উপরে যে সমস্ত আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে, তা নতুন করে অক্সিজেন জুগিয়েছে দলিত নেত্রী বিএসপির মায়াবতীকে। মুখ ফেরাচ্ছেন ওবিসিরাও। অথচ রাজ্যের অর্ধেকের বেশি ভোটার তাঁরাই। তা সামাল দিতে মেডিক্যালে সংরক্ষণ, রাজ্যের হাতে ওবিসি তালিকা তৈরির মতো সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী সরকার। রাজ্যের দায়িত্ব পেয়েছেন ওবিসি নেতা ধর্মেন্দ্র প্রধান। কিন্তু তাতে পরিস্থিতি এখনও বদলায়নি।

আমজনতার ক্ষোভ ও আমলাতন্ত্র-পুলিশের খবরদারিতে বসে গিয়েছেন অনেক পুরনো নেতা-কর্মী। সূত্রের মতে, সেই কারণে আজ প্রাক্তন বিধায়ক, সাংসদ, বর্ষীয়ান কর্মীদের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠকে বসেন শাহ। করোনা-কালে কাজ হারিয়েছেন অনেকে। তাঁদেরও ক্ষোভ যথেষ্ট।

এই সমস্ত ক্ষোভের কথা মাথায় রেখেই নিজেদের খামতি স্বীকার করে নেওয়ার কৌশল নিয়েছেন শাহেরা। আজ তিনি মেনে নেন, যোগী সরকার ৯০ শতাংশ কাজ সারলেও, কিছু কাজ বাকি রয়ে গিয়েছে। সঙ্গে রয়েছে অতীতের অন্য দলের সরকারকে দোষারোপ আর মোদীকে সামনে রেখে প্রচারে নামার কৌশল।

আজ শাহের প্রথম দফার প্রচারেই স্পষ্ট যে, যোগীর বিরুদ্ধে তৈরি হওয়া ক্ষোভ সামাল দিতে মোদীর নামে ভোটে লড়াই কৌশল বিজেপির।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement