কূপওয়াড়া জেলার টিটওয়াল গ্রামে দেবী শারদার মন্দির ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ছবি: পিটিআই।
আর কয়েক মাস পরেই জম্মু ও কাশ্মীরে বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা। তার আগে বুধবার কূপওয়াড়া জেলার টিটওয়াল গ্রামে দেবী শারদার মন্দির ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। স্বাধীনতার পরে এই প্রথম নিয়ন্ত্রণরেখার (এলওসি) গা-ঘেঁষে কোনও মন্দিরের উদ্বোধন করা হল।
পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে মুজফফ্রাবাদ থেকে ১৬০ কিলোমিটার দূরে নীলম উপত্যকায় রয়েছে ১৮টি মহাশক্তি পীঠের একটি শারদাপীঠ এবং শারদা বিশ্ববিদ্যালয়ের ধ্বংসাবশেষ। ষষ্ঠ থেকে বারোশো শতকের মাঝে ভারতীয় উপমহাদেশে এটি ছিল অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মন্দির বিশ্ববিদ্যালয়। নালন্দা-তক্ষশীলার থেকেও প্রাচীন ওই বিশ্ববিদ্যালয়টি পরবর্তী সময়ে বিদেশি হানাদারদের হামলায় ধ্বংস হয়ে যায়। তারই স্মৃতিতে কাশ্মীরে গড়া হয়েছে নতুন মন্দির।
বিধানসভা ভোটকে ‘পাখির চোখ’ করেই নরেন্দ্র মোদী সরকারের এই পদক্ষেপ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ। মন্দির উদ্বোধনের পর শাহ জানান, নিয়ন্ত্রণরেখার ও পারে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে রয়েছে প্রাচীন শারদা মন্দির। সেখানে ভক্তদের যাতায়াতের সুযোগ করে দিতে ভবিষ্যতে কর্তারপুর করিডোরের ধাঁচে ‘পথ খোলার’ বিষয়টি কেন্দ্রের বিবেচনায় রয়েছে। প্রসঙ্গত, কর্তারপুরের ধাঁচে সীমান্তের ও পারে থাকা মূল শারদা মন্দির পর্যন্ত হিন্দুদের যাত্রার ব্যবস্থা করার জন্য দু’দেশের কাছে আর্জি জানিয়েছেন পিডিপি নেত্রী তথা জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতিও।
এক সময়ে শারদাপীঠের উদ্দেশে তীর্থযাত্রা শুরু হত আজকের টিটওয়াল গ্রাম থেকে। ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার ঠিক পরেই পাক হানাদারদের আক্রমণে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় টিটওয়ালের শারদা মন্দির এবং গুরুদ্বার। প্রায় তখন থেকেই ওই এলাকায় ওই মন্দির পুনর্নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছিল উপত্যকার পণ্ডিত সমাজ। ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে মন্দিরের উদ্বোধন করে শাহ বলেন, ‘‘৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহারের পরে কাশ্মীরের পরিস্থিতি যে শান্ত হয়েছে, তা সীমান্ত এলাকায় ওই মন্দির নির্মাণ থেকেই স্পষ্ট। কেবল হিন্দু মন্দিরই নয়, জঙ্গিরা বিভিন্ন সময়ে যে সুফি তীর্থস্থানগুলি ভেঙে দিয়েছে, সেগুলিও পুনরুদ্ধার করবে মোদী সরকার।’’