ফাইল চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গ নির্বাচনে তিনি ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন, বিজেপি ২০০-র বেশি আসনে জিতবে। ‘প্রচণ্ড বহুমত’ পেয়ে বাংলায় সরকার গড়বে। সেই ভবিষ্যৎবাণী মেলেনি।
এ বার উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনে আসন সংখ্যা নিয়ে অমিত শাহ কোনও রকম ভবিষ্যদ্বাণীর পথে হাঁটলেন না। তবে আজ উত্তরপ্রদেশের ভোটের প্রচার শেষে তাঁর দাবি, বিজেপি সরকারে ফিরছে। ‘প্রচণ্ড বহুমত’ বা নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়েই। তাঁর দাবি, শুধু উত্তরপ্রদেশ নয়। পাঁচ রাজ্যের মধ্যে যে চার রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় রয়েছে, সেই চারটিতেই তারা ক্ষমতায় ফিরবে। পঞ্জাবেও বিজেপির ফল প্রত্যাশার তুলনায় অনেক ভাল হবে বলে অমিত শাহের দাবি। তবে পঞ্জাবে কে সরকার গড়বে, তা নিয়ে পূর্বাভাস দিতে চাননি শাহ। তাঁর বক্তব্য, বিজেপি সরকার গড়বে না, এমন বলছি না। কিন্তু চতুর্মুখী লড়াইতেকে জিতবে, তা জ্যোতিষীই বলতে পারবেন।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকেরই মত, উত্তরপ্রদেশে ক্ষমতায় ফিরলেও বিজেপির আসন কমতে পারে। সে ক্ষেত্রে যোগী আদদিত্যনাথের বদলে ওবিসি নেতা কেশবপ্রসাদ মৌর্যকে মুখ্যমন্ত্রী করা হতে পারে বলে অনেকের মত। আবার বিজেপির অনেকের আশঙ্কা, সমাজবাদী পার্টির পক্ষে সমস্ত বিজেপি-বিরোধী ভোট পড়লে খেলা ঘুরে যেতে পারে। অমিত শাহ অবশ্য মুখ্যমন্ত্রী বদল বা হারের সম্ভাবনা খারিজ করে দিয়েছেন। ঠাকুর সম্প্রদায়ের যোগী আদিত্যনাথের বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণদের ক্ষোভের প্রশ্নও অস্বীকার করেছেন তিনি। শাহের বক্তব্য, কোথাও ব্রাহ্মণদের কোনও ক্ষোভ নেই।
বিজেপির জাতীয় সভাপতি জে পি নড্ডা আজ দাবি করেছেন, উত্তরপ্রদেশে তাঁরা সমাজবাদী পার্টির থেকে অনেক এগিয়ে। সমানে সমানে লড়াই হচ্ছে না। এসপি-আরএলডি-র জোট রাজ্যের একটি নির্দিষ্ট এলাকায় সীমাবদ্ধ। ভোট আসলে একতরফাই হচ্ছে। বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি, বেওয়ারিশ পশুর মতো বিষয় রয়েছে বলে মেনে নিলেও শাহের যুক্তি, সব কিছুরই প্রভাব পড়বে। আসল হল, কতখানি ভোট যোগ হবে, কতখানি কাটা যাবে। ২০১৪, ২০১৭, ২০১৯-র অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বলা যায়, বিজেপি অনেক এগিয়ে থাকবে।
তিন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে কৃষকদের আন্দোলন সত্ত্বেও নরেন্দ্র মোদী সরকার এক বছর গোঁ ধরে বসেছিল। উত্তরপ্রদেশের ভোটে তার আঁচ পড়বে ভেবেই ভোটের আগে কৃষি আইন প্রত্যাহার করতে হয়। তার পরেও পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে কৃষকদের ক্ষোভের মাসুল দিতে হবে বলে বিজেপির আশঙ্কা রয়েছে। যদিও আজ শাহের দাবি, কৃষক আন্দোলন এখন কৃষকদের মাথাতেও নেই, বিরোধী দলের মাথাতেও নেই। শুধু সাংবাদিকদের মাথায় রয়েছে। বিজেপি একদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জনপ্রিয়তা, অন্য দিকে কেন্দ্রীয় সরকারের সাধারণ মানুষের জন্য প্রকল্পের ফায়দা কুড়িয়েছে। যোগী আদিত্যনাথের সরকারের আমলে আইন-শৃঙ্খলার উন্নতির জন্যও মানুষ ভোট দিয়েছেন বলে দাবি তাঁর।