কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ফাইল চিত্র।
কয়লার অভাবে ধুঁকছে পঞ্জাব-সহ একাধিক রাজ্য। বিপর্যয়ের মুখে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রক্রিয়া। পরিস্থিতি থেকে ‘চোখ ফিরিয়ে থাকার’ অভিযোগের মধ্যেই সোমবার কেন্দ্রীয় কয়লা মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশীর সঙ্গে জরুরি বৈঠকে সারলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ছিলেন শক্তি মন্ত্রকের দায়িত্বে থাকা আর কে সিংহও। সূত্রের খবর, প্রায় ঘণ্টাখানেক চলে এই বৈঠক। বর্তমানে কয়লার জোগানে কতটা ঘাটতি রয়েছে এবং তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি সচল রাখতে কতটা প্রয়োজন সে সব নিয়ে মন্ত্রীদের সঙ্গে শাহের বিস্তারিত আলোচনা হয় বলে মনে করা হচ্ছে।
মন্ত্রীদের পাশাপাশি বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ আমলাও ওই বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। ছিলেন কেন্দ্রের অধীনস্থ সংস্থা ‘ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার কর্পোরেশন লিমিটেড’ (এনটিপিসি)-র আধিকারিকেরাও। উল্লেখ্য, ভারতের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার প্রায় ৭০ শতাংশই কয়লার উপর নির্ভর করে। তবে গত কয়েক মাস ধরে সেই জোগানে টান পড়ায় একাধিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদনে ঘাটতি দেখা দেয়। তবে সাম্প্রতিক কালে যা পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে তাতে কয়লার সরবরাহে প্রায় তলানিতে । রাজধানী-সহ একাধিক রাজ্য ‘অন্ধকারে ডুবে’ যাওয়ার আশঙ্কাও জোরাল হয়েছে।
পরিস্থিতির নিরিখে নানা মহল থেকে চাপ বাড়তে থাকে কেন্দ্রের উপরেও। ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করে তাঁকে চিঠি পাঠিয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। সরাসরি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিংহ চন্নীও। সোমবারও তিনি কেন্দ্রকে ফের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে উৎপাদন স্বাভাবিক করার দাবি জানান। সঙ্গে তাঁর আশ্বাস, কোনও মতেই পঞ্জাবে ‘পাওয়ার ব্ল্যাকআউট’ হতে দেবেন না তিনি। বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় কয়লামন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে, এমনকি তাঁকে তিনি রাজ্যের পরিস্থিতি জানিয়ে চিঠিও পাঠিয়েছেন বলে জানান চন্নী।
যদিও এখনও পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হয়নি সে রাজ্যে। বিদ্যুতের চাহিদা এবং সরবরাহের মধ্যে সামঞ্জস্য রাখতে নিয়মিত প্রায় ঘণ্টা তিনেকের জন্য একাধিক অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছে পঞ্জাবে বিদ্যুৎ সরবরাহের মূল দায়িত্বে থাকা পিএসপিএল। তারা জানিয়েছে, কয়লার যা জোগান রয়েছে তাতে হয়তো আরও দিন তিনেক টানা যাবে।
দিল্লির পরিস্থিতিও একই। যদিও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টির বিরুদ্ধে সুর চড়ালে গত কাল কয়লা মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছিল, ‘কেন্দ্রের অধীনস্থ সংস্থা ‘কোল ইন্ডিয়া’-র কাছে পর্যাপ্ত জোগান রয়েছে। ফলে ‘ব্ল্যাকআউটের’ যে আশঙ্কা করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’ তবে আজ শাহের সঙ্গে বৈঠকে মন্ত্রকের অবস্থান ঠিক কি ছিল তা অবশ্য স্পষ্ট নয়।