ছবি এপি
অনুঘটক ছিল দেশ জুড়ে সিএএ-এনআরসি বিরোধী আন্দোলন। বিরোধীদের অভিযোগ, মূলত আন্দোলনরত মুসলিমদের শায়েস্তা করতেই প্রশাসনের মদতে রাজধানীতে পরিকল্পিত সংঘর্ষ বাধানো হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল ভয়ের বাতাবরণ তৈরি করা। যাতে শাহিন বাগের মতো আন্দোলন অন্যত্র মাথাচাড়া দিতে না-পারে। বিরোধীদের তোলা সেই অভিযোগ আজ রাজ্যসভায় খারিজ করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত তাঁর যুক্তি, মার্কিন প্রেসিডেন্ট যখন সফর করছেন, তখন রাষ্ট্র সংঘর্ষে মদত দেবে— এটা হতেই পারে না।
গত কাল লোকসভার পরে দিল্লি সংঘর্ষ নিয়ে আজ আলোচনার পালা ছিল রাজ্যসভায়। বিরোধীদের অভিযোগ, আলোচনার ইচ্ছাই ছিল না শাসক শিবিরের। অভিযোগ খারিজ করে শাহ বলেন, ‘‘হোলির সময়ে সংঘর্ষের ইতিহাস রয়েছে। তাই হোলি মিটে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা হয়েছিল।’’ লোকসভার মতো রাজ্যসভাতেও বিরোধীদের দিকে ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগের আঙুল তোলেন শাহ। আপ সাংসদ সঞ্জয় সিংহ দাবি করেন, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের দাবিমতো সেনা নামালে অনেক আগেই সংঘর্ষ থেমে যেত। শাহ পাল্টা বলেন, ‘‘কেজরীবাল ২৭ ফেব্রুয়ারি সেনা নামানোর দাবি করেন। তত ক্ষণে সব শান্ত হয়ে গিয়েছে। আসলে আপের কাউন্সিলারের বাড়ি থেকে অস্ত্র-শস্ত্র পাওয়া গিয়েছে। কেজরীবালের অবস্থা বুঝতে পারছি।’’
শুরু থেকেই বিরোধীদের অভিযোগ ছিল— দিল্লির সংঘর্ষ পূর্বপরিকল্পিত। একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে পিছন থেকে মদত দিয়েছে রাষ্ট্র, বিশেষ করে দিল্লি পুলিশ। বিরোধীদের মতে, দেশ জুড়ে মুসলিমরা সিএএ-এনপিআর-এর বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছেন। তাঁদের কড়া বার্তা দিতে পরিকল্পিত ভাবে গুজরাতের ধাঁচে ওই সংঘর্ষ বাধানো হয়েছিল। যাতে দেশের অন্যত্র এ ধরনের আন্দোলনে বসার সাহস না করেন মুসলিমেরা। ঘটনাচক্রে সে সময়ে ভারতে ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাকেই ঢাল করে শাহের মন্তব্য, ‘‘ট্রাম্পের সফরের সময়ে সরকার দাঙ্গায় মদত দেবে— এটা হতে পারে কখনও? অবাস্তব!’’ উল্টে তিনি দাবি করেন, হাওয়ালার মাধ্যমে সংঘর্ষে মদত দিতে টাকা পাঠানো, আপ কাউন্সিলারের তাহির হুসেনের বাড়ি থেকে অস্ত্র উদ্ধার, সংঘর্ষে উস্কানি দিতে সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার, ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে বিভিন্ন স্থানে সরকারবিরোধী ধর্নাশিবির শুরু হওয়া বুঝিয়ে দিয়েছে, রীতিমতো ছক কষে ওই হামলা চালানো হয়েছিল।