কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ছবি: পিটিআই।
বছর দু’য়েক আগে মুন্দ্রা বন্দরে বিপুল পরিমাণে মাদক উদ্ধারের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে দেশের সব বন্দরে ‘কন্টেনার স্ক্যানার’ বাসাতে শুরু করেছে কেন্দ্র। যাতে মাদকের পাশাপাশি ধরা পড়বে অবৈধ অস্ত্র-বিস্ফোরক।
আজ থেকে দিল্লিতে শুরু হয়েছে দু’দিনের ‘অ্যান্টি নারকোটিক্স টাস্ক ফোর্স’ (এএনটিএফ)-এর জাতীয় সম্মেলন। আজ যার সূচনা করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি বলেন, ‘‘মোদী সরকার আগামী ২০৪৭ সালের মধ্যে দেশকে মাদক মুক্ত করার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে।’’ সেই কারণে রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকলেও, সব রাজ্যকে এই লক্ষ্যপূরণে এক যোগে কাজ করার আহ্বান জানান শাহ। তাঁর কথায়, ‘‘মাদক সমস্যা দূর করতে আমাদের নির্মম হতে হবে। মাদক ব্যবসায়ীরা এই চক্রের মূল অপরাধী। আর যাঁরা মাদক নেন তাঁরা শিকার। আমাদের লক্ষ্যই হল ওই চক্রকে ভাঙা।’’ বহু ক্ষেত্রে পারিবারিক ও সামাজিক লজ্জার ভয়ে সন্তানের মাদকাসক্তি স্বীকার করা বা সন্তানদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠানোর প্রশ্নে গড়িমসি করতে দেখা যায় বাবা-মা’কে। আখেরে সন্তানদের ক্ষতি হয়। তাই বাবা-মা’দের প্রয়োজনে কঠিন পদক্ষেপের আহ্বান করেছেন শাহ।
বিশ্বের অন্যতম দুই প্রধান মাদক পাচার-পথে ভারতের অবস্থান। যার এক দিকে রয়েছে ইরান-আফগানিস্তান ও পাকিস্তান। যাকে বলা হয় ‘গোল্ডেন ক্রেসেন্ট’। মায়ানমার, তাইল্যান্ড ও লাওস-কে নিয়ে ‘গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গল’। আজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের শীর্ষ সূত্রে বলা হয়েছে, ওই এলাকাগুলিকে যথাক্রমে ‘ডেথ ক্রেসেন্ট’ ও ‘ডেথ ট্রায়াঙ্গল’ বলা শুরু করেছে ভারত। যা মেনে নিয়েছে অন্য দেশগুলিও।
গত কয়েক বছর দেশের পশ্চিম সীমান্তের একাধিক বন্দরে বিশেষ করে গুজরাতের মুন্দ্রা বন্দরে তিন হাজার কিলোগ্রাম মাদক-সহ কন্টেনার ধরা পড়ে। গোয়েন্দাদের মতে, ঘটনাচক্রে ওই বিষয়টি নজরে পড়ে গিয়েছিল এক আধিকারিকের। কন্টেনারে ওই মাদককে ট্যালকম পাউডার হিসেবে দেখানো হয়েছিল। দেখা যায়, পাউডারের যা দাম তার থেকে জাহাজ ভাড়া করে তা আফগানিস্তান থেকে ভারতে নিয়ে আসার খরচ বেশি। এতে সন্দেহ হওয়ায় পরীক্ষাগারে ওই পাউডার পাঠানো হলে তাতে মাদক ধরা পড়ে। কিন্তু প্রতিটি ক্ষেত্রে কন্টেনার বেছে বেছে পরীক্ষা করা সম্ভব নয়। ওই সমস্যা এড়াতে কোনও বন্দরে নামানো সমস্ত কন্টেনারকে স্ক্যান করে দেখার প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু করেছে কেন্দ্র। মাদক ছাড়াও, অস্ত্রশস্ত্র কিংবা মানব পাচার হলে তা ধরে ফেলতে পারবে ওই স্ক্যানার। সূত্রের মতে, পরীক্ষামূলক ভাবে কিছু বন্দরে ওই স্ক্যানারের ব্যবহার শুরু হয়েছে। আগামী দিনে স্থলবন্দরগুলিতে ওই ব্যবস্থা চালু করা হবে।