অমিত-চালে বসপা, সপার ঘরেও ভাঙন

শনিবার অমিত শাহ লখনউ পৌঁছেছেন। আর এ দিনই সমাজবাদী পার্টির দু’জন ও বহুজন সমাজ পার্টির একজন বিধান পরিষদের সদস্য পদত্যাগ করেছেন। লখনউয়ের রাজনৈতিক সূত্রের খবর, আরও কয়েক জন বিরোধী নেতা বিধান পরিষদ থেকে পদত্যাগ করে খুব শীঘ্রই বিজেপিতে যোগ দেবেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৭ ০৩:২৪
Share:

স্বাগত: লখনউ বিমানবন্দরে অমিত শাহ। রয়েছেন যোগী আদিত্যনাথও। শনিবার। ছবি: পিটিআই।

তিন দিনের সফরের শুরুতেই বিরোধী শিবিরের তিনটি ঘুঁটি ফেলে দিলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ।

Advertisement

শনিবার অমিত শাহ লখনউ পৌঁছেছেন। আর এ দিনই সমাজবাদী পার্টির দু’জন ও বহুজন সমাজ পার্টির একজন বিধান পরিষদের সদস্য পদত্যাগ করেছেন। লখনউয়ের রাজনৈতিক সূত্রের খবর, আরও কয়েক জন বিরোধী নেতা বিধান পরিষদ থেকে পদত্যাগ করে খুব শীঘ্রই বিজেপিতে যোগ দেবেন।

উত্তরপ্রদেশে সরকার গঠন হলেও খোদ মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ও তাঁর সরকারের চার মন্ত্রী এখনও বিধানসভা বা বিধান পরিষদের সদস্য নন। সপা-বসপার ছেড়ে দেওয়া আসনগুলি থেকে জিতেই বিজেপি নেতারা বিধান পরিষদে আসবেন বলে মনে করছেন লখনউয়ের রাজনীতিকেরা।

Advertisement

স্বাভাবিক ভাবেই সরব অখিলেশ যাদব, মায়াবতীরা। তাঁদের অভিযোগ, অর্থ ও সরকারি ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে বিরোধী দল ভাঙছে বিজেপি। ঠিক যে ভাবে গুজরাতে কংগ্রেস থেকে বিধায়কদের ভাঙিয়ে আনছে তারা।

মুখে এই অভিযোগ করছেন বটে। কিন্তু সেই সঙ্গেই ‘টিম অমিত শাহ’-র পরিকল্পনায় স্তম্ভিত অখিলেশ-মায়াবতীরা। যোগী, তাঁর দুই উপ-মুখ্যমন্ত্রী কেশবপ্রসাদ মৌর্য্য ও দিনেশ শর্মা এবং দুই মন্ত্রী স্বতন্ত্র দেব ও মহসিন রাজা যে বিধানসভার কোনও কক্ষেরই সদস্য নন, তা অখিলেশ-মায়াবতীদের জানাই ছিল। তাঁরা ভেবেছিলেন, এই পাঁচ জনকে জায়গা করে দিতে বিজেপিরই কেউ জায়গা ছেড়ে দেবেন। তার বদলে বিজেপি যে সপা-বসপারই ঘর ভাঙবে, তা আঁচ করেননি। সপা-জমানায় অখিলেশ মুখ্যমন্ত্রী হলেও বরাবরই বিধান পরিষদের সদস্য ছিলেন। গত বিধানসভা ভোটেও তিনি লড়েননি। যোগী আদিত্যনাথও বিধান পরিষদেই জিতে আসবেন না কি বিধানসভার ভোটে লড়বেন, এখন সেটা দেখার। অখিলেশের অভিযোগ, ‘‘আসলে বিজেপি নেতারা উপনির্বাচনে মানুষের মুখোমুখি হতেই ভয় পাচ্ছেন।’’ মায়াবতী বলেন, ‘‘গোয়া, মণিপুরের পর বিহার, গুজরাত, উত্তরপ্রদেশে বিজেপি ক্ষমতার লোভে গণতন্ত্রকে বিসর্জন দিচ্ছে। ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ সরকারও কেন্দ্রীয় সরকারের জন্য আতঙ্কিত।’’

বিধান পরিষদ থেকে পদত্যাগ করলেও সপা-র দুই নেতা বুক্কাল নবাব ও যশবন্ত সিংহ এখনও বিজেপিতে যোগ দেননি। তবে বুক্কাল নরেন্দ্র মোদী ও আদিত্যনাথের ভূয়সী প্রশংসা করে জানিয়েছেন, বিজেপি ডাকলেই তিনি তৈরি। এখনও হাতের তাস খোলেননি বসপা-র ঠাকুর জিয়াবীর সিংহও। তবে এঁদের বিজেপিতে যোগদান নিছক সময়ের অপেক্ষা বলেই মনে করা হচ্ছে। সূত্রের খবর, অখিলেশের দলের অন্তত তিন জন বিধায়ক বিজেপিতে যোগ দিতে তৈরি। উপ-মুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্য্যের কথায়, ‘‘পদত্যাগটা ওঁদের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। বিধান পরিষদের ভোটে বিজেপি ওই আসনগুলি জিতে নেবে।’’

বিরোধীদের ঘর ভাঙানোর পাশাপাশি লখনউ সফরে অবশ্য দলের ঘর গোছানোর কাজটিও করবেন অমিত শাহ। যোগী ও উপ-মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্য সভাপতি কেশবপ্রসাদ মৌর্য্যর মধ্যে মতভেদের খবর তাঁর কানে পৌঁছেছে। প্রশাসনের আমলাদের কাজকর্ম নিয়েও বিজেপির অনেক নেতা বিরক্ত। রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্ধার্থনাথ সিংহ বলেন, ‘‘অমিত শাহের সফর সাংগঠনিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সরকার ও সংগঠনের মধ্যে সমন্বয় খুবই জরুরি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement