প্রতীকী চিত্র।
আরবি-সহ একাধিক ভাষা ঝরঝরে বলতে পারেন। দিনের পর দিন প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যে থাবা গেড়ে বসে থাকার কৌশলে সিদ্ধহস্ত। বিপক্ষ সেনার চোখে চোখ রেখে মাসের পর মাস অপেক্ষা করতেও দড়। তিনি, পঁয়ষট্টি বছরের চিনা জেনারেল ঝাও জোংকি।
২০১৭ সালে ডোকলামে ৭৩ দিন ভারতীয় সেনার সঙ্গে সংঘাতে ঝাও-ই ছিলেন প্রধান রূপকার। লাদাখ সংলগ্ন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর চিনের সঙ্গে বর্তমান সঙ্কট পরিস্থিতিতেও জেনারেল ঝাও-ই সর্বময় কর্তা। সূত্রের খবর, এই ঝাও এবং তাঁর অধীনস্থ সাত জন কমান্ডারের গতিবিধির দিকে কড়া নজর রাখছে ভারতীয় সেনা। তাঁদের সম্পর্কে বিস্তারিত রিপোর্টও সাউথ ব্লকে এসে পৌঁছেছে।
চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং-এর এই আট জন ঘনিষ্ঠ সামরিক কর্তাদের সম্পর্কে পাওয়া তথ্যাদিতে দেখা যাচ্ছে, প্রায় প্রত্যেকেই তিব্বত এবং ভারতের সঙ্গে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা সম্পর্কে সম্যক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন। ঝাও জোংকি ভিয়েতনাম-চিন যুদ্ধে স্পেশাল অপারেশনের দায়িত্বে ছিলেন। সাধারণত ৬৫ বছরে পিএলএ থেকে অবসর নেওয়ার কথা। কিন্তু প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা সম্পর্কে তাঁর অভিজ্ঞতা ও কুশলতার জন্যই তাঁকে বড় দায়িত্ব দিয়ে রেখে দিয়েছেন শি।
এই আট জনের আরও এক জন হলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল শু কুইলিং, আকসাই চিন এলাকায় ট্যাঙ্ক এবং ভারী আর্টিলারি বসানোর কাজটি তিনি করেছিলেন। ভারতের সঙ্গে বর্তমান সংঘাতে তাঁর দায়িত্ব সেনা সমন্বয় এবং গোলাবারুদের (ফায়ার পাওয়ার) দিকটি দেখা। এ ছাড়া আছেন মেজর জেনারেল লিউ জেপিং। তিনি লাদাখ সেক্টরের ডেমচক-এ এর আগে কাজ করেছেন। অন্য মেজর জেনারেল লিউ লিন চিনা সামরিক বাহিনীর হয়ে ভারতের সঙ্গে সেনার পশ্চাদপসরণ এবং সীমান্তে সেনা সমাবেশ কমানো নিয়ে আলোচনা করছেন। মলদো এবং চুসুল-এ দু’টি ম্যারাথন বৈঠক করেছেন ভারতের লেফটেন্যান্ট জেনারেল হরিন্দর সিংহের সঙ্গে। তাঁর বাহিনীর সঙ্গেই প্যাংগং লেক-এ ভারতীয় সেনার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
চিনকে নিয়ে এখন ভারতীয় সেনার মাথাব্যথার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। দফায় দফায় কূটনৈতিক এবং সামরিক স্তরে আলোচনার পরেও চিন লাদাখে পিছু হটতে নারাজ। মনে করা হচ্ছে, এই প্রক্রিয়া আসন্ন শীতকাল এবং তার পরেও চলবে। ফলে চিনের রণকৌশল নখদর্পণে রেখে সেই অনুযায়ী পা ফেলার কথা ভাবা হচ্ছে।