আমের শরবতের বোতল হাতে অ্যাম্বুল্যান্স চালক। ছবি: সংগৃহীত।
তারস্বরে সাইরেন বাজিয়ে ছুটে আসছে অ্যাম্বুল্যান্স। তা দেখে অন্য দিকের ট্রাফিক আটকে অ্যাম্বুল্যান্সকে রাস্তা ফাঁকা করে দিল পুলিশ। কিন্তু এ কি! মোড় ঘুরে অ্যাম্বুল্যান্স থামল একটি ফাস্টফুডের দোকানে। দরজা খুলে চালক বেরিয়ে এসে কিনলেন আমের শরবত! ভিতরে উঁকি মেরে দেখা মিলল না কোনও রোগীর। হায়দরাবাদে এই ঘটনার ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে সমাজমাধ্যমে। অ্যাম্বুল্যান্স চালকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার পথে এগোচ্ছে পুলিশ।
হায়দরাবাদের ব্যস্ত এলাকা বশিরবাগ জংশন। সোমবার রাতে সেখানেই ঘটে গেল এই কাণ্ড। পুলিশ সূত্রে খবর, সাইরেন বাজিয়ে একটি অ্যাম্বুল্যান্স আসছে দেখেই বেশিরভাগ এলাকায় কর্মরত ট্রাফিক পুলিশ অন্য দিকের গাড়ি আটকে অ্যাম্বুল্যান্সটিকে ফাঁকা জায়গা করে দেন। কিন্তু তিনি দেখেন, ফাঁকা রাস্তায় প্রায় ১০০ মিটার গিয়েই থমকে যায় অ্যাম্বুল্যান্স। দরজা খুলে নেমে আসেন চালক। ঢুকে যান পাশের খাবারের দোকানে। কিছু ক্ষণ পর আবার বেরিয়ে আসেন দোকান থেকে। হাতে একটি আমের শরবতের বোতল। পুরো সময় ধরে বাজছে অ্যাম্বুল্যান্সের সাইরেন।
এই কাণ্ড দেখে ছুটে আসেন কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ। তাঁর জামায় লাগানো ক্যামেরায় গোটা ঘটনাটি বন্দি হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, থেমে যাওয়া অ্যাম্বুল্যান্স লক্ষ্য করে ছুটে আসেন ট্রাফিক পুলিশ। তখন অ্যাম্বুল্যান্সটি খাবারের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে। কিছু ক্ষণের মধ্যেই দোকান থেকে আমের শরবত কিনে বেরিয়ে আসেন অ্যাম্বুল্যান্স চালক। তখন পুলিশকর্মী জিজ্ঞেস করেন, ‘‘আপনি সাইরেন দিচ্ছিলেন দেখে আমি রাস্তা ক্লিয়ার (পরিষ্কার) করে দিলাম। আর আপনি হাসপাতালে যাওয়ার পরিবর্তে দোকানে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছেন! রোগী কোথায়? চা খাওয়ার জন্য সাইরেন বাজালেন?’’ তার পরে পুলিশকর্মীকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমি উপরওয়ালাকে জানাচ্ছি। এই ভিডিয়োও পাঠাচ্ছি। আমরা কঠিন ব্যবস্থা নেব।’’
পুলিশ সূত্রে খবর, অ্যাম্বুল্যান্স চালককে এক হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট আইন ভাঙার কারণে। তবে এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠে গিয়েছে জরুরি পরিস্থিতির নাম করে এ ভাবে সাইরেনের অপব্যবহার নিয়ে। হায়দরাবাদের ডিসিপি (ট্রাফিক- ১) রাহুল হেগড়ে বলেন, ‘‘জরুরি প্রয়োজন ছিল না। তবুও অ্যাম্বুল্যান্স চালক সাইরেন বাজিয়ে চললেন। তাঁর এটা করা উচিত হয়নি। যদি সত্যিই জরুরি পরিস্থিতি তৈরি হত, তা হলে অ্যাম্বুল্যান্সের সোজা হাসপাতালে যাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু তার বদলে অ্যাম্বুল্যান্স রাস্তার ধারে একটি খাবারের দোকানে দাঁড়িয়ে গেল। শুধু রাস্তা ফাঁকা পেতে এই ধরনের কায়দা অবলম্বন অনুচিত।’’