কেন্দ্রের আপত্তি সত্ত্বেও বিকল্প কোর্ট তৈরির প্রস্তাব খতিয়ে দেখবে সুপ্রিম কোর্ট

নরেন্দ্র মোদী সরকারের প্রবল আপত্তি ছিল। তা সত্ত্বেও সুপ্রিম কোর্টের চাপ কমাতে বিকল্প কোর্ট তৈরির আবেদন খারিজ করে দিলেন না প্রধান বিচারপতি টি এস ঠাকুর। তার বদলে প্রধান বিচারপতির নির্দেশ, শীর্ষ আদালতের সাংবিধানিক বেঞ্চ এই প্রস্তাব খতিয়ে দেখবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৬ ২০:৫৮
Share:

নরেন্দ্র মোদী সরকারের প্রবল আপত্তি ছিল। তা সত্ত্বেও সুপ্রিম কোর্টের চাপ কমাতে বিকল্প কোর্ট তৈরির আবেদন খারিজ করে দিলেন না প্রধান বিচারপতি টি এস ঠাকুর। তার বদলে প্রধান বিচারপতির নির্দেশ, শীর্ষ আদালতের সাংবিধানিক বেঞ্চ এই প্রস্তাব খতিয়ে দেখবে।

Advertisement

মাস তিনেক আগে সুপ্রিম কোর্টে মামলার চাপের কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সামনেই কেঁদে ফেলেছিলেন প্রধান বিচারপতি ঠাকুর। প্রতি বছর ৪৫ হাজারের বেশি মামলার নিষ্পত্তি করা সত্ত্বেও এখনও সুপ্রিম কোর্টে প্রায় ৬০ হাজার মামলা ঝুলে রয়েছে।

সেই চাপের কথা বলেই চেন্নাইয়ের আইনজীবী ভি বসন্তকুমার সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন। আর্জি ছিল, শীর্ষ আদালতের চাপ কমাতে একটি বিকল্প আদালত তৈরি হোক। যার নাম হবে জাতীয় আপিল আদালত বা ন্যাশনাল কোর্ট অফ অ্যাপিল। হাইকোর্ট বা নিম্ন আদালতের রায় পছন্দসই না হলেই সকলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। তা সে চুরি-ডাকাতিতে অভিযুক্তদের জামিনই হোক বা পারিবারিক কলহের মামলা। মামলার পর মামলা জমতে থাকে দেশের শীর্ষ আদালতে। বসন্তকুমারের যুক্তি ছিল, এই সব মামলা পৃথক আদালতে শোনা হোক। সুপ্রিম কোর্ট আরও গুরুতর বিষয় নিয়ে মাথা ঘামাক। যে সব মামলার সঙ্গে সাংবিধানিক প্রশ্ন বা সরাসরি কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। দিল্লির পাশাপাশি কলকাতা, মুম্বই, চেন্নাইতেও এই আদালত তৈরি হোক।

Advertisement

আরও পড়ুন: ফের ধাক্কা খেলেন মোদী, অরুণাচলে কংগ্রেস সরকার ফেরাল সুপ্রিম কোর্ট

মোদী সরকার এর প্রবল বিরোধিতা করে। অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহতগি যুক্তি দেন, কাউকেই শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হতে বাধা দেওয়া যায় না। এই আদালত তৈরি করেও কোনও লাভ হবে না। কারণ ১০ বছর পর দেখা যাবে, সেই বিকল্প কোর্টেও মামলার পাহাড় জমে উঠেছে। দেশ জুড়ে নিম্ন আদালতে যে দু’কোটি মামলা জমে রয়েছে, তার চাপও কমবে না। হাইকোর্টের মাথার উপরে নতুন কোর্ট তৈরি হবে। ফলে হাইকোর্টের মর্যাদা কমে যাবে। তা ছাড়া, এই বিকল্প কোর্ট তৈরি করতে গেলে সংবিধান সংশোধন করতে হবে। তার ফলে সুপ্রিম কোর্টেরই গঠনতন্ত্র বদলে যাবে।

মুকুল রোহতগি আদালতে যুক্তি দেন, এর ফলে আইনজীবীদের পকেট ভরবে। আর কিছু হবে না। প্রধান বিচারপতি অবশ্য শুনানির সময় মন্তব্য করেছিলেন, মামলার চাপে সুপ্রিম কোর্ট সকলের জন্য সুবিচার করতে পারছে কি না, তা নিয়ে বিতর্ক হওয়া প্রয়োজন। শীর্ষ আদালতের তরফে কে কে বেণুগোপালকে এই মামলায় সাহায্য করার জন্য নিযুক্ত করা হয়েছিল। তিনি এই বিকল্প আদালত তৈরির পক্ষেই রায় দিয়েছিলেন। আজ কেন্দ্রের আপত্তি অগ্রাহ্য করেই বিষয়টি সাংবিধানিক বেঞ্চে পাঠিয়ে দিলেন প্রধান বিচারপতি ঠাকুর।

সুপ্রিম কোর্টে মামলার নিষ্পত্তি

২০১৩: ৪০,১৮৯

২০১৪: ৪৫,০৪২

২০১৫: ৪৭,৪২৪

মামলা ঝুলে রয়েছে

৫৯,৪৬৮ (ফেব্রুয়ারি ’১৬ পর্যন্ত)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement