শেষ পর্যন্ত জোট। পরিবর্তনের স্বার্থে পুরনো বন্ধু বিজেপির হাত ধরেই বিধানসভা নির্বাচনে লড়তে নামছে অসম গণ পরিষদ (অগপ)। সাংবাদিক সম্মেলন করে একলা চলার কথা ঘোষণা করার পরেও, নাছোড় বিজেপির চাপে আর অস্তিত্ব রক্ষার জন্য আজ অগপ জোটের দিকেই ঝুঁকল।
গত বিধানসভা নির্বাচনে অগপ ১০টি ও বিজেপি পাঁচটি আসন পেলেও দুই দলের মিলিত ভোটের হিসেবে আরও অন্তত ২০টি আসনে অগপ-বিজেপির মিলিত ভোট কংগ্রেসের চেয়ে বেশি ছিল। কিন্তু অতীতে বিজেপির সঙ্গে জোট করে লাভের চেয়ে দলের লোকসানই বেশি হয়েছে বলে মনে করছিলেন দলের মাথারা। তাই, প্রথম দফায় বিজেপির সঙ্গে একাধিকবার আলোচনার পরেও দুর্গাদাস বড়ো, প্রফুল্ল মহন্তদের চাপে পিছিয়ে আসে অগপ। কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গড়া নিয়েও আলোচনা শুরু হয়। কিন্তু প্রদেশ বিজেপি সভাপতি সর্বানন্দ সোনায়াল আর নির্বাচন আহ্বায়ক হিমন্তবিশ্ব শর্মা হাল ছাড়েননি। কংগ্রেসও পরে অগপর সঙ্গে জোটে আগ্রহ দেখায়নি।
আজ দিল্লিতে অমিত শাহের বাড়িতে শাহ, সর্বানন্দ, হিমন্ত, রাম লাল, রাম মাধবদের সঙ্গে দলের সভাপতি অতুল বরার নেতৃত্বে কুমার দীপক দাস, বীরেন্দ্রপ্রসাদ বৈশ্য, রমেন্দ্রনারায়ণ কলিতা, ফণীভূষণ চৌধুরী, কেশব মহন্ত, কমলা কলিতারা বৈঠকে বসেন। অন্য কোনও দলের সঙ্গে জোট গড়ার বিরুদ্ধে ছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্ল মহন্ত। তবে, তিনিও আজ দিল্লির বৈঠকে যান।
দলীয় সূত্রে খবর অগপ প্রথমে ৪৮টি আসন চাইলেও অনেক দর কষাকষির পরে ঠিক হয়েছে বিজেপি ২০টি কেন্দ্র তাদের ছাড়বে। ৯টি কেন্দ্র বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই হবে। অবশ্য আসন সমঝোতার বিষয়টি এ দিনও চূড়ান্ত হয়নি। বৈঠক শেষে বিকেলে সর্বানন্দ ও অতুলবাবু একত্রে সাংবাদিকদের জানান, অসম চুক্তি রূপায়ণ, অসমের উন্নয়ন ও রাজনৈতিক পরিবর্তনের
স্বার্থে অগপ-বিজেপি আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে এক সঙ্গে লড়বে। অতুলবাবু বলেন, ‘‘আসন ভাগাভাগি নিয়ে ম্যারাথন আলোচনা হয়েছে। আগামী দু’দিনের মধ্যে এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।’’
অতীতে অগপ ও বিজেপি হাত মেলানোর পরে বিভিন্ন কেন্দ্র দু’দলের তৃণমূল স্তরের কর্মীদের মধ্যে মতানৈক্য চরমে উঠেছিল। এক পক্ষের কর্মীরা অন্য পক্ষকে কোনও সাহায্য করেননি। তা মাথায় রেখে এ দিন বরা বলেন, ‘‘দলের তৃণমূল স্তরের কর্মীদের আমাদের উপরে আস্থা রাখার জন্য ধন্যবাদ। একসঙ্গে কোমর বেঁধে না লড়লে অকংগ্রেসি সরকার গড়া সম্ভব হবে না।’’ সর্বানন্দ বলেন, ‘‘অগপর মতো আঞ্চলিক দল আমাদের হাত ধরায় কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই জোরদার হবে।’’
কিন্তু কংগ্রেস থেকে আসা হিমন্তসহ ১০ বিধায়ককে নিয়ে এখনই রাজ্য বিজেপিতে দ্বন্দ্ব চলছে। আসনের দাবিদার অনেক। তার উপরে অগপকে আরও ৩০টি আসন ছেড়ে দেওয়ায় দলের উপরে আরও চাপ বাড়বে পারে।