আরও অভিযোগ, কোণঠাসা আকবর

আকবর প্রসঙ্গে আজ স্বর চড়িয়েছে কংগ্রেস। সাংবাদিক বৈঠকে কংগ্রেস নেতা জয়পাল রেড্ডি বলেছেন, ‘‘এম জে আকবরের বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ উঠেছে, হয় তিনি তার বিশ্বাসযোগ্য জবাব দিন। নয়তো পদত্যাগ করুন।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:৩৩
Share:

ক্রমশ বাড়ছে বিদেশ প্রতিমন্ত্রী এম জে আকবরের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থা সংক্রান্ত অভিযোগের বহর। পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য তাঁর এবং সরকারের উপরে চাপও বাড়ছে সমানুপাতে। গোটা বিষয়টি নিয়ে এখনও পর্যন্ত টুঁ-শব্দও করেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অথবা বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। কিন্তু রাজনৈতিক সূত্রের খবর, ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’-এর প্রবক্তা মোদী সরকারের ভিতরেই উষ্মা তৈরি হয়েছে প্রবীণ এই প্রাক্তন সাংবাদিককে ঘিরে। আকবরকে সরানো না-হলে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হবে—এমনটাই মনে করা হচ্ছে।

Advertisement

আকবর প্রসঙ্গে আজ স্বর চড়িয়েছে কংগ্রেস। সাংবাদিক বৈঠকে কংগ্রেস নেতা জয়পাল রেড্ডি বলেছেন, ‘‘এম জে আকবরের বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ উঠেছে, হয় তিনি তার বিশ্বাসযোগ্য জবাব দিন। নয়তো পদত্যাগ করুন।’’ আকবর এখন নাইজিরিয়া সফরে রয়েছেন। তাঁকে বিভিন্ন ভাবে (ফোন, মেল, হোয়াটসঅ্যাপ) যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনও সাড়া মেলেনি। অথচ এখনও পর্যন্ত অন্তত ছ’জন মহিলা সাংবাদিক বিস্তারিত অভিযোগে জানিয়েছেন, কর্মস্থলে আকবর কী কী ভাবে তাঁদের যৌন হেনস্থা করেছেন বা করার চেষ্টা করে গিয়েছেন। এ-ও জানিয়েছেন, কী ভাবে এই সাংবাদিকের ‘হাত’ এড়িয়ে পালাতে হয়েছে তাঁদের।

১৯৯০ সালে একটি ইংরেজি দৈনিক বাজারে আসে, যার কর্ণধার ছিলেন আকবর। সেই সময়ে তাঁর এক সহ-সাংবাদিক সুপর্ণা শর্মা আজ স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন, অফিসে তাঁর বক্ষবন্ধনীর স্ট্র্যাপ ধরে টেনেছিলেন আকবর। ওই একই কাগজে ১৯৯৪ সালে শিক্ষানবীশ হয়ে যোগ দিয়েছিলেন গাজালা ওয়াহাব। তিনি আজ একটি সংবাদ পোর্টালে সুবিশাল লেখা লিখেছেন এই বিষয়ে। আকবরের দরজা-বন্ধ চেম্বারে কী ভাবে তাঁকে প্রতিনিয়ত যৌন হেনস্থার শিকার হতে হত, তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা দিয়েছেন তিনি। জানিয়েছেন, প্রতিদিন তাঁকে কাঁদতে কাঁদতে অফিস ছাড়তে হত। যত ক্ষণ অফিসে থাকতেন, ভয়ে কাঁটা হয়ে থাকতে হত।

Advertisement

গোটা বিষয়টি নিয়ে বিশেষ করে সুষমা স্বরাজের নীরবতাকে কাঠগড়ায় তুলছে কংগ্রেস। সংসদে মহিলা সংরক্ষণ বিল আনার লড়াইয়েই হোক, অথবা বিশ্বে কোথাও অসুবিধায় পড়া নারীদের সাহায্য— সুষমাকেই দেখা গিয়েছে পুরোভাগে। আজ যখন তাঁর সতীর্থের বিরুদ্ধে একসুরে অভিযোগ আনছেন একের পর এক মহিলা সাংবাদিক, তখনও তিনি চুপ রয়েছেন কেন, সেই প্রশ্ন উঠেছে। সূত্রের খবর, সুষমা একা নন, রাজনাথ সিংহ, অরুণ জেটলি, নিতিন গডকড়ীর মত নেতারাও ভিতরে ভিতরে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী উমা ভারতী আজ বলেছেন, ‘‘গঙ্গাকে আমরা এমন নির্মল আর অবিরল বানাব যে, দেশ-বিদেশের অন্য নদীগুলিও বলবে— মি টু!’’ তাঁর এই মন্তব্যের অন্য ব্যাখ্যা অবশ্য করেননি উমা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement