অবশেষে করিমগঞ্জ থেকে ধরা পড়লেন ত্রিপুরার যুব ও ক্রীড়া দফতরের ফেরার কর্তা পান্না আহমেদ। এক মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত এই অফিসারকে ঘিরে ইতিমধ্যেই উত্তাল হয়ে উঠেছে ত্রিপুরার রাজনীতি। রাজ্য সরকার ওই অফিসারকে সাসপেন্ড করেছে। কিন্তু ঘটনার পর থেকেই ফেরার ছিলেন তিনি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ সকালে করিমগঞ্জের শিববাড়ি রোডের একটি বাড়ি থেকে পান্না আহমেদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আগামীকাল তাঁকে আগরতলায় নিয়ে যাওয়া হবে। পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার পুলিশ সুপার অভিজিৎ সপ্তর্ষি জানান, ত্রিপুরা সিভিল সার্ভিসের এই অফিসার গত ২৭ জুন এক মহিলাকে ধর্ষণ করে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। তাঁর বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল। সপ্তর্ষি বলেন, ‘‘আমরা তাঁকে ধরার চেষ্টা করছিলাম। চার-পাঁচ দিন আগে আমাদের কাছে খবর আসে, পান্না আহমেদ অসমে আত্মগোপন করে আছেন। পশ্চিম জেলা এবং উত্তর ত্রিপুরা জেলা পুলিশ গত ৮ জুলাই থেকে করিমগঞ্জের নিলাম বাজার এলাকায় খোজখবর শুরু করে। আমরা করিমগঞ্জ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করি। এরপর আজ সকালে করিমগঞ্জ থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।’’ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ত্রিপুরার চুরাইবাড়ি থানার সেকেন্ড অফিসার মনোজ চন্দ পুলিশ বাহিনী নিয়ে করিমগঞ্জে ঘাঁটি গাড়েন। প্রায় প্রতি মূহুর্তে মোবাইল টাওয়ার লোকেশনের ভিত্তিতে পান্না আহমেদের উপর নজর রাখা হয়েছিল। আহমেদ প্রথমে করিমগঞ্জের একটি হোটেলে আশ্রয় নেন। করিমগঞ্জ পুলিশের সহায়তায় ত্রিপুরা পুলিশ সেই হোটেলে গিয়ে সিসি ক্যামেরার ছবি সংগ্রহ করে। তারপর মোবাইল টাওয়ার লোকেশন অনুসারে শহরের হাদারগ্রাম এলাকায় বিশেষ নজরদারি শুরু করে। কিন্তু এই অভিযুক্ত অফিসার ঘন ঘন এলাকা পরিবর্তন করতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত গত কাল রাতে করিমগঞ্জ পুলিশের কাছে খবর আসে পান্না আহমেদ নাম বদলে শিববাড়ি রোডে ঘরভাড়া নিয়েছেন। সেই অনুযায়ী আজ করিমগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নবীন সিংহ একাই শিববাড়ি রোডের নির্দিষ্ট বাড়িটিতে হানা দেন এবং তাঁকে গ্রেফতার করেন।
ত্রিপুরা পুলিশের অফিসার মনোজ চন্দ জানান, ২৬ জুন জনৈক আইনজীবীর স্ত্রী বাড়ি ভাড়া নিতে পান্না আহমেদের বাড়িতে গিয়েছিলেন। বাড়িতে কেউ ছিলেন না। অভিযোগ, আগরতলার আখাউরা রোডের সেই বাড়িতেই আইনজীবীর স্ত্রীকে ধর্ষণ করেন যুব ও ক্রীড়া বিভাগের ওই কর্তা। যদিও ধর্ষণের অভিযোগ খারিজ করেছেন খোদ পান্না আহমেদ। তিনি বলেন, ‘‘অভিযোগ দায়ের করা মহিলা আমার পরিচিত। ফলে ধর্ষণের প্রশ্নই ওঠে না।’’ তাঁর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘সোনামুড়া এলাকায় এসডিএমের দায়িত্বে থাকা অবস্থায় আমি বিভিন্ন সময় অসামাজিক কাজের বিরুদ্ধে সক্রিয় ছিলাম। ফলে সম্পূর্ণ চক্রান্ত করেই আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।’’