আগরতলায় বাংলাদেশের উপদূতাবাসের সামনের দৃশ্য। ছবি: পিটিআই।
গত কালের হামলার পরে নিরাপত্তার অভাবের কারণ দেখিয়ে আগরতলায় বাংলাদেশের উপ-দূতাবাসের যাবতীয় পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হল। এই ঘটনার জেরে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার প্রণয় বর্মাকে আজ তলব করে বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রক। এই হামলাকে ‘পূর্বপরিকল্পিত’ বলেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ভারতের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, ‘‘আপনাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির কৌশল হিসেবে বাংলাদেশের প্রতি ঘৃণার ব্যবহার উভয় দেশের সম্পর্কে দীর্ঘস্থায়ী টানাপড়েন সৃষ্টি করবে।’’
কাল আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনে হিন্দু সংঘর্ষ সমিতির বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি দেওয়ার ঘটনার সময়েই কয়েক জন ভিতরে ঢুকে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। মিশন প্রধান ও প্রথম সচিব আল আমিন আজ এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, পরবর্তী নির্দেশ না-দেওয়া পর্যন্ত ওই উপ-দূতাবাসে সব ধরনের ভিসা এবং কনসুলার পরিষেবা বন্ধ থাকবে। গত কালের ঘটনায় কর্তব্যে গাফিলতির দায়ে তিন জন সাব-ইনস্পেক্টরকে সাসপেন্ড এবং এক জন ডিএসপিকে ক্লোজ় করা হয়েছে। গত রাতে ত্রিপুরার বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে হামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপরে আক্রমণ এবং ধর্মগুরু চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির প্রতিবাদে ত্রিপুরার হোটেল ব্যবসায়ীদের সংগঠন ঘোষণা করেছে, ব্যবসার ক্ষতি করেও বর্তমানে তারা হোটেল ও রেস্তরাঁগুলিতে বাংলাদেশি নাগরিকদের পরিষেবা দেবে না। আগে থেকে যাঁরা হোটেলে ছিলেন, শুধু তাঁদেরই থাকতে দেওয়া হচ্ছে।
আজ আগরতলার ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্টে গিয়ে বিক্ষোভ দেখানোর কথা ছিল হিন্দু সনাতনী যুবা সংগঠনের। কিন্তু পুলিশ সেই মিছিল আটকে দেয়। বিক্ষোভ হয়েছে অসমেও। এ দিন শিলচরে বাংলাদেশের ভিসার একটি ফ্রাঞ্চাইজ়ি কেন্দ্রে বিক্ষোভ হয়। গত কাল বিকেলে শিলচরের শিল্পমেলা (এক্সপো)-তে বিক্ষোভের মুখে পড়া বাংলাদেশের এক ব্যবসায়ী স্টল বন্ধ করে কলকাতায় চলে আসেন। আজ দক্ষিণ অসমের চার জেলা সদরে ধর্না দেয় সনাতনী ঐক্য মঞ্চ। হাফলংয়ে বিক্ষোভ দেখায় ৩০টি সংগঠন। লোক জাগরণ মঞ্চের তরফে ধুবুড়ি, যোরহাট, নলবাড়ি, মাজুলি, বরপেটা, নলবাড়ি, গোলাঘাট, হোজাই-সহ বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদ মিছিল হয়। স্মারকপত্র পাঠানো হয় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশে। গুয়াহাটিতে জেলাশাসকের দফতরের সামনে কংগ্রেসের বিক্ষোভে দলের নেত্রী মীরা বরঠাকুর দাবি করেন, ‘নরেন্দ্র মোদীর ভ্রান্ত বিদেশ নীতি’র ফলেই বাংলাদেশে এখন হিন্দুরা এমন পরিস্থিতিতে পড়েছেন। যোরহাট জেলা স্টেডিয়ামে বিক্ষোভ হয় বিজেপির উদ্যোগে। দলের রাজ্য সহ-সভাপতি রানা গোস্বামী বলেন, ‘‘নির্যাতন সীমা ছাড়িয়েছে। ভারতকে বিদেশনীতির মাধ্যমে এর সমাধান করতে হবে এবং প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।’’