লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। ফাইল চিত্র।
সংসদে বিরোধীদের মাইক্রোফোন বন্ধ করে তাঁদের বলতে না দেওয়ার যে অভিযোগ রাহুল গান্ধী ব্রিটেনে গিয়ে তুলেছিলেন, নাম না-করে তার একাধিক বার তীব্র সমালোচনা করেছেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়। আগামিকাল সংসদের বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হওয়ার ঠিক আগে বাহরিন সফরে গিয়ে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাও এ বার বললেন, ভারতের সংসদে সব সাংসদেরই নিজেদের মতামত ব্যক্ত করার পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে। যা শুনে অনেকেই মনে করছেন, ধনখড়ের মতো অত তীব্র ভাবে না হলেও মাইক্রোফোন বন্ধ করা নিয়ে রাহুলের অভিযোগ খণ্ডন করলেন স্পিকারও।
গত সপ্তাহে লন্ডন সফরে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের একটি আলোচনাচক্রে রাহুল মন্তব্য করেছিলেন, ভারতের বিরোধী সাংসদদের মাইক্রোফোন বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিজেপি নেতৃত্ব তা নিয়ে ইতিমধ্যেই রাহুলের তীব্র সমালোচনা করেছেন। শাসক শিবিরের মতে, বিদেশের মাটিতে তোলা রাহুলের অভিযোগের জবাব দিতে স্পিকার বিদেশের মাটিকেই বেছে নিয়েছেন। আজ বাহরিনের রাজধানী মানামাতে ১৪৬তম ‘ইন্টার-পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন’-এর অধিবেশনে ওম বিড়লা বলেন, ‘‘ভারতের মতো প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রে দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা বহুদলীয় ব্যবস্থার মাধ্যমে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের দ্বারা সংসদে প্রতিফলিত হয়। সংসদে প্রত্যেক সাংসদের বাধাহীন ভাবে নিজের মতামত ব্যক্ত করার স্বাধীনতা রয়েছে।’’
ধনখড় যদিও আরও চাঁছাছোলা ভাবে নাম না-করে রাহুলের বিরুদ্ধে ‘অসত্যভাষণের’ অভিযোগ তুলেছিলেন। বিজেপি শিবিরের বক্তব্য, দেশের মাটিতে বার বার রাজনৈতিক ভাবে পরাস্ত হয়ে বিদেশে গিয়ে দেশের নামে কুৎসা করছেন রাহুল। রাষ্ট্রপতির বক্তৃতার ধন্যবাদজ্ঞাপন বিতর্কে লোকসভায় তিনি প্রায় ৫২ মিনিট ধরে বক্তৃতা দিয়েছিলেন। তখন তো কংগ্রেস নেতার মাইক্রোফোন এক বারও বন্ধ হয়নি!
বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্ব যাতে সুষ্ঠু ভাবে চলে, সে জন্য আজ সকালে সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছিলেন ধনখড়। বৈঠকের পরে কংগ্রেস সভাপতি তথা রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে বলেন, ‘‘আমরা বিরোধীরা চাই, দেশের বর্তমান সমস্যাগুলি নিয়ে যেন এ বারের অধিবেশনে অবশ্যই আলোচনা হয়।’’ সূত্রের মতে, এ বারের অধিবেশনে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির অপব্যবহারের অভিযোগ ছাড়াও ভারত-চিন সীমান্ত সমস্যা ও আদানি-হিন্ডেনবার্গ বিতর্ক নিয়ে সংসদে আলোচনার দাবিতে সরব হবেন বিরোধীরা। আদানি কাণ্ডে যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি)-র তদন্ত চেয়ে এ বারও দুই কক্ষে সরব হতে পারে কংগ্রেস। রাজ্যসভায় বিরোধীদের রণকৌশল ঠিক করতে কাল সকালে সমমনস্ক দলগুলির বৈঠক ডেকেছেন খড়্গে। সেই বৈঠকে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিনিধি পাঠানোর পরিকল্পনা নেই তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সূত্রের মতে, কংগ্রেসের হাতে বিরোধী জোটের রাশ থাকুক, তা কখনওই চায় না তৃণমূল। সাম্প্রতিক অতীতেও কংগ্রেসের ডাকা এই ধরনের অধিকাংশ বিরোধী-বৈঠকে তারা অনুপস্থিত থেকেছে। আজ ধনখড়ের বৈঠকেও তৃণমূল যায়নি।