আকাঙ্ক্ষা হত্যাকাণ্ডে চাঞ্চল্যকর মোড়। এক খুনের তদন্ত করতে গিয়ে বেরিয়ে পড়ল আরও এক জোড়া খুনের স্বীকারোক্তি। ভোপাল পুলিশ জানাচ্ছে, আকাঙ্ক্ষার ঘাতক প্রেমিক উদয়ন দাস জেরার মুখে কবুল করেছে, নিজের বাবা-মাকেও সে গলা টিপে খুন করে তাঁদের দেহ পুঁতে দিয়েছিল মাটিতে।
বাঁকুড়ার মেয়ে আকাঙ্ক্ষা শর্মার সঙ্গে ভোপালের উদয়নের পরিচয় এবং প্রেম গড়ে ওঠে সোশ্যাল মিডিয়ায়। মাস ছয়েক আগে আমেরিকায় চাকরি করতে যাচ্ছেন বলে তিনি চলে যান ভোপালে। থাকতে শুরু করেন উদয়নের সঙ্গে। মাস খানেক পর থেকে আর কোনও খোঁজ ছিল না তাঁর। শেষ পর্যন্ত যখন তাঁর খোঁজ মিলল, তার মধ্যে ঘটে গেছে ভয়ঙ্কর সব ঘটনা। আকাঙ্ক্ষাকে খুন করে, পাঁচ ফুট বাই তিন ফুটের ট্রাঙ্কে লাশ ভরে, তাতে সিমেন্ট ভর্তি করে, সিমেন্টের বেদি করে রেখে দিয়েছিল উদয়ন। ঘরের মধ্যেই। ঠান্ডা মাথায়। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। বৃহস্পতিবার রাতে তার কুকীর্তি ফাঁস হয় পুলিশি অভিযানে।
আরও পড়ুন:প্রেমিকের হাতে খুন, ট্রাঙ্কে ‘মমি’ হয়ে রইল আকাঙ্ক্ষা
উদয়নের দাবি ছিল, তার বাবা মারা গেছেন, আর মা থাকেন আমেরিকায়। কিন্তু মায়ের সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়েই তার কথায় প্রচুর অসঙ্গতি ধরা পড়তে থাকে। শেষ পর্যন্ত চাপের মুখে নিজের পুরনো দুষ্কর্মের কথাও বলে ফেলে উদয়ন। পুলিশ জানাচ্ছে, উদয়ন কবুল করে ২০১০ বা ২০১১ সাল নাগাদ নিজের বাবা-মাকে গলা টিপে খুন করেছিল সে। এখানেই শেষ নয়। ঠিক আকাঙ্ক্ষার মতোই উদয়ন তার বাবা-মাকেও খুন করে মাটির তলায় পুঁতে দিয়েছিল নিজের হাতে। রায়পুরে তাদের পুরনো বাড়ির বাগানেই পোঁতা রয়েছে সেই দেহ। এমনই জানিয়েছে সে। পুলিশ অবশ্য না দেখে তার কোনও দাবিতেই চূড়ান্ত সিলমোহর দিতে নারাজ। কারণ একই বিষয়ে নানান সময়ে নানান কথা সে বলছে বলে জানাচ্ছেন তদন্তকারীরা।
ধৃত উদয়ন দাস। ছবি: সংগৃহীত।
উদয়নের এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে তাকে রায়পুর নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। পশ্চিমবঙ্গের পুলিশের একটি দল এবং ভোপাল পুলিশ একযোগে উদয়নকে নিয়ে আগামীকাল রায়পুর রওনা দেবে। ইতিমধ্যেই উদয়নকে ছ’দিনের জন্য রিমান্ডে নিয়েছে এ রাজ্যের পুলিশ।