প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।—ছবি পিটিআই।
আর তিন সপ্তাহের মধ্যে অযোধ্যা মামলার রায় দেবে সুপ্রিম কোর্ট। তার আগে এই প্রথম এ বিষয়ে মুখ খুলে সকলকে ‘সংযমী’ থাকার বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত অযোধ্যায় যাননি মোদী। সঙ্ঘের পক্ষ থেকে বহু বছরের দাবি মেনে সংসদে আইন কিংবা অধ্যাদেশ এনে রামমন্দির নির্মাণের পথ সুগম করার পথেও হাঁটেনি তাঁর সরকার। বরং মামলা ‘আদালতের বিচারাধীন’ বলে কোনও পদক্ষেপ করেননি। তার মধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে মামলার শুনানি শেষ হয়েছে। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের অবসরের আগে নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়েই রায় বেরোনোর সম্ভাবনা। তার আগে আজ রেডিয়োর ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে প্রথম বার এ নিয়ে মুখ খুললেন প্রধানমন্ত্রী।
যদিও সরাসরি তিনি আগামী মাসে শীর্ষ আদালতের রায় প্রসঙ্গে কিছু বলেননি। কিন্তু পরোক্ষ বার্তা দিয়ে হঠাৎ তুললেন ন’বছর আগে ইলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ের প্রসঙ্গ। প্রধানমন্ত্রী বললেন, ‘‘২০১০ সালে ইলাহাবাদ হাইকোর্ট রামজন্মভূমি নিয়ে রায় দিয়েছিল। আমার মনে আছে, সেই সময় কেমন পরিবেশ ছিল। কত লোক আসরে নেমে, নিজ নিজ স্বার্থে ফায়দা তোলার চেষ্টা করেছিলেন। দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্যে পরিবেশ উত্তপ্ত করার চেষ্টা হয়েছিল।’’
এর পরেই তিনি যোগ করেন, ‘‘৫,৭,১০ দিন এ সব চলছিল। কিন্তু যেই রায় এল, তখনই বদল টের পাওয়া গেল। সরকার, রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন, সব সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি, সাধু-সন্তরা সংযমী বক্তব্য রেখেছেন। পরিবেশের উত্তাপ কমানোর চেষ্টা করেছেন। আদালতের মর্যাদাকে সম্মান দেওয়া হয়েছে।’’ প্রধানমন্ত্রীর আবেদন, ‘‘এটা সব সময় মনে রাখতে হবে, ঐক্যের স্বর দেশকে অনেক শক্তি দেয়। এটি কর্তব্যবোধের সময়।’’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও ক’দিন আগে বলেছিলেন, তাঁর আশা, রায় প্রকাশের পরে সব পক্ষই তা মেনে নেবে।
২০১০-এ ইলাহাবাদ হাইকোর্ট অযোধ্যায় বিতর্কিত জমি তিনটি অংশে ভাগ করে দিতে বলে। তাতে এক ভাগ পেত সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড, এক ভাগ নির্মোহী আখড়া এবং বাকি এক ভাগ রামলালা বিরাজমান। এই রায়ের বিরুদ্ধেই সুপ্রিম কোর্টে ডজনখানেকের বেশি মামলা হয়েছিল। চল্লিশ দিন ধরে যে মামলার শুনানি লাগাতার হয়ে শেষ হয়েছে সপ্তাহ দেড়েক আগে। গেরুয়া শিবিরের নেতারা প্রকাশ্যেই বলতে শুরু করেছেন, ‘‘এ বারে মন্দির নির্মাণের জন্য অপেক্ষার প্রহর শেষ।’’
সুপ্রিম কোর্টের রায় ও ৬ ডিসেম্বরের কথা মাথায় রেখে অযোধ্যায় এখন থেকে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন। তার মধ্যে গতকালই সরযূ নদীর তীরে দীপ জ্বালিয়ে গত বারের রেকর্ড ভেঙেছে অযোধ্যা। সেই অনুষ্ঠানে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।