ভারতের মাটিতে ফের অনুপ্রবেশের চেষ্টা করল চিন।
গত ২২ অক্টোবর চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি বা পিএলএ জল ও স্থলপথে লাদাখের লে দিয়ে ভারতে ঢোকার চেষ্টা করে। আজ একটি রিপোর্টে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে, লাদাখের প্যাঙ্গং লেকের মধ্যবর্তী প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ভারতে ঢুকে পড়ে চিনা সেনার নৌকা। একই সঙ্গে লে থেকে ১৬৮ কিলোমিটার দূরের এই লেক সংলগ্ন রাস্তা দিয়ে ভারতের প্রায় ৫ কিলোমিটার ভিতরে চলে আসে চিনা সেনা। দু’জায়গাতেই সীমান্ত বরাবর চিনা সেনাকে আটকানোর চেষ্টা করে ভারত-তিব্বত সীমান্ত পুলিশ (আইটিবিপি)। চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা অতিক্রম করার চেষ্টা করলে বাধা দেয় আইটিবিপি। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ভারত ও চিন সেনা মুখোমুখি হলে চিনা সেনা পতাকা উড়িয়ে ওই এলাকা তাদের দেশেরই অংশ বলে দাবি করে। পাল্টা পতাকা ওড়ায় ভারতও। তবে উভয়পথেই ভারতীয় সেনার বাধায় পিছু হটে চিন।
সূত্রের খবর, ওই দিন চিনের সেনা ফিংগার ফোর পর্যন্ত ঢুকে পড়ে। প্রসঙ্গত, ওই এলাকা চিনের অংশ বলে দাবি করে এর আগেও অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেছে সেনা। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার অবস্থান নিয়ে দু’দেশের মতবিরোধও পুরনো। চিনের দাবি, প্যাঙ্গং লেক এবং সংলগ্ন এলাকার অনেকটাই চিনের আকসাই প্রদেশের অংশযদিও ওই এলাকা ভরতেরই অন্তর্গত বলে দাবি করে এসেছে এ দেশের সেনা।
ভারত আলোচনার মাধ্যমে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার অবস্থানের সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করলেও চিন ফিংগার ফোর পর্যন্ত একটি রাস্তা তৈরি করে তা তাদের দেশের অংশ বলে দাবি করে আসছে। ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে উধমপুর প্রদেশের জনসংযোগ আধিকারিক কর্নেল এস ডি গোস্বামী বলেন, “কিছু এলাকায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার অবস্থান নিয়ে ভারত এবং চিনের মধ্যে মতপার্থক্য আছে। আমরা নিয়মিত সীমান্তে ফ্ল্যাগ মিটিং করে সমাধানের চেষ্টা করছি।”
রাজনীতির কারবারিদের মতে, একই সঙ্গে জল ও স্থলপথে অনুপ্রবেশের চেষ্টার উদ্দেশ্য একটাই ভারতের উপর মানসিক চাপ তৈরি। আগেও প্যাঙ্গং লেকের উত্তর এবং দক্ষিণ বরাবর অনুপ্রবেশ করেছে চিন। গত বছর মে মাসেও ওই এলাকায় ঢুকে পড়ে চিন। সেই সময় দেপাং সমতলে টানা তিন সপ্তাহ ধরে চিনা বাহিনীকে প্রতিরোধ করেছিল ভারত। পাকিস্তানের লাগাতার সংঘর্ষবিরতি ভাঙায় সুর চড়ালেও চিনের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কের খাতিরেই অনুপ্রবেশ নিয়ে সে ভাবে কড়া হয়নি মোদী সরকার। যদিও চিনের অনুপ্রবেশ নিয়ে প্রতিবারই প্রতিবাদে সরব হয়েছে ভারত। সম্প্রতি জাপান সফরে গিয়ে চিনের নাম না করেই অনুপ্রবেশ এবং দখলদারির প্রসঙ্গে তোপ দেগেছিলেন খোদ নরেন্দ্র মোদী। জানিয়েছিলেন, ওদের কাজই জল ও স্থলপথে অনুপ্রবেশ করা!