এস শশীকান্ত সেন্থিল। ছবি: সংগৃহীত।
কাশ্মীরের শাহ ফয়জল বা কেরলের কন্নন গোপীনাথের পর এ বার কর্নাটকের এস শশীকান্ত সেন্থিল। দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে অসন্তুষ্ট হয়ে নিজের পদ থেকে ইস্তফা দিলেন আরও এক আইএএস অফিসার। শশীকান্তের মতে, দেশে গণতন্ত্রের অস্তিত্ব বিপন্ন। এখানে আর আগের মতো অবস্থা নেই। তাই সরকারি পদে থাকতে চান না তিনি। নিজের ইস্তফাপত্রে এমনটাই দাবি শশীকান্তের।
শুক্রবার দক্ষিণ কন্নড় জেলার ডেপুটি কমিশনারের পদ থেকে সরে দাঁড়ান শশীকান্ত। নিজের ইস্তফাপত্রে তিনি লিখেছেন, ‘অভূতপূর্ব ভাবে গণতন্ত্রের মৌলিক ভিত্তিগুলির সঙ্গে আপস করা হচ্ছে’। নিজের কাজ থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য জনতার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়ে তাঁর দাবি, ‘‘দেশে আর আগের মতো অবস্থা নেই।’’ এই সিদ্ধান্তটি যে পুরোপুরি তাঁর ব্যক্তিগত, সে কথাও উল্লেখ করেছেন শশীকান্ত। তিনি লিখেছেন, ‘দেশের বিপন্ন গণতান্ত্রিক পরিস্থিতিতে তাঁর পক্ষে সরকারি আমলা হিসাবে কাজ চালিয়ে যাওয়াটা অনৈতিক হবে।’ যদিও এটি সম্পূর্ণ তাঁর নিজস্ব মত বলেও জানিয়েছেন শশীকান্ত। পাশাপাশি, তিনি আরও জানিয়েছেন, তাঁর ইস্তফার পিছনে কোনও একটি নির্দিষ্ট বিষয় বা ঘটনা জড়িত নয়।
২০০৯ সালের কর্নাটকের আইএএস ব্যাচের আমলা শশীকান্ত বছর দুয়েক আগে দক্ষিণ কন্নড় জেলার ডেপুটি কমিশনার পদে যোগ দেন। এ দিন নিজের ইস্তফাপত্রে তিনি লিখেছেন, ‘আমার আরও মনে হয়, আগামী দিনে খুবই কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে দেশের মৌলিক কাঠামো। এবং আইএসএসের বাইরে থেকে সকলের মঙ্গলের জন্য কাজ করে যাওয়াটাই ভাল হবে।’
আরও পড়ুন: কেজরীবালকে আক্রমণ করে আপ ছাড়লেন বিধায়ক অলকা লাম্বা
শশীকান্তের ইস্তফার পর উঠে আসছে কাশ্মীরের শাহ ফয়জল এবং কেরলের কন্নন গোপীনাথনের ইস্তফার প্রসঙ্গও। শশীকান্তের মতোই তাঁরাও সিভিল সার্ভিসে ছিলেন। তবে কেন্দ্রের ‘জনবিরোধী নীতি’র অভিযোগ করে পদত্যাগ করেছিলেন ২০০৯-এ আইএএস পরীক্ষায় শীর্ষ স্থানাধিকারী শাহ ফয়সল। অন্য দিকে, কাশ্মীরের লক্ষ লক্ষ মানুষদের মৌলিক অধিকার খর্ব করা হচ্ছে বলে দাবি করে আমলা পদ থেকে সরে দাঁড়ান কেরলের আইএএস আধাকারিক গোপীনাথন।
আরও পড়ুন: কাশ্মীর নিয়ে মন্তব্যের জের, শেহলা রশিদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মামলা রুজু দিল্লি পুলিশের
নরেন্দ্র মোদী সরকার কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপের পর গত মাসের শেষের দিকে নিজের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন গোপীনাথন। দাদরা ও নগর হাভেলির ওই আইএএস আধিকারিকের মতে, সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করে নরেন্দ্র মোদী সরকার জম্মু ও কাশ্মীরের লক্ষ লক্ষ মানুষের মৌলিক অধিকারে আঘাত হেনেছে। উপত্যকায় নিরাপত্তার কড়াকড়ি নিয়ে কেন্দ্রের দাবিকে মানতে নারাজ তিনি। ২১ অগস্ট নিজের পদ থেকে ইস্তফার দেন গোপীনাথন। এর পর একটি সর্বভারতীয় চ্যানেলে তিনি বলেছিলেন, ‘‘জীবন ও স্বাধীনতা একই সঙ্গে জড়িত। এটাই সংসদীয় গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। সেখানে যদি বলা হয়, জীবন বাঁচাতে আপনাকে জেলে পুরে রাখা হয়েছে, তা কি গ্রহণীয়?’’
গোপীনাথের ইস্তফার কয়েক সপ্তাহের পরই তাঁর পথে পা বাড়ালেন দেশের আরও এক আইএএস।