কাশ্মীরে প্রহরারত আধাসেনা জওয়ান।
লোকসভা ও বিধানসভার আসন পুনর্বিন্যাসের কাজ শেষ হলেই জম্মু-কাশ্মীরে নির্বাচন হবে বলে স্বাধীনতা দিবসের বক্তৃতায় জানিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
তিনি বলেন, ‘‘ঠিক এক বছর আগে জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদের শৃঙ্খল থেকে মুক্তি পেয়েছিল। এই এক বছর জম্মু-কাশ্মীরের উন্নয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। আমাদের উদ্বাস্তু ভাইবোন ছাড়াও ওই এলাকার মহিলা ও দলিতেরা নিজেদের মৌলিক অধিকার পেয়েছেন।’’
এই প্রসঙ্গে জম্মু-কাশ্মীরে চালু হওয়া ‘গ্রামে যাও’ (ব্যাক টু ভিলেজেস) কর্মসূচির কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। ওই কর্মসূচি অনুযায়ী গ্রামে দীর্ঘ সময় কাটিয়ে গরিব মানুষের সমস্যা সমাধানের কাজ করেছেন আমলারা। মোদীর মতে, ‘‘নির্বাচিত স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাই গণতন্ত্রের মূল শক্তি। জম্মু-কাশ্মীরে আসল উন্নয়নের কাজ তাঁরাই করছেন।’’
আরও পড়ুন: চিনে দাঁড়িয়ে রাষ্ট্রদূত সরব আগ্রাসন নিয়ে
প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘‘জম্মু-কাশ্মীরে সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতির নেতৃত্বে আসন পুনর্বিন্যাসের কাজ চলছে। সেই কাজ শেষ হলেই নির্বাচন হবে। তাতে জম্মু-কাশ্মীর নিজের সরকার পাবে। তারা নতুন উৎসাহ নিয়ে উন্নয়নের কাজ করবে।’’ গত মার্চে প্রাক্তন বিচারপতি রঞ্জনাপ্রকাশ দেশাইয়ের নেতৃত্বে আসন পুনর্বিন্যাসের কাজ শুরু করেছে পুনর্বিন্যাস কমিশন। ২০১৯ সালের জম্মু-কাশ্মীর পুনর্গঠন আইনের বিধি মেনে এই কাজ হবে। পুনর্বিন্যাসের ভিত্তি হিসেবে ২০১১ সালের জনগণনা থেকে পাওয়া তথ্যকে ব্যবহার করা হবে।
আসন পুনর্বিন্যাসের পরে জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভার আসন সংখ্যা ১০৭ থেকে বেড়ে দাঁড়াবে ১১৪টিতে। তার মধ্যে ২৪টি অবশ্য রয়েছে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে। পুনর্গঠনের আগে বিধানসভায় কাশ্মীরের ছিল ৪৬টি আসন, জম্মুর ছিল ৩৭টি আসন ও লাদাখের ছিল ৪টি। পুনর্বিন্যাসের ফলে জম্মু পাবে আরও ৫টি আসন, কাশ্মীর পাবে ২টি।
মোদীর মতে, লাদাখকে আলাদা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মর্যাদা দিয়ে সেখানকার বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ করা হয়েছে। এখন সেখানেও উন্নয়নের কাজ চলছে। তৈরি হচ্ছে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণা কেন্দ্র। হোটেল ম্যানেজমেন্ট পড়ানো হচ্ছে। ৭৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতাসম্পন্ন সোলার পার্কও তৈরি করা হবে।
আজ শ্রীনগরে বিভিন্ন এলাকায় এলইডি স্ক্রিন লাগিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা সরাসরি শোনানোর ব্যবস্থা করেছিল প্রশাসন। এই প্রথম স্বাধীনতা দিবসে কাশ্মীরে প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা সরাসরি শোনানো হল। নির্বাচন নিয়ে মোদীর বক্তব্য প্রসঙ্গে এখনও মুখ খোলেনি উপত্যকার দলগুলি। তবে জম্মু-কাশ্মীরে বিজেপির সম্পাদক অশোক কল বলেন, ‘‘সন্ত্রাস না থামলে জম্মু-কাশ্মীরকে রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়ার প্রশ্ন নেই। সেটা প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন।’’ তাঁর কটাক্ষ, ‘‘উপত্যকার দলগুলি স্থানীয় স্তরের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনে করেছে। বিধানসভা ভোট হলেই এরা ব্যাঙের মতো গর্ত থেকে বেরিয়ে আসবে।’’