প্রতীকী ছবি।
গুরুগ্রামে তরুণীকে গণধর্ষণ ও তাঁর শিশুকন্যাকে খুনের ঘটনায় পুলিশের জালে ধরা পড়ল দুই অভিযুক্ত।
গুরুগ্রামের পুলিশ কমিশনার সন্দীপ খিরওয়ার জানান, ধৃতদের নাম যোগেন্দ্র ও অমিত। বুধবার সকালে মানেসরের ভাড়া বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় যোগেন্দ্রকে। তাকে জেরা করে অন্য দুই অভিযুক্ত, অমিত ও জয়কেশ সম্পর্কে জানতে পারেন তদন্তকারীরা। সকলেই উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরের বাসিন্দা। সম্প্রতি তারা গুরুগ্রামে এসেছিল। এ দিন বিকেলে বুলন্দশহর থেকে পাকড়াও করা হয়েছে অমিতকে। জয়কেশ পলাতক। তবে তাকে খুব শীঘ্রই ধরা যাবে বলে আশাবাদী পুলিশ।
এ দিকে, পুলিশের কাছে নির্যাতিতা তরুণী যা জানিয়েছেন, তাতে উঠে এসেছে এক মর্মান্তিক তথ্য। তাঁর কথায়, ‘‘সে দিন বাপের বাড়ি যাওয়ার সময় প্রথমে ট্রাকে উঠেছিলাম। ট্রাকচালক শ্লীলতাহানি করলে আমি নেমে যাই। সেখানেই গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলাম। কাছেই তিন জন মদ্যপান করছিল। তারা অটো নিয়ে এগিয়ে এসে আমাকে জিজ্ঞাসা করে, এত রাতে একা কোথায় যাওয়া হচ্ছে। তার পরেই গায়ে হাত দিতে থাকলে আমি বাধা দিই। কোলে ন’মাসের মেয়ে কেঁদে উঠলে খেপে যায় ওরা। তার পরেই মেয়েকে ছুড়ে ফেলে দেয়। শুরু হয় আমার উপর অত্যাচার। চার ঘণ্টা অত্যাচারের পরে চলে যায় ওরা।’’
কিন্তু সেই রাতের দুঃস্বপ্নটা পিছু ছাড়েনি পরের দিন সকালেও! দিনের আলো ফুটতেই ওই তরুণী অত্যাচারের যন্ত্রণা ভুলে কোলে তুলে নিয়েছিলেন রাস্তার মাঝে পড়ে থাকা সন্তানকে। ছুটেছিলেন গুরুগ্রামেরই এক চিকিৎসকের কাছে। পরীক্ষা করে তিনি জানিয়েছিলেন, ছোট্ট দেহে আর প্রাণ নেই। কিন্তু মায়ের মন তা মানতে চায়নি। ওই অবস্থাতেই সকালে মেট্রোয় চেপে ছুটে গিয়েছিলেন দিল্লি। সেখানেও মিলেছিল একই জবাব। তার পর মৃত সন্তানের দেহ আঁকড়েই গুরুগ্রাম ফেরার মেট্রো ধরেছিলেন ওই তরুণী। এমজি রোড মেট্রো স্টেশন থেকে নির্যাতিতা ওই তরুণীকে উদ্ধার করে গুরুগ্রাম থানার পুলিশ। সেখানে ছিলেন তরুণীর স্বামীও।
২৯ মে গুরুগ্রামের এই ঘটনা সামনে আসার পরেই এর বীভসৎতায় চমকে গিয়েছে দেশ। এর পরেই তিন অভিযুক্তের খোঁজ চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায় পুলিশের কাছে। তদন্তে বিশেষ তদন্তকারী দল গড়া হয়। তদন্তে নেমে ৫০ জনেরও বেশি অটোচালককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। তার পরেই অভিযু্ক্তদের স্কেচ বানিয়ে তা ছড়িয়েও দেওয়া হয়। আর তার পরেই আজকের এই গ্রেফতারি।