মায়াবতীর (ডান দিকে) শর্ত মেনে নিল কমল নাথের সরকার। —ফাইল চিত্র
কংগ্রেসের মধুচন্দ্রিমার পর্ব কি শেষ? শর্ত চাপিয়ে কার্যত সমর্থন তুলে নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মায়াবতী। এবার বিএসপি নেত্রীর সেই শর্ত মেনেই আন্দোলনে দলিত নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা প্রত্যাহার করে নিল মধ্যপ্রদেশ সরকার। মঙ্গলবার এই ঘোষণা করলেন মধ্যপ্রদেশের আইনমন্ত্রী পি সি শর্মা।
সোমবারই মায়বতী শর্ত দিয়েছিলেন, এ বছরের এপ্রিলে দলিতদের ডাকে ভারত বন্ধের দিন ভাঙচুর তাণ্ডবের জেরে দায়ের হওয়া সব মামলা তুলে নিতে হবে। না হলে সরকার থেকে কার্যত সমর্থন প্রত্যাহারের হুমকিও দেন বিএসপি নেত্রী। একই সঙ্গে কংগ্রেসের তীব্র সমালোচনা করে মায়াবতী বলেছিলেন, ‘‘এই হুঁশিয়ারি দেওয়ার প্রয়োজন ছিল। কাগজে-কলমে প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা না রাখার ক্ষেত্রে কংগ্রেস এবং বিজেপি মুদ্রার এ পিঠ ও পিঠ। এটাই প্রচলিত ধারণা। এখন কংগ্রেসের দায়িত্ব সেই ধারণা পাল্টানো।’’
তার পর ২৪ ঘণ্টাও কাটেনি। এ দিনই মায়ার শর্ত মেনে সব মামলা প্রত্যাহার করে নিল মধ্যপ্রদেশ সরকার। ওই ঘোষণার পাশাপাশি রাজ্যের আইনমন্ত্রী জানান, গত ১৫ বছরে বিজেপির শাসন কালে এ ধরনের যত মামলা হয়েছে, সেগুলি সবই তুলে নেওয়ারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমল নাথ সরকার।
আরও পডু়ন: রাজস্থানে পঞ্চায়েত উপনির্বাচনে কংগ্রেসকে পিছনে ফেলল বিজেপি
গত সপ্তাহেই অখিলেশ যাদব বলেছিলেন, মধ্যপ্রদেশে তাঁর দলের বিধায়ককে মন্ত্রী না করে কংগ্রেস ভালই করেছে। আগামী লোকসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশের পথ পরিষ্কার করে দিয়েছে। ইঙ্গিতটা স্পষ্ট ছিল। লোকসভায় কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের পথে নাও যেতে পারে সমাজবাদী পার্টি (এসপি)।তিন রাজ্যে বিধানসভা ভোটের ফল বেরনোর পর প্রথম কংগ্রেসকে সমর্থনের কথা জানিয়েছিলেন মায়াবতী। তার পর সমর্থন দিয়েছিলেন অখিলেশ। কিন্তু তিন সপ্তাহের মধ্যেই উত্তরপ্রদেশের দুই জোটসঙ্গী ‘বুয়া-বাবুয়া’ দু’জনের গলাতেই ভিন্ন সুর।
আরও পডু়ন: দেশভক্তির প্রমাণ চাই স্কুলেও, হাজিরা দিতে ইয়েস স্যর নয়, বলতে হবে ‘জয় হিন্দ’
তিন রাজ্যে বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পরই মায়াবতী-অখিলেশ যেভাবে সমর্থনের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন, তাতে মনে করা হচ্ছিল, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেস-এসপি-বিএসপি মিলে মহাজোট হচ্ছেই। কিন্তু তার কিছু দিন পরই চিত্রটা পাল্টাতে শুরু করে। প্রথমে অখিলেশ, তার পর এ বার মায়াবতীও বেসুরো গাইতে শুরু করায় জোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে এখন থেকেই সন্দিহান রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।