Waqf Amendment Law

ওয়াকফ আইন নিয়ে ঘোঁট চিরাগের দলেও

বিহারে সংখ্যালঘু ভোট রয়েছে ১৭ শতাংশ। বিজেপি বাদে বাকি সব দলই ওই ভোটব্যাঙ্ককে কাছে টানতে তৎপর। কিন্তু ওয়াকফ আইনে সমর্থন করায় ইতিমধ্যেই জেডিইউ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন চার সংখ্যালঘু নেতা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২৫ ০৭:৫১
Share:

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী চিরাগ পাসোয়ান। —ফাইল চিত্র।

ওয়াকফ বিলে সমর্থন করা নিয়ে জেডিইউ-এর পরে অস্বস্তি বাড়ছে চিরাগ পাসোয়ানের দল এলজেপি-তেও। কেন দল ‘মুসলিম-বিরোধী’ ওয়াকফ বিলকে দল সমর্থন করল, তা নিয়ে জেডিইউ-এর মতো প্রশ্ন উঠেছে চিরাগের দলের অন্দরমহলেও। সব মিলিয়ে বিধানসভা নির্বাচনের আগে ওয়াকফ আইন নিয়ে বেশ বেকায়দায় বিহারে বিজেপির সহযোগী দলগুলি।

Advertisement

বিহারে সংখ্যালঘু ভোট রয়েছে ১৭ শতাংশ। বিজেপি বাদে বাকি সব দলই ওই ভোটব্যাঙ্ককে কাছে টানতে তৎপর। কিন্তু ওয়াকফ আইনে সমর্থন করায় ইতিমধ্যেই জেডিইউ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন চার সংখ্যালঘু নেতা। দলের কাছে ওই নেতাদের কোনও গুরুত্ব নেই বলে দাবি করলেও, জেডিইউ নেতৃত্বের দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে দলের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বর্ষীয়ান মুসলিম নেতারাও। কেন দল ওই বিল নিঃশর্তে সমর্থন করল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছেন দলীয় নেতা তথা প্রাক্তন রাজ্যসভা সাংসদ গুলাম রসুল বালিয়াভি ও বিধান পরিষদের নেতা গুলাম ঘৌস-ও। নীতীশ-ঘনিষ্ঠ ওই নেতাদের প্রকাশ্য অসন্তোষে ব্যাকফুটে জেডিইউ নেতৃত্ব। দলের মুসলিম নেতৃত্বের মধ্যে ওয়াকফ আইনকে কেন্দ্র করে ক্ষোভ যে বাড়ছে তা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট। মুসলিম সমাজের বিরোধিতা সত্ত্বেও স্রেফ জোট-স্বার্থে ওই বিল সমর্থন করায় দলের মুসলিম ভোটব্যাঙ্কের বড় অংশ পিছন থেকে সরে যাওয়ার পরিস্থিতি যে তৈরি হয়েছে, তা বিলক্ষণ বুঝতে পারছেন জেডিইউ নেতারা। সেই কারণে ওই বিলের সংস্কারমুখী দিকগুলি তুলে ধরে আগামী দিনে রাজ্য জুড়ে প্রচারে নামার পরিকল্পনা নিয়েছেন তাঁরা।

এনডিএ-র সহযোগী হিসেবে ওয়াকফ বিলকে সমর্থন করে জেডিইউ-এর মতো সমস্যায় রামবিলাস পাসোয়ানের ছেলে চিরাগ পাসোয়ানের দল লোক জনশক্তি পার্টিও (রামবিলাস)। তাঁর সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে সরব হয়েছেন দলের মুসলিম নেতারা। কেন দল অন্তত ভোটদানে বিরত থাকল না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। উত্তর বিহারে মুসলিম সমাজে এলজেপি-র প্রভাব থাকলেও, ওয়াকফের পরে সেই ভিতে ভাঙন ধরাতে তৎপর হয়েছেন রামবিলাসের ভাই তথা রাষ্ট্রীয় লোক জনশক্তি পার্টির নেতা পশুপতি পরস। রাজনীতিকদের মতে, দু’দলের ভোটব্যাঙ্ক এক। তাই ওয়াকফ আইনে চিরাগদের সমর্থনকে সামনে রেখে পাল্টা মুসলিম ভোটব্যাঙ্ককে পাশে থাকার বার্তা দিতে শুরু করেছেন পরস। অতীতে এনডিএ শরিক হিসাবে মোদী মন্ত্রিসভায় থাকা পারস আসন্ন নির্বাচনে আরজেডি-কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে মহাজোটের শরিক হবেন বলে, তলে তলে প্রচারও শুরু করে দিয়েছেন। এক দিকে রাজ্য রাজনীতিতে চিরাগকে গুরুত্বহীন করে দেওয়া এবং অন্য দিকে মুসলিম ভোট ব্যাঙ্কের সমর্থন নিশ্চিত করতেই পারস মহাজোটের শরিক হওয়ার পথে হাঁটছেন বলে মনে করছেন রাজনীতিকেরা।

Advertisement

এর মধ্যে সোমবার সুপ্রিম কোর্টে ওয়াকফ আইনের সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে আরও দু’টি আবেদন জমা পড়েছে। ডিএমকে এবং কংগ্রেস সাংসদ ইমরান প্রতাপগড়ির এই দু’টি আবেদন-সহ এখনও পর্যন্ত শীর্ষ আদালতে এই নিয়ে ১০টিরও বেশি আবেদন দাখিল করা হল। আবেদনকারীদের মধ্যে রয়েছেন এমআইএম সভাপতি আসাউদ্দিন ওয়েইসি, কংগ্রেস সাংসদ মহম্মদ জাভেদ, আপ বিধায়ক আমানাতুল্লা খান, অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড এবং জমিয়ত উলেমা-ই-হিন্দ। ডিএমকে তাদের ডেপুটি জেনারেল সেক্রেটারি এ রাজার মাধ্যমে শীর্ষ কোর্টে আবেদন করেছে। প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না, বিচারপতি সঞ্জয় কুমার ও বিচারপতি কে ভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ জরুরি শুনানির জন্য বিবেচনা করতে সম্মত হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement