ফাইল চিত্র।
কংগ্রেসের ধারাবাহিক ব্যর্থতার জন্য গান্ধী পরিবারের দিকেই ধারাবাহিক ভাবে আঙুল উঠতে শুরু করায় এ বার কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী বিক্ষুব্ধ নেতাদের সঙ্গে পালা করে বৈঠক করা শুরু করলেন।
গত শুক্রবার কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ নেতাদের জি-২৩ গোষ্ঠীর প্রধান মস্তিষ্ক গুলাম নবি আজাদের সঙ্গে সনিয়া বৈঠক করেছিলেন। আজ সনিয়া দশ জনপথে জি-২৩-র আরও তিন সদস্য, আনন্দ শর্মা, মণীশ তিওয়ারি, ও বিবেক তঙ্খার সঙ্গে বৈঠক করেন। সূত্রের খবর, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে কংগ্রেস সভানেত্রী আরও কয়েক জন বিক্ষুব্ধ নেতার সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন। সনিয়া বিক্ষুব্ধদের দাবি মেনে সকলকে নিয়ে দল চালানোর ব্যবস্থা তৈরিরও ইঙ্গিত দিয়েছেন।
উত্তরপ্রদেশ-সহ পাঁচ রাজ্যে কংগ্রেসের ভরাডুবির পরে দলের বিক্ষুব্ধ নেতারা গুলাম নবির বাড়িতে বৈঠকে বসেছিলেন। সেই বৈঠকে মূলত দু’টি দাবি উঠে— সকলের সঙ্গে আলোচনা করে দলের সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং বিজেপির বিরুদ্ধে লড়তে সমমনস্ক দলগুলির সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে হবে। কংগ্রেস সূত্রের খবর, বিক্ষুব্ধদের দাবি মেনে দল পরিচালনার জন্য সংসদীয় বোর্ড বা উচ্চস্তরীয় কমিটি তৈরি করা হতে পারে। তাতে রাহুল-ঘনিষ্ঠ শিবিরের নেতাদের পাশাপাশি বিক্ষুব্ধ নেতাদেরও রাখা হবে। সনিয়া আজ আলাদা ভাবে দিগ্বিজয় সিংহের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন।
আনন্দ শর্মার মতো কয়েক জন বিক্ষুব্ধ নেতা তাঁদের রাজ্যসভার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে বলে আবার রাজ্যসভায় ফিরতে চান। কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, বিভিন্ন রাজ্যে বিধানসভায় কংগ্রেসের যা শক্তি, তাতে সবাইকে রাজ্যসভার ফেরানো সম্ভব নয়। এমনিতেই এপ্রিলে রাজ্যসভার ভোটে কংগ্রেসের আসনসংখ্যা কমবে। এমনকি রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতার পদ কংগ্রেসের হাতে থাকবে কি না, তা নিয়েও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কংগ্রেস সূত্রের অবশ্য দাবি, চলতি বছরে পরে যে সব রাজ্যে রাজ্যসভার ভোট আসছে, সেখানে আবার কংগ্রেসের সাংসদ বাড়বে। ফলে বাদল অধিবেশনের আগেই কংগ্রেস আবার স্বচ্ছন্দে বিরোধী দলনেতার পদ ধরে রাখায় জায়গায় চলে আসতে পারে। বিরোধী দলনেতার জন্য রাজ্যসভার সর্বাধিক সদস্য সংখ্যা, ২৫০ জনের ১০ শতাংশ সাংসদ থাকা দরকার।
সনিয়া আজ যখন বিক্ষুব্ধ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে তাঁদের শান্ত করার চেষ্টা করেছেন, তখন অন্য দিকে কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা করণ সিংহের পুত্র বিক্রমাদিত্য সিংহ কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করেছেন। তাৎপর্যপূর্ণ হল, গত সপ্তাহে হোলির সময় গুলাম নবি বৈঠক করেছিলেন করণ সিংহের সঙ্গে। তাঁর পুত্র বিক্রমাদিত্য পদত্যাগপত্রে জানিয়েছেন, জম্মু-কাশ্মীরের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জাতীয় স্বার্থে তাঁর অবস্থান কংগ্রেসের সঙ্গে মিলছে না। কংগ্রেস বাস্তব পরিস্থিতি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বিক্রমাদিত্যের পদত্যাগকে গুরুত্ব দিতে না চাইলেও ভবিষ্যতে করণ সিংহ কোন পথে হাঁটবেন, তা নিয়ে কংগ্রেসের চিন্তা রয়েছে। তবে দলের আসল মাথাব্যথা বছরের শেষে গুজরাত ও হিমাচল প্রদেশের ভোট। আজ সন্ধ্যায় হিমাচল প্রদেশের কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে সনিয়া বৈঠক করেন। রাহুল আরেক ভোটমুখী রাজ্য গুজরাতের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। দুই রাজ্যের নেতারাই কংগ্রেসের ভাল ফলের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন।