বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। —ফাইল ছবি।
জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারের ভুল নীতির মাসুল গুনতে হচ্ছে মানুষকে। ডোডায় সন্ত্রাসবাদী হামলার পরে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে এই মর্মে নিশানা করলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী।
জম্মু-কাশ্মীরের ডোডায় গত কাল রাতে জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াই হয় ভারতীয় সেনাবাহিনীর। ওই সংঘর্ষে সেনার এক ক্যাপ্টেন ও তিন জওয়ান নিহত হন। আজ ভোরে সে খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই নিহত সেনাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করেন রাহুল। তাতে কেন্দ্রকে কটাক্ষের পাশাপাশি ‘দেশভক্ত দেশবাসী’র দাবি সম্পর্কে বিস্তারিত জানান তিনি। কংগ্রেস সাংসদ তথা লোকসভার বিরোধী দলনেতা লিখেছেন, ‘কাশ্মীরে একের পর এক এমন ঘটনা অত্যন্ত ভয়ানক এবং উদ্বেগের। সেখানে সন্ত্রাসবাদীরা নিরন্তর হামলা করছে। বিজেপির ভুল নীতির মাসুল গুনতে হচ্ছে জওয়ান এবং তাঁদের পরিবারকে। এই পরিস্থিতিতে দেশভক্ত সমস্ত ভারতীয়ের দাবি একটাই—নিরাপত্তা ক্ষেত্রে বার বার যে বিচ্যুতি ঘটছে, তার সম্পূর্ণ দায় নিক সরকার। সেই সঙ্গে যাঁরা সেনাবাহিনী এবং দেশের ক্ষতি করছেন, কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হোক তাঁদের বিরুদ্ধেও’।
রাহুলের কথায়, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে জম্মু-কাশ্মীরের বেশ কয়েকটি জায়গায় জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছে। ওই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকায় ‘হাই অ্যালার্ট’ জারি করা হয়েছে। কাঠুয়া, কুলগাম-সহ কয়েকটি এলাকায় চলতি মাসে সেনাবাহিনীর উপরে হয়েছে জঙ্গি হামলা। কখনও সেনা কনভয়ে, কখনও আবার সেনার গাড়ি লক্ষ্য করে ছোড়া
হয়েছে গোলাগুলি।
সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, গত তিন বছরে জম্মুতে জঙ্গি হানায় ওই নিয়ে ৪৭ জন জওয়ান নিহত হয়েছেন। কাশ্মীর উপত্যকার তুলনায় হামলার সংখ্যা কম হলেও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি। কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশের কথায়, ‘‘শুধু জম্মুতেই গত ৭৮ দিনে ১১টি জঙ্গি হামলা হয়েছে। এটা একেবারেই টাটকা ঘটনা। দলমত নির্বিশেষে এর বিরুদ্ধে একটি সম্মিলিত আওয়াজ তোলা প্রয়োজন। প্রশ্ন তোলা উচিত স্বঘোষিত ঈশ্বরের পুত্র প্রধানমন্ত্রী এবং চাণক্য যে বড় বড় দাবি করেছিলেন, সেগুলির কী হল’?
কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের কথায়, ‘‘৪ জন বীর সেনার প্রাণহানির খবরে গভীর ভাবে মর্মাহত। মোদী সরকার এমন হাবভাব করছে যেন সব ঠিক মতো চলছে, কোথাও কোনও সমস্যা নেই। তাঁদের অবশ্যই জানা উচিত জম্মু অঞ্চলটি এই ধরনের আঘাতের পর আঘাতে জর্জরিত। মিথ্যা ভাষ্য, মিথ্যা গর্বের চাদরে জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টিকে ঢেকে আমরা নিজেদের বিপদগ্রস্ত করতে পারি না। সেনাবাহিনীর সঙ্গে ভারতের জাতীয় কংগ্রেস কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে।’’