কুয়োর মধ্যে পড়ে মারা গেল কাবেরী। ছবি: সংগৃহীত।
বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে খেলতে হুঁশ ছিল না কখন সন্ধ্যা হয়ে এসেছে। খেলতে খেলতেই গ্রামের বাড়ি থেকে একটু দূরে চলে গিয়েছিল ছোট্ট কাবেরী। সেখানেই একটি কুয়োয় পড়ে যায় সে। বেশ গভীর হলেও প্রবল গ্রীষ্মে ওই কুয়োয় জল শুকিয়ে গিয়েছিল। সেই কুয়োর গভীরে ৩০ ফুট নীচে কাদামাটির মধ্যেই আটকে পড়ে বছর ছয়েকের কাবেরী। প্রায় ৫৪ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়েও তাকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা যায়নি। অবশেষে সোমবার রাত ১২টা নাগাদ তার মৃতদেহ উদ্ধার করে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যেরা।
আরও পড়ুন
মালেগাঁও মামলায় জামিন পেলেন সাধ্বী প্রজ্ঞা
এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে বেঙ্গালুরু থেকে ৬৪০ কিলোমিটার দূরে আথানি তালুকের ঝুনজারাওয়াড়ি গ্রামে। ওই গ্রামেই কাবেরীদের বাড়ি। কুয়োর পড়ে যাওয়ার খবর পাওয়ামাত্রই তাকে উদ্ধারে নামে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ও দমকল কর্মীরা। ওই কুয়োর সমান্তরালে একটি গভীর গর্ত খুঁড়ে কাবেরীকে উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যান তাঁরা। ৫৪ ঘণ্টা ধরে ওই পাথুরে মাটি কেটে কাবেরীর কাছে পৌঁছলেও তাকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা যায়নি। উপরে আনার পর দেখা যায়, তার সারা দেহে ছড়ে যাওয়ার অসংখ্য ক্ষত। উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয় ওই দেহ।
আরও পড়ুন
হোয়াটসঅ্যাপে স্ত্রীকে তালাক লিখে স্বামী দিলেন ‘জন্মদিনের উপহার’!
বেলগাভির পুলিশ সুপার রবিকান্ত গৌড়া জানিয়েছেন, যে জমিতে ওই কুয়ো রয়েছে তার মালিক পলাতক। তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। রাজ্যের ক্ষুদ্রশিল্প মন্ত্রী সতীশ জারকিহলি বেলাগাভি জেলারই বাসিন্দা। কাবেরীর মৃত্যুর পর গভীর শোক প্রকাশ করেন তিনি। মেয়েকে হারিয়ে ভেঙে পড়েছেন কাবেরীর মা সবিতাদেবী। তিনি বলেন, “রাজ্য সরকারের কাছে অনুরোধ, এ রকম খোলা কুয়োর মুখ বন্ধ করতে উদ্যোগ নেওয়া হোক। যাতে আমার কাবেরীর মতো কাউকে এ ভাবে চলে যেতে না হয়।”
গত বছরই কানপুরে একটি দেড় বছরের শিশুকন্যার এ রকম মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছিল। ১০ ঘণ্টা ধরে উদ্ধারকাজ চালিয়েও তাকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা যায়নি। তবে সব কাহিনিই এ রকম মর্মান্তিক ভাবে শেষ হয়নি। ২০০৬-এ ৬০ ফুট গভীর এক পরিত্যক্ত কুয়োর পড়ে গিয়েছিল হরিয়ানার কুরুক্ষেত্রর পাঁচ বছরের শিশু প্রিন্স। ৫০ ঘণ্টার চেষ্টার পর তাকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।