মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালের নির্দেশ সত্ত্বেও বাজারে ঘুরছেন না কাছাড়ের জেলাশাসক—এই সংবাদ প্রকাশের পরই আজ মাঠে নামেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। সকালেই তিন অতিরিক্ত জেলাশাসক রাজীব রায়, জিতুকুমার দাস এবং রঞ্জিতকুমার দাম তিন দিকে বেরোন। যাচাই করেন জিনিসপত্রের দাম।
ফিরে এসে রাজীববাবু অবশ্য ব্যবসায়ীদের সার্টিফিকেটই দেন। তিনি জানান, তিনজনই জেলায় নতুন এসেছেন। সাধারণ মানুষ তাঁদের এখনও চেনেন না। তার উপর, পরিচয় লুকিয়ে রাখার জন্য নিজেদের সরকারি গাড়ি, রক্ষী কিছুই তাঁরা সঙ্গে নেননি। তবু দেখেছেন, সমস্ত জিনিসপত্রের দাম গুয়াহাটির সমান। বিশেষ করে, আলু ও চিনির দামে কোথাও তাঁরা কোনও ফারাক দেখেননি।
তাঁর কথায়, বিভিন্ন ধরনের আলু রয়েছে। বেঙ্গল আলু সব জায়গাতেই ৩০ টাকা। ইউপি-র আলু ২৬ টাকা। একে স্বাভাবিক বলেই মনে করেন রাজীববাবু। জেলা প্রশাসন এখন নিয়মিত বাজার পরিদর্শন করবে বলেও তিনি আজ অঙ্গীকার করেন। জানান, প্রতি সপ্তাহে একবার আচমকা অভিযান চালানো হবে। মজুতে অনিয়ম বা অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ধরা পড়লেই কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খাদ্য ও গণবন্টন দফতর সূত্রে প্রকাশ, অতিরিক্ত জেলাশাসকদের তিন দলের সঙ্গেই তাঁদের অফিসাররা ছিলেন। তাঁরা মেহেরপুর এবং বুধুরাইল কোল্ড স্টোরেজও পরিদর্শন করেন। সূত্রটির কথায়, দু’-একদিনের মধ্যে আলুর দাম কমে যাবে। বাইরে থেকে আজ-কালের মধ্যেই আলু ঢোকার কথা রয়েছে। জেলা প্রশাসনের পরিদর্শনের পর ব্যবসায়ীদের ক্লিনচিট দেওয়ার ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন গ্রাহক সুরক্ষা সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিপ্লবকুমার গোস্বামী। তিনি বলেন, ‘‘প্রতিটি মানুষ বাজারে গিয়ে ঠকছে। যেমন খুশি দাম আদায় করা হচ্ছে। এরপরও তিনজন অতিরিক্ত জেলাশাসক তিন দিকে বেরিয়ে দেখলেন, সব ঠিক রয়েছে!’’
বিপ্লববাবুর অভিযোগ, জেলা প্রশাসন মোটেও নিজেদের দায়িত্ব পালন করছে না। বিভাগগুলি নিজেদের মর্জিমতো চলছে। বাজারদর নিয়ে এতদিন ঘুমিয়ে থাকার পর কাল অভিযোগ জানাতেই আজ পরিদর্শন হল। একই ভাবে মাছ ও সব্জি বাজারগুলিতেও গ্রাহকরা নিয়মিত ঠকছিলেন। ওজন ও পরিমাপ দফতরের দায়িত্ব সে সব দেখভালের। কিন্তু কারও সেদিকে খেয়াল নেই। কয়েকদিন আগে গ্রাহক সুরক্ষা সমিতির অভিযোগ পেয়ে অভিযান চালালে ১২ জন ব্যবসায়ীর জরিমানা হয় বলে তিনি জানান।