ফাইল চিত্র।
অমরনাথ তীর্থযাত্রীদের সুরক্ষার প্রশ্নে নতুন আতঙ্ক ড্রোন।
শেষ অমরনাথ যাত্রা হয়েছিল ২০১৯ সালে। তাও সে বার জম্মু-কাশ্মীরে ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহারের কারণে মাঝপথেই ওই যাত্রা থামিয়ে দেওয়া হয়। তখনও ড্রোনের পরিচয় মূলত খেলনা হিসাবেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু গত দু’বছর যে ভাবে সন্ত্রাস, মাদক, অস্ত্র চোরাচালান থেকে হামলা চালানোর কাজে ড্রোন দেশের পশ্চিম সীমান্তে ব্যবহার করা হচ্ছে, তাতে অমরনাথ যাত্রীদের সুরক্ষা নিয়ে বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে। আগামী ৩০ জুন থেকে ১১ অগস্ট পর্যন্ত চলবে অমরনাথ যাত্রা। তার মধ্যে মূলত ড্রোন ও ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইজ (আইইডি)-র মাধ্যমে হামলা মূলত চিন্তায় রেখেছে ওই যাত্রাপথের পাহারার দায়িত্বে থাকা মূলত আধা সামরিক বাহিনী সিআরপি-কে। এ ছাড়া নিরাপত্তার স্বার্থে প্রত্যেক অমরনাথ যাত্রীকে একটি রেডিয়ো ফ্রিকোয়েন্সি আই ডি কার্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যাতে প্রত্যেক তীর্থযাত্রীকে কার্ডের বারকোডের মাধ্যমে কৃত্রিম উপগ্রহের সাহায্যে সুনির্দিষ্ট ভাবে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়।
মোট ৪৩ দিনের ওই যাত্রায় লস্কর-ই-তইবার সহযোগী ‘দ্য রেজিসস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ ইতিমধ্যেই হামলা চালানোর হুমকি দিয়ে রেখেছে। তা ছাড়া জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের পরে এই প্রথম অমরনাথ যাত্রা হতে চলেছে। গোয়েন্দাদের ধারণা, দূর থেকে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সাম্প্রতিক সময়ে ড্রোন ব্যবহার শুরু করেছে জঙ্গিরা। এ ক্ষেত্রেও তা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অমরনাথ যাত্রার রুটগুলি ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত থেকে বেশ কিছুটা দূরে হলেও, জঙ্গিদের পাঠানো ড্রোন যে সীমান্ত পেরিয়ে উড়ে এসে দেশের মূল ভূখণ্ডে হামলা চালাতে পারে, তার প্রমাণ গত বছরের জুন মাসে জম্মু বিমান বন্দরে হামলার ঘটনা। এক স্বরাষ্ট্র কর্তার মতে, “প্রায় ৫০ কিলোমিটার লম্বা ভক্তদের মিছিলকে জমি ও আকাশপথে এক সঙ্গে পাহারা দিতে হবে নিরাপত্তা বাহিনীকে। একা একেবারেই সহজ কথা নয়।”
এত বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ড্রোনের উপর নজরদারি রাখা যে কঠিন, তা মেনে নিচ্ছেন নিরাপত্তা বাহিনীর কর্তারাও। সূত্রের মতে, ড্রোন দেখা মাত্র যাতে আকাশেই গুলি করে উড়িয়ে দেওয়া যায়, সে জন্য ইতিমধ্যেই একাধিক পয়েন্টে স্নাইপার বসানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। যে কাজে সাহায্য নেওয়া হচ্ছে এনএসজি-র। এ ছাড়া ড্রোনের মতো ছোট্ট উড়ন্ত বস্তুকে চিহ্নিতকরণ ও তা যাতে সীমান্ত পার হওয়ার আগেই বিকল করে দেওয়া যায়, সে জন্য সাহায্য নেওয়া হচ্ছে বায়ু সেনার। সীমান্ত এলাকাতেই ড্রোনকে জ্যাম করে দেওয়ার জন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তিও ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।