কেউ কথা রাখে না। ভোটের পরে তো একেবারেই নয়!
সে ডান হোক বা বাম, এই বঙ্গের হোন বা ভিন রাজ্যের, ট্র্যাডিশনের ব্যতিক্রম ঘটে না।
এই যেমন, দক্ষিণী চলচ্চিত্রের নায়িকা রামাইয়ার কথাই ধরা যাক। যত দিন শুধু কন্নড় ছবির অভিনেত্রী ছিলেন, সেই প্রশ্ন ওঠেনি। কিন্তু, যবে থেকে রাজনীতিতে পা রাখলেন, কংগ্রেসের সাংসদও হলেন, রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে ওঠা চিরাচরিত সেই অভিযোগের আঙুল উঠল তাঁর বিরুদ্ধেও। কর্নাটকের মান্ড্য জেলা থেকে নির্বাচিত এই প্রাক্তন সাংসদ যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা তিনি রাখেননি বলে অভিযোগ উঠেছে। কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধীর সঙ্গে রামাইয়া গিয়েছিলেন সানাবড়াকোপ্পালু গ্রামে আত্মঘাতী চাষি লোকেশের বাড়ি। সেখানেই এই নায়িকা-রাজনীতিক জোর গলায় ঘোষণা করেন, ওই চাষির দুই ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার যাবতীয় খরচ তিনিই জুগিয়ে যাবেন। আত্মঘাতী ওই চাষির এক সন্তান স্মিতা পড়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে, আর এক জন, সাগর, পড়ে পঞ্চম শ্রেণিতে।
ধন্য ধন্য পড়েছিল। খোদ রাহুল গাঁধীও প্রশংসা করেছিলেন রামাইয়ার এই ভূমিকার। কিন্তু তার পর? দিনটা ছিল ২০১৫-র ৯ অক্টোবর। কিন্তু, লোকেশের স্ত্রী শোভা স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের কাছে অভিযোগ করেছেন, ঘোষণাই সার। তার পর থেকে এক দিনও রামাইয়া তাঁকে একটি ফোনও করেননি। তাঁর পরিবারের জন্যও একটি পয়সা খরচ করেননি। গ্রামের মানুষজনও রামাইয়ার এই ভূমিকায় ক্ষুব্ধ। কর্নাটক সরকারও ওই চাষির পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল। কিন্তু সে টাকা আত্মঘাতী চাষির পরিবার পায়নি। রাহুল গাঁধীও ওই টাকা দিয়ে দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়াকে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু কাজ হয়নি।
আরও পড়ুন- পাক দল নিয়ে তিরের মুখে মোদী সরকার
সব মিলিয়ে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছে লোকেশের গ্রাম। গ্রামবাসীরা বলছেন, আসলে রাজনৈতিক চমক দেওয়ার জন্যই রামাইয়া ওই ঘোষণা করেন। গরিব মানুষের জন্য তাঁর কোনও মাথাব্যথা নেই।
কারই বা থাকে! রামাইয়া হোন বা অন্য কেউ, ভিন রাজ্য হোক বা এই বঙ্গ, অভিযোগটাও তো একই!
ভোটের মরসুমে আমআদমি তাই প্রশ্ন ছোড়ে, হাতজোড় করে, আপনজনের মতো হাত ধরে, বুকে জড়িয়ে যাঁরা ভোট চাইতে আসেন, মিষ্টি কথায় প্রতিশ্রুতির ফোয়ারা বইয়ে দেন, তাঁদের অনেকেই তো রামাইয়ার থেকে অনেক ভার অভিনেতা হতে পারতেন!
প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অভিযোগের জবাব চাইতে রামাইয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল সংবাদ মাধ্যম। তাঁর মোবাইল সুইচড অফ।