—ফাইল চিত্র।
দেশে ‘অচ্ছে দিন’ আসবে ২০১৯-এ। নরেন্দ্র মোদীর স্লোগানকে হাতিয়ার করেই দাবি রাহুল গাঁধীর। শুধুমাত্র আগামী লোকসভা নয়, পাঁচ রাজ্যে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনী লড়াইয়েও যে বিমুদ্রাকরণই কংগ্রেসের মূল হাতিয়ার হবে সে ইঙ্গিতও স্পষ্ট। দেশের আর্থিক দুর্দশার প্রসঙ্গ তুলে ধরে রাহুল বলেন, “২০১৯-এ কংগ্রেস ক্ষমতায় ফিরলে তবেই দেশে ‘অচ্ছে দিন’ আসবে।”
আরও পড়ুন
‘রাজ্যের সঙ্গে কথা না বলেই নোট বাতিল!’
বুধবার নয়াদিল্লির তালকাটোরা স্টেডিয়ামে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের নাম ছিল ‘জনবেদনা সম্মেলন’। এর থেকেও স্পষ্ট যে এই বৈঠক থেকেই আমজনতার ভোগান্তিকে হাতিয়ার করে মোদী সরকারকে আক্রমণ করবেন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। পাশাপাশি, দলীয় কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে মোদী বিরোধী আন্দোলন আরও জোরদার করতে চায় তারা। ভাষণ দিতে উঠে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন কংগ্রেসের সহ-সভাপতি রাহুল। মোদী সরকারের নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘিরে দেশের আর্থিক সঙ্কটের ছবি তুলে ধরে মোদী তথা বিজেপিকে ঝাঁঝালো স্বরে বিঁধলেন তিনি। গত ৮ নভেম্বর ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু, নতুন নোট সংগ্রহে দেশ জুড়ে আমজনতার যে দুর্দশার ছবি ফুটে ওঠে তাতে যথেষ্ট অস্বস্তিতে পড়তে হয় মোদী সরকারকে। এর পরই মোদী বিরোধিতায় মুখর হয় কংগ্রেস-সহ বিভিন্ন বিরোধী দল। এ দিন সেই বিরোধিতার স্বর আরও তীব্র করেন রাহুল। নরেন্দ্র মোদীর নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের ফলেই দেশের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড ভেঙে গিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। রাহুলের মতে, “নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত হাস্যকর।” ওই সিদ্ধান্ত যে মোদীজির ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত তা দাবি করে রাহুলের অভিযোগ, “নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে গিয়ে আরবিআই গভর্নরের পদকে নিজের ইচ্ছামতো ব্যবহার করছেন মোদীজি।” রাহুলের দাবি, বিশ্বের বহু অর্থনীতিবিদ বিমুদ্রাকরণের বিপক্ষে মত দিলেও তা কানে তোলেননি প্রধানমন্ত্রী। আর তা করতে গিয়ে দেশের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছেন। রাহুল বলেন, “গত ৬০ বছরে আমরা যা করিনি মাত্র দু’বছরে মোদীজি তা-ই করে দেখিয়েছেন। তিল তিল করে গড়ে তোলা আরবিআই-সহ দেশের বিভিন্ন সংস্থাগুলি ধ্বংস করে দিয়েছেন তিনি।”
রাহুলের আক্রমণের তির থেকে ছাড় পায়নি মোদী সরকারের চালু করা একাধিক প্রকল্পও। সেগুলিকে সারবত্তাহীন বলে কটাক্ষ করেন রাহুল। তিনি বলেন, “স্বচ্ছ ভারত প্রকল্প চালু করে আমজনতার সঙ্গে মোদীজি নিজেও হাতে ঝাঁটা তুলে নিয়েছিলেন। কিন্তু, তার কিছু দিন পর আর কিছু হয়নি। মেক ইন ইন্ডিয়া, ডিজিটাল ইন্ডিয়া, স্টার্ট-আপ ইন্ডিয়া, স্কিল ইন্ডিয়া, টেক ইন্ডিয়া-সহ বহু প্রকল্পেরই একই হাল হয়েছে।”
তবে রাহুলের মন্তব্যের কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিজেপি-র জাতীয় মুখপাত্র সিদ্ধার্থনাথ সিংহ। তিনি বলেন, “সমস্যা হল, রাহুলকে বড় হয়ে উঠতে হবে। মায়ের কোল ছেড়ে বেরিয়ে আসতে হবে।”