রাহুল গান্ধী এবং অরবিন্দ কেজরীওয়াল। — ফাইল চিত্র।
আসন্ন লোকসভা ভোটে দিল্লির সাতটি আসনের মধ্যে তিনটি কংগ্রেসকে ছাড়তে রাজি হয়েছেন আম আদমি পার্টি (আপ)-র প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়াল। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর দলের তরফে সোমবার দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে সেই ‘বার্তা’ কংগ্রেস হাইকমান্ডকে দেওয়া হয়েছে বলেও ‘ইন্ডিয়া টুডে’তে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের দাবি।
ওই প্রতিবেদন জানাচ্ছে, দিল্লির তিনটি আসনের বদলে কেজরীর দল হরিয়ানায় ১০টি আসনের মধ্যে তিনটি এবং গুজরাতে ২৬টি আসনের মধ্যে একটি (ভারুচ) চেয়েছে। সোমবার সহযোগী দলগুলির সঙ্গে আসন সমঝোতার দায়িত্বপ্রাপ্ত কংগ্রেসের পাঁচ নেতার কমিটির সঙ্গে আপ নেতৃত্বের বৈঠক হয়। সেখানেই ওই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে প্রকাশিত খবরে জানানো হয়েছে।
মুকুল ওয়াসনিকের নেতৃত্বে ওই কমিটিতে রয়েছেন, রাজস্থানের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত, ছত্তীসগঢ়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বঘেল, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সলমন খুরশিদ এবং এআইসিসির প্রাক্তন মুখপাত্র মোহন প্রকাশ। ছিলেন দিল্লি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অরবিন্দর সিংহ লভলীও। আপের তরফে রাজ্যসভা সাংসদ সন্দীপ পাঠক এবং দিল্লির দুই মন্ত্রী অতিশী এবং সৌরভ ভরদ্বাজ ছিলেন বৈঠকে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, ‘আপ’ শাসিত পঞ্জাবে আসন সমঝোতা নিয়েও বৈঠকে কথা হয়েছে।
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে ‘আপ’ শাসিত দিল্লির সবগুলি আসনই জিতেছিল বিজেপি। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে তার মধ্যে পাঁচটি আসনেই কংগ্রেস দ্বিতীয় স্থানে ছিল। একই ভাবে হরিয়ানার ১০টি এবং গুজরাতের ২৬ আসনেও বিজেপি জিতেছিল। হরিয়ানার ন’টি এবং গুজরাতের সবগুলি আসনে কংগ্রেস ছিল দ্বিতীয় স্থানে। বৈঠকের পরে সাংবাদিকদের ওয়াসনিক বলেন, ‘‘সৌহার্দ্যমূলক পরিবেশে আলোচনা হয়েছে।’’
প্রসঙ্গত, গত অগস্ট-সেপ্টেম্বরে মুম্বইয়ে ‘ইন্ডিয়া’র আগের বৈঠকে তৃণমূল দাবি জানিয়েছিল, অক্টোবরের মধ্যে লোকসভার আসন সমঝোতা চূড়ান্ত করা হোক। কিন্তু পাঁচ রাজ্যের ভোটের কথা মাথায় রেখে কংগ্রেস সে পথে হাঁটেনি। অনেকেই সেই সময় বলেছিলেন, কংগ্রেস পাঁচ রাজ্যে ভোটের ফলাফল দেখে লোকসভা ভোটের প্রস্তুতির দিকে এগোতে চাইছে। কিন্তু গত ৩ ডিসেম্বর ভোটের ফলপ্রকাশের পর দেখা যায়, কংগ্রেস হিন্দি বলয়ে মুখ থুবড়ে পড়েছে। তাদের হাতে থাকা ছত্তীসগঢ় ও রাজস্থান দখল করে নিয়েছে বিজেপি। কংগ্রেসের সান্ত্বনা পুরস্কার বলতে কেবল দাক্ষিণাত্যের তেলঙ্গানা। কংগ্রেসের এ হেন অবস্থায় স্বাভাবিক ভাবেই আসন সমঝোতা নিয়ে ‘চাপ’ বাড়িয়েছে ‘ইন্ডিয়া’র শরিক দলগুলি। ফলে কংগ্রেস কিছুটা ‘নমনীয়’ হতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকে।