জয়ের পর কান্নায় ভেঙে পড়েছেন আপের মেয়র পদপ্রার্থী কুলদীপ সিংহ (ছবিতে বাঁ দিকে)। ছবি: পিটিআই।
অবশেষে চণ্ডীগড়ের মেয়র নির্বাচনে জয়ী হল বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’। গত ৩০ জানুয়ারি ‘ভোটে জিতে’ও হারতে হয়েছিল চণ্ডীগড় পুরনিগমের আপ এবং কংগ্রেস মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী কুলদীপ সিংহকে। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট কুলদীপকেই ‘বৈধ বিজয়ী’ বলে ঘোষণা করেছে। যে আটটি ভোট বাতিলের জন্য বিজেপির মেয়র পদপ্রার্থী মনোজ সোনকরের কাছে কুলদীপকে হারতে হয়েছিল, সেই আটটি ভোটকে মঙ্গলবারই ‘বৈধ’ বলে রায় দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
মঙ্গলবার চণ্ডীগড়ের মেয়র নির্বাচনে ‘কারচুপি’তে অভিযুক্ত প্রিসাইডিং অফিসার অনিল মসিহার বাতিল করা আটটি ভোট বৈধ বলে জানিয়ে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার এই সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে শীর্ষ আদালত মেয়র নির্বাচনের পুনর্গণনা করারও নির্দেশ দেয়। পুনর্গণনার সময় বাতিল করা আটটি ব্যালট পেপারকেও গোনা হয়। তার পরই আপের প্রার্থীকে জয়ী ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্ট।
গত ৩০ জানুয়ারি মেয়র নির্বাচন ছিল চণ্ডীগড়ে। বিজেপিকে রুখতে ওই নির্বাচনে যৌথ ভাবে লড়াইয়ে নেমেছিল কংগ্রেস এবং আপ। পুরপ্রতিনিধিদের ভোটের হিসাবে প্রথমে এগিয়েও গিয়েছিলেন আপ-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী কুলদীপ সিংহ। মোট ৩৬টি বৈধ ভোটের মধ্যে জোট পায় ২০টি। অন্য দিকে, বিজেপির মেয়র পদপ্রার্থী মনোজ সোনকর পান ১৬টি ভোট। কিন্তু পরে জোটপ্রার্থী কুলদীপ সিংহের পাওয়া ৮টি ভোটকে বাতিল ঘোষণা করেন প্রিসাইডিং অফিসার অনিল মসিহা।
৩৫ সদস্যের চণ্ডীগড় পুরনিগমে বিজেপির ১৪ জন কাউন্সিলর ছিলেন। অন্য দিকে আপ এবং কংগ্রেসের কাউন্সিলরের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ১৩ এবং ৭। এই নির্বাচনে জোট বেঁধে লড়তে নেমেছিল আপ এবং কংগ্রেস। গত ৩০ জানুয়ারি মোট ৩৬টি বৈধ ভোটের মধ্যে জোটপ্রার্থী কুলদীপ সিংহ পান ২০টি। অন্য দিকে, বিজেপির মেয়র পদপ্রার্থী মনোজ সোনকর পান ১৬টি ভোট। কিন্তু পরে জোটপ্রার্থীর পাওয়া আটটি ভোট বাতিল করা হয়। ফলে বিজেপির বিরুদ্ধে ‘জিতেও’ হারতে হয় জোটকে।
তার পরই ভিডিয়ো প্রকাশ করে আপের তরফে দাবি করা হয়, ব্যালট পেপারে কাটাকুটি করে গণনায় কারচুপি করেছেন প্রিসাইডিং অফিসার অনিল। সোমবারের শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চের নির্দেশ ছিল, মঙ্গলবারই ভোটের কাজে ব্যবহৃত সমস্ত ব্যালট পেপার আদালতে নিয়ে যেতে হবে। একই সঙ্গে শীর্ষ আদালতে পেশ করতে হবে ভোটগণনার সময়ে তোলা ভিডিয়ো ফুটেজও। সেই মতোই সেগুলি আদালতে হাজির করানো হয়।
অভিযুক্ত প্রিসাইডিং অফিসারকে নোটিস দিয়ে কৈফিয়ত তলব করেছে আদালত। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় অনিলের উদ্দেশে বলেন, “মাননীয় মসিহা, আপনি যদি সঠিক উত্তর না দেন, তা হলে আপনি শাস্তি পাবেন। এটা গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আমরা ভিডিয়ো দেখেছি। আপনি ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে ব্যালট পেপারের উপরে কাটাকুটি করে কী করছিলেন?
অভিযুক্ত প্রিসাইডিং অফিসার আদালতে জানান, যাতে ব্যালট পেপারগুলি মিশে না যায়, তার জন্যই তিনি দাগ দিয়ে রাখছিলেন। ভিডিয়োয় কেন তাঁকে বার বার সিসি ক্যামেরার দিকে তাকাতে দেখা গিয়েছে, এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “অনেক ক্যামেরা ছিল। আমি সেগুলির দিকেই তাকিয়েছিলাম।” তাঁর বক্তব্য শোনার পর শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল, ব্যালটগুলি পরীক্ষা করে দেখার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
রবিবার বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন আপের তিন কাউন্সিলর। ওই দিনই পদত্যাগ করেন সদ্য প্রাক্তন মেয়র মনোজ। তবে সুপ্রিম নির্দেশে চণ্ডীগড়ের মেয়র পদ পেল আপ-কংগ্রেস জোটই।