ফাইল চিত্র।
ব্যক্তিপরিসরের অধিকারকে সংবিধানের মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তার পরেও আধার সাংবিধানিক বৈধতার পরীক্ষায় উতরে যাবে বলেই মনে করছেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি।
আয়কর রিটার্ন থেকে মোবাইলের সিম— নরেন্দ্র মোদী সরকার সর্বত্র আধার বাধ্যতামূলক করে দেওয়ার পরেই মানুষের ব্যক্তিপরিসরে আঘাত আসছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। সুপ্রিম কোর্টে এই প্রশ্ন তুলে আধার-কে চ্যালেঞ্জ করা হয়। সুপ্রিম কোর্ট সিদ্ধান্ত নেয়, আগে ব্যক্তিপরিসর মানুষের মৌলিক অধিকার কি না, তা খতিয়ে দেখা হোক। এর পরই ঐতিহাসিক রায়ে ব্যক্তিপরিসরের অধিকারকে মৌলিক অধিকার বলে রায় দেয় শীর্ষ আদালত।
স্বাভাবিক ভাবেই এর পর আধারের ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এ বিষয়ে নভেম্বরে সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চে শুনানি হবে। তার আগে আজ দিল্লিতে ব্যাঙ্ক পরিষেবা নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের এক সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি দাবি করেন, ‘‘অভিন্ন পরিচিতি সংখ্যার মাধ্যমে মানুষকে সরকারি সুবিধা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। সেই কারণেই সাংবিধানিক বৈধতার পরীক্ষায় আধার উতরে যাবে।’’
সংবিধানের ২১-তম অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, আইনগত প্রক্রিয়া ছাড়া কাউকে তাঁর জীবন ও ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। সংবিধানের এই অনুচ্ছেদের ভিত্তিতেই ব্যক্তিপরিসরের অধিকার বা রাইট টু প্রাইভেসি-কে মৌলিক অধিকারের স্বীকৃতি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। যুক্তি দেওয়া হচ্ছে, এর ফলে কেউ চাইলে আধারে তার গোপন বা বায়োমেট্রিক তথ্য দিতে অস্বীকার করতে পারেন। কিন্তু এক কালের দুঁদে আইনজীবী জেটলির যুক্তি, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের রায়েই বলা হয়েছে, সমাজের বৃহত্তর স্বার্থে সংবিধানের ২১-তম অনুচ্ছেদে দেওয়া অধিকারে কিছু সীমাবদ্ধতা আরোপ করা যায়। উদাহরণ হিসেবে বলা হয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তা, অপরাধীকে চিহ্নিত করা এবং সামাজিক সুরাহা বণ্টন। এই তৃতীয়টিই হল আধারের পিছনে মূল উদ্দেশ্য। আধারের মাধ্যমে সকলের পরিচিতি চিহ্নিত হওয়ার পরেই শুধু যাদের ভর্তুকি প্রয়োজন, তাদেরই ভর্তুকি দেওয়া যায়।’’
পি চিদম্বরম, প্রশান্ত ভূষণরা অবশ্য প্রশ্ন তুলেছেন, মোবাইলের সিমের মতো যে সব ক্ষেত্রে সরকার ভর্তুকি দিচ্ছে না, সেখানেও আধার বাধ্যতামূলক করা হবে কেন? জেটলি অবশ্য আজ তার জবাব দেননি। কিন্তু তাঁর যুক্তি, আধারের পরিকল্পনা ইউপিএ-সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল। কিন্তু আধারের আইনি স্বীকৃতি ছিল না। মোদী সরকার এসেই আধারের জন্য পৃথক আইন এনেছে।