‘জয় শ্রীরাম’ বলিয়ে, ১৮ ঘণ্টা পিটিয়ে খুন ঝাড়খণ্ডে

ঝাড়খণ্ডের ওই যুবক মারা গিয়েছেন গত কাল। মোটরবাইক চোর সন্দেহে গত ১৮ জুন তাঁকে প্রায় ১৮ ঘণ্টা ধরে পেটায় সরাইকেলা-খরসোঁয়া জেলার ধক্তিদি গ্রামের কিছু মানুষ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

রাঁচী শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৯ ০৩:০৩
Share:

আক্রান্ত: মারধরের ভিডিয়োয় তবরেজ আনসারি। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়ার সৌজন্যে

বেধড়ক মার খাওয়া, ল্যাম্পপোস্টে বাঁধা যুবক হাঁপাতে হাঁপাতে বলছেন, ‘‘জয় শ্রীরাম, জয় শ্রীরাম।’’ বলছেন মানে, বলানো হচ্ছে তাঁকে দিয়ে। অকথ্য গালিগালাজ-সহ। মোবাইলে তোলা ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, কালো টি-শার্ট, খাকি প্যান্ট পরা যুবককে কারা যেন বলছে, ‘‘বল, জয় শ্রীরাম! বল, জয় হনুমান!’’

Advertisement

ঝাড়খণ্ডের ওই যুবক মারা গিয়েছেন গত কাল। মোটরবাইক চোর সন্দেহে গত ১৮ জুন তাঁকে প্রায় ১৮ ঘণ্টা ধরে পেটায় সরাইকেলা-খরসোঁয়া জেলার ধক্তিদি গ্রামের কিছু মানুষ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পেটাতে পেটাতে যুবককে তাঁর নাম জিজ্ঞেস করে কয়েক জন। তিনি বলেন, ‘‘সোনু।’’ পুরো নাম বলতে বলা হয়। উত্তর আসে, ‘‘তবরেজ আনসারি।’’

শোনা মাত্রই মারের মাত্রা বাড়ে। সঙ্গে ‘জয় শ্রীরাম’ বলার নির্দেশ। ঘটনাচক্রে, আজই মার্কিন সরকারের রিপোর্ট খারিজ করে নরেন্দ্র মোদীর বিদেশ মন্ত্রক দাবি করেছে, ‘‘ভারতে সংখ্যালঘুদের অধিকার সুরক্ষিত!’’

Advertisement

ইন্টারনেটে ছড়ানো বহু ভিডিয়োর একটিতে দেখা যাচ্ছে, তবরেজকে পেটাতে পেটাতে লাঠিই ভেঙে যাচ্ছে এক জনের। বুকফাটা আর্তনাদ করছেন তবরেজ। অনেক পরে পুলিশ এসে তবরেজকে উদ্ধার করে চুরির দায়ে কোর্টে তোলে। কোর্ট পাঠায় জেল হেফাজতে। গত কাল অবস্থা খারাপ হলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তবরেজকে। সেখানে তিনি মারা যান। সমাজকর্মীদের যদিও অভিযোগ, হাজতে মৃত্যুর পরেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাঁকে।

তবরেজের পরিবার জানিয়েছে, পুণেতে ঝালাই মিস্ত্রির কাজ করতেন ২৪ বছরের ওই যুবক। বাড়ি এসেছিলেন ইদ উপলক্ষে। ১৮ তারিখে আরও দু’জনের সঙ্গে জামশেদপুর যাবেন বলে বেরিয়েছিলেন তিনি। ভিডিয়োয় শোনা গিয়েছে, তবরেজ বলছেন, ওই দু’জন তাঁকে একটি মোটরবাইকের সামনে অপেক্ষা করতে বলে গিয়েছিল। পরে দু’জনই পালায়।

ভিডিয়োগুলির ভিত্তিতে পাপ্পু মণ্ডল নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১০০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে এফআইআরে। পাপ্পুর সঙ্গে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের যোগ মেলেনি বলে পুলিশ দাবি করলেও কেউ কেউ মনে করিয়ে দিয়েছেন, ২০১৬ থেকে এই নিয়ে ১৩ জনকে পিটিয়ে মারা হল ঝাড়খণ্ডে। এর প্রায় প্রত্যেকটি ঘটনাতেই আঙুল উঠেছে হিন্দুত্ববাদী বা গোরক্ষকদের দিকে।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement