যৌন নির্যাতনের শিকার সীতাপুরের তরুণী।
যৌন হেনস্থাকারীদের বিরুদ্ধে থানায় যাওয়ায় এক তরুণীর গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। ওই ঘটনা ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের সীতাপুর শহরে। ঘটনাচক্রে, সোমবার সকালেই একটি পুস্তিকা প্রকাশ করে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে গালভরা দাবি করেছে যোগী আদিত্যনাথ সরকার। তাতে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের দাবি, রাজ্যে ‘গুন্ডারাজ’ নির্মূল করা গিয়েছে। আইন-শৃঙ্খলাও পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। তবে সেই দাবি যে কতটা ফাঁপা, তা যেন ফের এক বার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল সীতাপুরের ঘটনা।
নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগ, গত বৃহস্পতিবার, ২৯ নভেম্বর সীতাপুরে বাপের বাড়িতে এসেছিলেন ২৯ বছরের ওই তরুণী। সে দিন তাঁকে যৌন হেনস্থা করে তাঁদেরই গ্রামের দুই বাসিন্দা রাজেশ এবং রামু নামে দুই ভাই। এ নিয়ে স্থানীয় তমবৌর থানায় লিখিত অভিযোগ জমা দিতে যান ওই তরুণী। তবে থানার আধিকারিকেরা তাঁকে ফিরিয়ে দেন বলে অভিযোগ। ফলে এ নিয়ে কোনও এফআইআর দায়ের করতে পারেননি তিনি।
ওই ঘটনার পর গত শনিবার ফের এক বার ওই দু’জনের হাতে যৌন হেনস্থার শিকার হন নির্যাতিতা। এ নিয়ে টহলদারি পুলিশ ভ্যানেও খবর দেওয়া হয়। তবে পুলিশকর্মীরা গ্রামে এলেও অভিযুক্তদের ধরতে ব্যর্থ হয়। এর পর সেই রাতে একটি আখের খেতে শৌচকর্ম করতে গেলে ওই তরুণীর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয় অভিযুক্তরা।
(আজকের তারিখে গুরুত্বপূর্ণ কী কী ঘটেছিল অতীতে, তারই কয়েক ঝলক দেখতে ক্লিক করুন— ফিরে দেখা এই দিন।)
পুলিশ জানিয়েছে, ওই তরুণীর দেহের ৪০-৪৫ শতাংশ অগ্নিদগ্ধ হয়ে গিয়েছে। হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন তিনি। যৌন নির্যাতনে অভিযুক্ত দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: দলিত-আদিবাসী নন, তিনি জৈন, বজরঙ্গবলির সঙ্কট বাড়িয়ে সামনে এল নতুন বার্থ সার্টিফিকেট!
এই ঘটনায় গাফিলতির অভিযোগ উঠতেই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। ঘটনার তদন্তে নেমে রাজেশ এবং রামুকে গ্রেফতার করছে পুলিশ। দক্ষিণ সীতাপুরের পুলিশ সুপার মধুবন সিংহ জানিয়েছেন, তমবৌর থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক ওমপ্রকাশ সরোজ, কনস্টেবল ছেদি লাল এবং এলাকার পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বে থাকা সাব-ইনস্পেক্টর মনোজ কুমারকে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে বরখাস্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘‘রামমন্দির না হলে বিজেপির উপর বিশ্বাস উঠে যাবে,’’ এ বার তোপ রামদেবেরও
আরও পড়ুন: কেজি প্রতি দেড় টাকারও কম! ৭৫০ কেজি পেঁয়াজ বিক্রির ১০৬৪ টাকা মোদীকে পাঠিয়ে প্রতিবাদ চাষির
লখনউ জোনের আইজি সুজিত পাণ্ডে এ দিন জানিয়েছেন, ওই নির্যাতিতাকে দেখতে রবিবার রাতে তিনি নিজে হাসপাতালে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, “ওই তরুণীর বয়ানের ভিত্তিতে একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। এ নিয়ে তদন্ত চলছে। এ ছাড়া, ওই পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”