একই সময়ে দু’টি স্কুলে পড়াচ্ছেন এক শিক্ষক। বেতনও পাচ্ছেন দু’টি স্কুল থেকেই। খাতায়-কলমে তার প্রমাণ মিলেছে!
এমনই কাণ্ড ঘটেছে করিমগঞ্জে। অভিযুক্ত শিক্ষক জহিরুল ইসলামের শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছেন রামকৃষ্ণনগর খণ্ড শিক্ষাধিকারিক খইরুল ইসলাম হাজারি।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, অভিযোগের তদন্তে নেমে গড়েরবন্দ এমভি স্কুল এবং চৈতন্যনাথ পাবলিক হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের হাজিরার খাতা দেখে অবাক শিক্ষা দফতরের কর্তারা। তাঁরা জানান, ২০১০ সাল থেকে রামকৃষ্ণনগরের বিদ্যানগরে ‘চৈতন্যনাথ পাবলিক হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলে’ শিক্ষকতা করছেন জহিরুল। শুরুতে তাঁর বেতন ছিল ৮ হাজার টাকা। বর্তমানে তা হয়েছে ১৫ হাজার। ২০১২ সালে তিনি টেট শিক্ষকের নিযুক্তি পান নিলামবাজারের একটি স্কুলে। সেখান থেকে বদলি নিয়ে ২০১৩ সালের ২৭ জুন গড়েরবন্ধ এমভি স্কুলে যোগদান করেন। কিন্তু এত দিনেও বিদ্যানগরের ওই স্কুল থেকে ইস্তফা দেননি। দু’জায়গাতেই প়ড়াতেন তিনি। সে জন্য কোনও সমস্যায় পড়তে হয়নি।
গড়েরবন্ধ এমভি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের পদে সজল নাথ যোগ দেওয়ার পরই প্রথম ‘ঝুলি থেকে বেড়াল’ বের হয়। জহিরুলকে তিনি জানিয়ে দেন, নিয়মিত স্কুলে না এলে বেতন মিলবে না। তাতেই বজ্রপাত হয় তাঁর মাথায়! এত বছর একই সঙ্গে এমভি স্কুল ও চৈতন্যনাথ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করলেও, এ বার যে তা সম্ভব হবে না— সেটা আঁচ করতে পারেন জহিরুল। শিক্ষা বিভাগ সূত্রে খবর, প্রধান শিক্ষক সজলবাবুকে তখন সব কথা খুলে জানান জহিরুল। খবর পৌঁছে যায় শিক্ষা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলাশাসক বি সি নাথ, জেলার প্রাথমিক শিক্ষাধিকারিক, ইন্সপেক্টর অব স্কুলের কাছে। প্রশ্ন ওঠে, একই শিক্ষকের নামে দু’টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট কী ভাবে খোলা হল। কী ভাবেই বা এত বছর সবার চোখে ধুলো দিয়ে দু’টি স্কুলে কাজ করলেন জহিরুল!
গত কাল রামকৃষ্ণনগর খণ্ড উন্নয়ন শিক্ষাধিকারিক খইরুল ইসলাম হাজারি তদন্ত করেন। তিনি জানান, রিপোর্ট প্রাথমিক শিক্ষাধিকারিকের দফতরে জমা দেওয়া হবে। দু’টি স্কুল থেকে বেতন নেওয়ার বিষয়ে পুলিশি তদন্তের সুপারিশ করা হবে।