PM Narendra Modi-Sheikh Hasina

মোদী-হাসিনা কথা আজ, সই হতে পারে ১০টি চুক্তি

ভারতের দক্ষিণ এশিয়া নীতির কেন্দ্রে রয়েছে ঢাকা। অর্থনৈতিক হিসাবে এই অঞ্চলে বাংলাদেশ ভারতের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য সহযোগী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২৪ ০৭:৫৯
Share:

(বাঁ দিকে) নরেন্দ্র মোদী। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

এনডিএ-র নতুন সরকারের সঙ্গে শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকে বসতে প্রতিনিধি দল নিয়ে আজ বিকেলে নয়াদিল্লি পৌঁছলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার দুপুরে শীর্ষ প্রতিনিধি পর্যায়ে এব‌ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে একান্ত বৈঠক করবেন তিনি। সই হওয়ার কথা ১০টিরও বেশি চুক্তিপত্র। এর মধ্যে অন্তত ৪টির মেয়াদ শেষে পুনর্নবীকরণ হওয়ার কথা রয়েছে। উঠতে পারে তিস্তার জল বণ্টনের বিষয়ও।

Advertisement

আজ সন্ধ্যায় হাসিনার হোটেলে গিয়ে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এর পর বিদেশমন্ত্রী তাঁর সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেন, “বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আনন্দিত। আমাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ এবং নিবিড় সম্পর্ককেই তুলে ধরছে তাঁর ভারত সফর। আমাদের বিশেষ সহযোগিতা যাতে আরও বিস্তৃত হয় সে ব্যাপারে তাঁর পথপ্রদর্শন আমাদের কাম্য।” তাঁর এই সফর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে একটি ‘বিরাট শক্তি’ দেবে বলে আজ মন্তব্য করেছেন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। তাঁর কথায়, “নবনিযুক্ত বিদেশ প্রতিমন্ত্রী কীর্তিবর্ধন সিংহ বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রী হাসিনাকে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন। বাংলাদেশ ভারতের অন্যতম সহযোগী এবং বিশ্বস্ত প্রতিবেশী। তাঁর এই সফর ইতিমধ্যেই বহু উদ্‌যাপিত এই সম্পর্ককে নতুন শক্তি জোগাবে।” শনিবার সকালে হাসিনাকে দিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনে আনুষ্ঠানিক সংবর্ধনা দেওয়া হবে। এর পর হাসিনা দিল্লির রাজঘাটে মোহনদাস কর্মচন্দ গান্ধীর সমাধিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভিজিটার্স বইয়ে স্বাক্ষর করবেন।

শনিবারের দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় কোন বিষয়গুলি গুরুত্ব পেতে চলেছে? বিদেশ মন্ত্রকে সূত্রে জানানো হচ্ছে, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সহযোগিতাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, প্রতিরক্ষা সহযোগিতায় নতুন মোড় তৈরি করা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানো, সংযোগ ব্যবস্থা ও দ্বিপাক্ষিক পরিকাঠামোর উন্নতি, মংলা বন্দর পরিচালনার মতো বিষয়গুলি গুরুত্ব পাবে মোদী-হাসিনা বৈঠকে। সাউথ ব্লকের বক্তব্য, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সহযোগিতা ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ বর্তমানে ভারত থেকে ১১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করছে। ভারত থেকে বাংলাদেশে হাই স্পিড ডিজ়েল পরিবহনের জন্য ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী পাইপ লাইন গত ২৩ মার্চে উদ্বোধন করেছিলেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়াও ওএনজিসি বিদেশ, অয়েল ইন্ডিয়ার সাথে একটি কনসোর্টিয়ামে তেল উত্তোলনের কাজ চলছে।

Advertisement

ভারতের দক্ষিণ এশিয়া নীতির কেন্দ্রে রয়েছে ঢাকা। অর্থনৈতিক হিসাবে এই অঞ্চলে বাংলাদেশ ভারতের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য সহযোগী। ২০২২-২৩-এর আর্থিক বছরে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য পৌঁছেছে প্রায় ২০০০ কোটি ডলারে। এই সুবৃহৎ বাণিজ্য সম্পর্কের সঙ্গে পরিকাঠামোগত প্রকল্পগুলিও সাযুজ্যপূর্ণ বলে দাবি করছে সাউথ ব্লক। নাম মাত্র সুদে ভারতের দেওয়া ঋণ প্রকল্পের অধীনে বিভিন্ন রেল প্রকল্প, শক্তি ক্ষেত্রে সহযোগিতার মতো বিষয়গুলি চলছে। এ ছাড়া রয়েছে দু’দেশের মধ্যে বয়ে যাওয়া অভিন্ন নদীগুলোর জলবণ্টন, স্থল ও সমুদ্র সীমায় বিরোধ নিরসন নিয়ে সহযোগিতা এগোনো। সীমান্ত বিরোধ মিটলেও সীমান্তে হত্যা নিয়ে অস্বস্তি যেমন রয়ে গিয়েছে, তেমনই আবার এক যুগ পেরিয়ে গেলেও তিস্তা চুক্তির জট খোলা যায়নি। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দিয়ে মোট ৫৪টি অভিন্ন নদী প্রবাহিত হচ্ছে। এর মধ্যে তিস্তার পাশাপাশি পরবর্তী অন্তত তিন বছর যে নদীটিকে ঘিরে আলোচনা কেন্দ্রীভূত হবে, সেটি হল গঙ্গা। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে গঙ্গা চুক্তির কার্যকাল শেষ হচ্ছে ২০২৬ সালের ডিসেম্বরে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement