রাজীব গাঁধী হত্যাকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন এ জি পেরারিভালন। গত ৯ মার্চ সুপ্রিম কোর্টে জামিন পেয়েছিলেন তিনি।
মায়ের সঙ্গে জেল চত্বরে পেরারিভালন। ছবি: সংগৃহীত।
প্রায় ৩১ বছর ধরে জেলবন্দি থাকার পর অবশেষে ছাড়া পেলেন রাজীব গাঁধী হত্যাকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত এ জি পেরারিভালন। গত ৯ মার্চ সুপ্রিম কোর্টে জামিন পেয়েছিলেন তিনি। শীর্ষ আদালতের সেই নির্দেশের ভিত্তিতে মঙ্গলবার তামিলনাড়ুর জেল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় পেরারিভালনকে।
১৯৯১ সালের ২১ মে তামিলনাড়ুর শ্রীপেরুমবুদুরে এক নির্বাচনী জনসভায় আত্মঘাতী বিস্ফোরণে নিহত হয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গাঁধী। ওই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন নলিনী শ্রীহরণ-সহ সাত জন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন পেরারিভালনও। অভিযোগ, যে বেল্ট বোমায় রাজীব নিহত হয়েছিলেন, তার ব্যাটারি সরবরাহ করেছিলেন তিনি। রাজীব হত্যায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর প্রায় তিন দশক ধরে জেলে ছিলেন তিনি। তার সময়ের মধ্যে তিন বার প্যারোলে ছাড়া পেয়েছিলেন। তবে গত তিন বছর ধরে পেরারিভালনের সুবিচারের জন্য আবেদন করছিলেন তাঁর মা অরুপুথম আম্মাল।
মঙ্গলবার জেলের তিরুভল্লুরের পুজ্ঝল জেল থেকে ছাড়া পান পেরারিভালন। জেলের বাইরে ছেলেকে পাশে নিয়ে অরুপুথম বলেন, ‘‘৩১ বছর ধরে সুবিচারের লড়াইয়ে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। জামিনে সাময়িক স্বস্তি মিলেছে। তবে আপনাদের সমর্থনে আমার লড়াই চলতে থাকবে। যত ক্ষণ না আমার ছেলে-সহ অন্যান্য বন্দিদের মুক্তি হয়।’’
প্রসঙ্গত, রাজীব হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে ১৯ বছরের পেরারিভালনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ১৯৯৯ সালে তাঁকে ওই মামলায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়। ওই বছরই নলিনী, মুরুগন, সান্তনের সঙ্গে পেরারিভালনের মৃত্যদণ্ডের সাজা ঘোষণা করে আদালত। যদিও ২০১৪ সালে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের ভিত্তিতে তা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাবাসের নির্দেশ দেওয়া হয়।
গত বুধবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাও এবং বিচারপতি বি আর গবইয়ের বেঞ্চ ৪৭ বছরের পেরারিভালনের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন। শীর্ষ আদালতের বক্তব্য ছিল, ইতিমধ্যেই ৩০ বছরের বেশি জেলে কাটিয়ে ফেলেছেন পেরারিভালন। পাশাপাশি বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণ, ‘‘জেলবন্দি থাকাকালীন পেরারিভালনের আচরণ নিয়ে কোনও অভিযোগ ওঠেনি।’’ ফলে ‘জামিনে মুক্তি পাওয়ার’ যোগ্য বলেও মন্তব্য করে শীর্ষ আদালত।