গুজরাতে পিটিয়ে মারা হল দলিতকে। ফাইল চিত্র।
ফের দলিত নিগ্রহ। ফের শিরোনামে গুজরাত। এখানকার রাজকোট জেলার শাপর শহরে সম্প্রতি একটি ভিডিয়ো থেকে উঠে এসেছে দলিত দম্পতির উপরে অত্যাচারের ভয়াবহ ছবি। অত্যাচারে মারা গিয়েছেন মুকেশ বানিয়া নামে ৩৫ বছরের ওই ব্যক্তি। সেই ভিডিয়ো টুইটারে পোস্ট করেছেন গুজরাতের বিধায়ক ও দলিত নেতা জিগ্নেশ মেবাণী।
ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, কোমরে দড়ি বেঁধে দিয়ে মুকেশকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারছেন আর এক ব্যক্তি। মার খেয়ে যন্ত্রণায় ককিয়ে উঠছেন মুকেশ। তাতেও থামছে না মার। তাঁর স্ত্রী জয়াবেনের উপরেও একই ভাবে নির্যাতন চালানোর অভিযোগ উঠেছে। কাগজ কুড়োনোর কাজ করতেন মুকেশ আর তার স্ত্রী। তাঁরা রবিবার সকালে চুম্বক নিয়ে লোহার ছাঁট খুঁজে বার করছিলেন একটি গাড়ির যন্ত্রাংশ তৈরির কারখানার সামনে। তখনই কারখানার কিছু লোকজন এগিয়ে আসে। তর্কাতর্কি হয়। তার পরেই চোর সন্দেহে মুকেশদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
কারখানা মালিকের নির্দেশেই দলিত দম্পতির উপরে নিগ্রহ চালানো হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। মুকেশের স্ত্রী মারধরের মধ্যেই কোনওমতে পালাতে পেরেছিলেন। তিনি গ্রাম থেকে লোকজন জড়ো করে ফের ঘটনাস্থলে এসে দেখেন, মার খেয়ে তত ক্ষণে মাটিতে লুটিয়ে পড়েছেন
মুকেশ। হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
আরও পড়ুন: আমলার নিয়োগে বদলের প্রস্তাব
টুইটারে ভিডিয়ো পোস্ট করে জিগ্নেশ লিখেছেন, ‘‘তফসিলি জাতিভুক্ত মুকেশ বানিয়াকে নির্মম ভাবে পিটিয়ে মেরেছে রাজকোটের কারখানা মালিক।’’ সঙ্গে হ্যাশট্যাগ #গুজরাতইজনটসেফফরদলিতস। এর পরে ফেসবুকে জিগ্নেশের দাবি, ‘‘এই ঘটনাটি ২০১৬ সালের উনা হামলার চেয়েও নিকৃষ্ট। উনায় দলিতদের মারধর এবং অপমান করা হয়েছিল। আর এ ক্ষেত্রে জাতি হিংসায় এক জন প্রাণ হারালেন। অতীতের ভুল থেকেও শেখেনি গুজরাত সরকার।’’
কারখানার মালিক-সহ পাঁচ জনকে রাজকোটের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। রাজকোটের সিনিয়র পুলিশ অফিসার শ্রুতি মেটা বলেছেন, ‘‘আমরা পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছি। কিন্তু কারখানা মালিকের নাম প্রকাশ করা যাবে না কারণ এফআইআরে তার নাম নেই। তফসিলি জাতি এবং তফসিলি জনজাতি রক্ষা আইনে খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে।’’ গুজরাতের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী প্রদীপসিন জা়ডেজা বলেছেন, এই ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। মুকেশের স্ত্রী জয়াবেনকে ৮ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে রাজ্য সরকার।