প্রতীকী ছবি।
মাঝেমধ্যেই কাগজের টুকরো পড়ে থাকতে দেখা যেত মাদ্রাসার পাশের রাস্তাটায়। কেউ তেমন গা করেননি। হয়তো ভেবেছিলেন, আবাসিক মাদ্রাসার বাচ্চা মেয়েগুলোর কাজ।
সত্যিই তাই। মাদ্রাসার জানলা দিয়ে উড়ে আসা একটা কাগজের গোলা এক দিন সোজা গিয়ে লাগল এক পড়শির গায়ে। কাগজের মোড়কটা খুলে স্তম্ভিত হয়ে যান লোকটি। ভিতরে লেখা ছিল— ‘আমাদের বাঁচান’।
দেরি না করে তিনি খবর দিয়েছিলেন মাদ্রাসার মালিককে। তার পর তিনি যোগাযোগ করেন পুলিশের সঙ্গে। শুক্রবার রাত ন’টা নাগাদ প্রশাসন ও পুলিশের একটি যৌথ বাহিনী হানা দেয় ওই মাদ্রাসায়। উদ্ধার করা হয়েছে ৫১ জন নাবালিকাকে। তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছে লখনউয়ের সাহাদতগঞ্জের জামিয়া খাদিজাতুল লিলানওয়াত মাদ্রাসার ডিরেক্টর কাজি মহম্মদ তৈয়াব জিয়াকে। তার বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অত্যাচার, যৌন হেনস্থা, ধর্ষণের চেষ্টার মতো অভিযোগ জানিয়েছে ছাত্রীরা।
উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন অঞ্চল, তা ছাড়া অন্যান্য রাজ্য থেকেও ওই মাদ্রাসায় ভর্তি হতে আসত ছাত্রীরা। মোট ছাত্রীসংখ্যা ছিল ১২৬। তার মধ্যে শুক্রবার ওই সময়ে মাদ্রাসায় ৫১ জন ছাত্রী ছিল। এসএসপি দীপক কুমারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি বড় দল মাদ্রাসায় হানা দিলে হইচই পড়ে যায়। পালাতে পারেনি কাজি। তাকে ধরে ফেলে পুলিশ।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, মাদ্রাসার ভিতরে যে এই কাজ চলছে, তার কিছুই জানতেন না বলে দাবি করেছেন মাদ্রাসা-মালিক। তিনি ওই মাদ্রাসা থেকে বেশ কিছুটা দূরে অন্যত্র থাকতেন। দীপক কুমার বলেন, ‘‘গোমতী নগরের বাসিন্দা ১৫ বছরের এক কিশোরী লিখিত অভিযোগে জানিয়েছে, তাদের উপর যৌন হেনস্থা করত ওই কাজি। আরও ৭ ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি করা হয়েছে বলেও অভিযোগ জানিয়েছে সে।’’ উদ্ধার হওয়া আর এক ছাত্রী জানিয়েছে, কাজির সঙ্গে যৌন সম্পর্কে রাজি না হলেই মারধর করা হতো তাদের। উদ্ধার হওয়া ছাত্রীদের আপাতত হোমে পাঠানো হয়েছে।