—প্রতীকী ছবি
গোরক্ষা নিয়ে তৎপর বিজেপি। অথচ যোগী আদিত্যনাথ জমানায় উত্তরপ্রদেশের গোশালাগুলিতে থাকা গরুগুলি প্রবল দুদর্শায় পড়েছে বলে দাবি কংগ্রেসের। গোসম্পদ রক্ষার্থে ‘গাই বচাও কিসান বচাও’ আন্দোলন করতে গিয়ে গ্রেফতার হলেন উত্তরপ্রদেশের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অজয়কুমার লাল্লু ও জনা পঞ্চাশ সমর্থক। লাল্লুর দাবি, আজও তাঁর ঝাঁসি সফর রুখতে বাড়ির বাইরে মোতায়েন রয়েছে সশস্ত্র পুলিশ।
উত্তরপ্রদেশ সরকার পরিচালিত গোশালাগুলিতে অব্যবস্থার বিরুদ্ধে বুন্দেলখণ্ড এলাকার বিভিন্ন জেলায় গত কাল আন্দোলনে নামে কংগ্রেস। এই আন্দোলনের কথা আগেই ঘোষণা করেছিল তারা। ললিতপুরের সৌজানা গোশালা থেকে পদযাত্রা করে চিত্রকূট জেলায় মন্দাকিনী নদীর তীরে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল কংগ্রেসের। সেখানে গোশালায় মৃত গরুদের জন্য তর্পণ করার কর্মসূচি ছিল তাদের। আন্দোলনকে সমর্থন করে টুইট করেন উত্তরপ্রদেশের দায়িত্বে থাকা প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। পুলিশ জানিয়েছে, ললিতপুরের ডাইলওয়ারায় আন্দোলনের সময়ে অজয়কুমার লাল্লু, জেলা কংগ্রেস সভাপতি বলবন্ত সিংহ রাজপুত ও ৫০-৬০ জন সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের দাবি, আন্দোলনের অনুমতি নেওয়া হয়নি। গ্রেফতারির পরে অজয়কুমার লাল্লু দীর্ঘক্ষণ লখনউয়ে না ফেরায় টুইটারে আলোচনা শুরু হয়। পরে রাতে তাঁকে লখনউয়ে ফেরত আনে পুলিশ।
জেলা কংগ্রেস সভাপতি বলবন্ত সিংহ রাজপুত গত কালই দাবি করেন, অন্তত ২০০ জন সমর্থককে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। পুলিশের লাঠিতে জনা চব্বিশ সমর্থক আহত হন। তিনি দাবি করেন, গোসম্পদ বা কৃষকদের নিয়ে আদতে কোনও মাথাব্যথা বিজেপির নেই।
আজ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি লাল্লু তাঁর লখনউয়ের বাড়ি থেকে ফোনে বলেন, ‘‘গত কাল ললিতপুরে আন্দোলনের সময়ে আমাকে গ্রেফতার করার পরে মধ্যপ্রদেশের ছত্তরপুরে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে আমার লখনউয়ে না ফেরা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। তখন তড়িঘড়ি আমাকে ফেরানো হয়।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘আজ আমার ঝাঁসি যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আমাকে আটকানোর জন্য বাড়ির বাইরে দু’গাড়ি ভর্তি প্রভিন্সিয়াল আর্মড কনস্টেবুলারির জওয়ান মোতায়েন করা হয়েছে।’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘গরু ও কৃষকদের মৃত্যু দেখতে আমরা রাজি নই। এই বিষয়টি নিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন হলে সরকারের সমস্যা কী? আসলে এই অগণতান্ত্রিক সরকার সব বিরোধী কণ্ঠ রুদ্ধ করতে চায়। আমি ললিতপুর থেকে মৃত গরুর চিতাভস্ম এনেছি। মন্দাকিনী নদীর তীরে তর্পণ করবই।’’
লাল্লুর ঝাঁসি সফরে বাধা দেওয়ার কথা অস্বীকার করেননি উত্তরপ্রদেশ পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি প্রশান্ত কুমার। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ঝাঁসির জেলাশাসকের তরফেই লাল্লুকে সেখানে যেতে না দেওয়ার অনুরোধ এসেছে। তাই আমরা বাহিনী মোতায়েন করেছি।’’ গত কাল কি লাল্লুকে মধ্যপ্রদেশে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল? প্রশান্তের বক্তব্য, ‘‘নিয়ে যাওয়া হয়ে থাকলেও রাতেই এক জন সার্কল অফিসার ও এক জন সাব-ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট তাঁকে লখনউয়ে ফিরিয়ে আনেন।’’