বিপর্যস্ত অসম। পিটিআইয়ের তোলা ছবি।
অসম ও অরুণাচল প্রদেশে বন্যা পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। অসমে বন্যার কারণে তিন জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। ধস নেমে অরুণাচলে বাবা-ছেলে, দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। অসমে ১২টি জেলা বন্যা কবলিত। ব্রহ্মপুত্র বিপদসীমার উপর দিয়ে বইতে থাকায় বন্ধ হয়েছে যোরহাট ও মাজুলির ফেরি পরিষেবা। জল বেড়েছে গুয়াহাটিতেও। আজ সকালে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বাক্সা জেলার ভারত-ভুটান রোড।
বরপেটা জেলার সরুপেটা, সর্থেবাড়ি, বরপেটা, শোণিতপুর জেলার গোহপুর, হালেম ও চারিদুয়ার, ধেমাজি জেলার ধেমাজি ও সিসিবরগাঁও, লখিমপুরের নাওবৈচা, বিহপুরিয়াস সুবনসিরি, তিনসুকিয়া জেলার শদিয়া, দরং জেলার মঙ্গলদৈ, নলবাড়ির টিহু, যোরহাট জেলার মাজুলি, গোয়ালপাড়া জেলার বালিজানা ও লাখিপুর, কামরূপ জেলার চন্দ্রপুর এবং বাক্সার তামুলপুর এবং ধুবুরি বন্যা কবলিত। লখিমপুর, বাক্সা ও ধুবুরি থেকে এক শিশু-সহ তিনজনের মৃত্যুর খবর এসেছে। সরকারি হিসেবেই ইতিমধ্যে প্রায় এক লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
গত কাল রাত থেকে ভুটান থেকে জল আসায় চেং নদীর জল বেড়ে বাক্সার বরমা, তামুলপুর প্লাবিত হয়েছে। তামুলপুর-ভুটান রোডে জল বইছে সেতুর উপর দিয়ে। ফলে বন্ধ হয়ে গিয়েছে রাস্তা। মরাপাগলাদিয়া নদীর জলে বাক্সা ও নলবাড়ি জেলার যোগাযোগও ছিন্ন হয়েছে। ডিব্রুগড়ে বন্যার জলে ভেঙে গিয়েছে রিং বাঁধ। বকোর চমরিয়া কাহিবাড়ি এলাকায় বাজ পড়ে জিতেন বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তি মারা গিয়েছেন। জখম হন তিনজন। শোণিতপুর, বরপেটা, ধেমাজি ও যোরহাটের বিভিন্ন অংশে রাস্তা প্লাবিত হয়েছে। ভেঙেছে বা ভেসে গিয়েছে কালভার্ট, নদীবাঁধ।
অরুণাচল প্রদেশের ইটানগরের বিবেক বিহার এলাকায় ধস নেমে শঙ্কর রাই ও তাঁর ১০ বছরের ছেলের মৃত্যু হয়েছে। রাইয়ের স্ত্রী ও আর এক ছেলে হাসপাতালে ভর্তি। মুখ্যমন্ত্রী নাবাম টুকি নিহতদের জন্য ৪ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের কথা ঘোষণা করেছেন। রাজ্য সরকার অতিবৃষ্টি ও ধসের জন্য ইটানগর থেকে বান্দরদোয়া অবধি সব স্কুল ১৩ জুন অবধি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাহাড়ের কোল বা নদীর পাশে থাকা বাসিন্দাদের অন্যত্র সরে যেতে বলা হয়েছে। রাজধানী শহরের ডোলি পোলো বিদ্যা ভবন রোড বৃষ্টি ও ধসে বিচ্ছিন্ন। ভেঙে পড়েছে চিড়িয়াখানার দেওয়াল। আপার সিয়াঙের জেলা সদর ইংকিয়ং বাকি রাজ্য থেকে বিচ্ছিন্ন। খারাপ আবহাওয়ায় বিআরটিএফ রাস্তাও সারাইয়ের কাজে হাতই দিতে পারছে না। দিবাং উপত্যকার আনিনি গত পাঁচ দিন ধরেই ধস ও হড়পা বানে মবল ভূখণ্ড থেকেই বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে। সেতু ভেসে গিয়ে একই অবস্থা আনজাওয়ের। দোতুং নদীর জল বেড়ে সমগ্র পাগলাম ডুবে গিয়েছে। অতিবৃষ্টির জেরে সিয়াং-এর গোরলুং, সিলে, ওয়ান নদীর জল বেড়ে রাসকিন এলাকার অবস্থাও শোচনীয়। পাসিঘাট, আলোতেও বানভাসি দশা।