৪১২২ মামলায় অভিযুক্ত সাং‌সদ ও বিধায়কেরা

বর্তমান ও প্রাক্তন সাংসদ-বিধায়কদের বিরুদ্ধে গোটা দেশে ৪,১২২টি ফৌজদারি মামলা ঝুলছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:২৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

বর্তমান ও প্রাক্তন সাংসদ-বিধায়কদের বিরুদ্ধে গোটা দেশে ৪,১২২টি ফৌজদারি মামলা ঝুলছে। পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন ও বর্তমান সাংসদ-বিধায়কদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার সংখ্যা ২৬৯টি। তার মধ্যে রাজ্যের বর্তমান সাংসদ-বিধায়কদের বিরুদ্ধে ২১৩টি ফৌজদারি মামলা রয়েছে। বাকি ৪৯টি মামলা প্রাক্তন সাংসদ-বিধায়কদের বিরুদ্ধে। বাকি ৭টি মামলায় স্থগিতাদেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।

Advertisement

রাজ্যের বিধায়ক সংখ্যা ২৯৪ জন। সাংসদ ৪২ জন। অর্থাৎ মোট সাংসদ-বিধায়কের সংখ্যা ৩৩৬ জন। সেই হিসেবে ২১৩টি মামলা কম নয় বলেই রাজনীতিকদের মত।

রাজ্যভিত্তিক সাংসদ-বিধায়কদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার হিসেব জড়ো করে আজ সুপ্রিম কোর্টে একটি রিপোর্ট জমা পড়েছে। সেই হিসেব অনুযায়ী, ৪,১২২টি মোট মামলার মধ্যে ২,৩২৪টি মামলাই বর্তমান সাংসদ-বিধায়কদের বিরুদ্ধে। বাকি মামলা প্রাক্তন সাংসদ-বিধায়কদের নামে। বর্তমান ও প্রাক্তন সাংসদ-বিধায়কদের বিরুদ্ধে মামলার হিসেবে প্রথম সারিতে উত্তরপ্রদেশ। সে রাজ্যের বর্তমান ও প্রাক্তন আইনপ্রণেতাদের বিরুদ্ধে ৯৯২টি মামলা ঝুলছে। তালিকায় সপ্তম স্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। উত্তরপ্রদেশের পরেই দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওড়িশা ও তামিলনাড়ু। উত্তরপ্রদেশের তুলনায় অবশ্য এই রাজ্যগুলিতে জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা অনেক কম। এক একটি রাজ্যে ৩০০-র কিছু বেশি।

Advertisement

আইনজীবীদের মতে, সব রাজ্যেই ভুয়ো মামলা দায়ের করা হয়। বিক্ষোভ, আন্দোলনে যোগ দেওয়ার জন্যও তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। যদি ৫০ শতাংশ মামলাও সেই গোত্রের বলে ধরে নেওয়া যায়, তা হলেও জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগের সংখ্যাটা কম নয়।

ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত হলে সারা জীবনের জন্য ভোটে লড়ার উপরে নিষেধাজ্ঞা ও সাংসদ-বিধায়কদের বিরুদ্ধে মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন আইনজীবী অশ্বিনী উপাধ্যায়। এই ধরনের মামলার বিচারের জন্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ-সহ ১২টি রাজ্যে ১২টি বিশেষ আদালত তৈরি হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে এই বিশেষ আদালত রয়েছে বারাসতে।

সুপ্রিম কোর্টে পেশ হওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজ্যের ২৬৯টি মামলার মধ্যে ২৩১টি মামলা বিশেষ আদালতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ১৭৮টি মামলায় এখনও চার্জই গঠন হয়নি। ৯১টি মামলায় শুনানি চলছে। বিশেষ আদালত তৈরি হলেও, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বারাসতে পৌঁছনো অসুবিধেজনক বলে অভিযোগ উঠেছে। ২০০৭ থেকে ২০১২-র মধ্যে রাজ্যে জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে এমন ১৫টি মামলা হয়েছে যাতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে। যার মধ্যে বাম জমানায় তৎকালীন কংগ্রেস বিধায়ক অর্জুন হালদার, তৃণমূলের জমানায় তৎকালীন বাম বিধায়ক সুশান্ত ঘোষের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। উত্তরপ্রদেশ, ওড়িশা, তামিলনাড়ু ছাড়াও বিহার, কেরল, মহারাষ্ট্র, ছত্তীসগঢ়ে জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে ৩০০-র বেশি মামলা ঝুলে রয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট আজ বিহার ও কেরল সরকারকে সব জেলায় বিশেষ আদালত তৈরির নির্দেশ দিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement