Bhopal Gas Tragedy

৪০ বছর আগের গ্যাস দুর্ঘটনার বিষাক্ত বর্জ্য, নিয়ে যাওয়া হবে ভোপাল থেকে ২৫০ কিমি দূরে

খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই পিথমপুরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছেন সেখানকার বাসিন্দারা। রবিবার বহু মানুষ হাতে কালো ব্যান্ড পরে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। স্লোগান উঠেছে, ‘পিথমপুরকে ভোপাল হতে দেব না’।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৭:০২
Share:

ইউনিয়ন কার্বাইডের সেই কারখানা। — ফাইল চিত্র।

ভোপালের ইউনিয়ন কার্বাইড কারখানা থেকে প্রায় ৩৭৭ মেট্রিক টন বিপজ্জনক বর্জ্য অপসারণের কাজ শুরু হল। গ্যাস দুর্ঘটনার ৪০ বছর পর রবিবার ওই কারখানা চত্বর সাফাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। কারখানা থেকে বিষাক্ত বর্জ্য সংগ্রহ করে ইনদওরের কাছে তা নিষ্কাশনের কাজ চলছে।

Advertisement

এর আগে একাধিক বার কারখানা চত্বর থেকে বিষাক্ত বর্জ্য সরানোর নির্দেশ দিয়েছে মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্ট। চলতি মাসের শুরুতেই এ জন্য কর্তৃপক্ষকে ভৎর্সনাও করে আদালত। বর্জ্য সাফাইয়ের জন্য চার সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়। তার পরেই ওই পদক্ষেপ করা হয়েছে। রবিবার সকালে বিশেষ কন্টেনার-সহ ছয়-সাতটি ট্রাক কারখানা চত্বরে পৌঁছয়। ট্রাকগুলিতে জিপিএস ট্র্যাকার ছিল। সঙ্গে ছিলেন বিশেষ পিপিই কিট পরা কর্মীরা। তাঁরা বিপজ্জনক বর্জ্য সরানোর কাজ শুরু করেন। এলাকায় পৌঁছন ভোপাল পুর কমিশনের আধিকারিক, পরিবেশকর্মী এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরাও। কারখানার আশপাশে পুলিশও মোতায়েন করা হয়। তাঁরাই জানান, এই বিপুল পরিমাণ বিষাক্ত বর্জ্য সংগ্রহ করে ভোপাল থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দূরে ইনদওরের কাছে পিথমপুরের একটি নির্দিষ্ট জায়গায় পোড়ানো হবে। এই খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই পিথমপুরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছেন সেখানকার বাসিন্দারা। রবিবার বহু মানুষ হাতে কালো ব্যান্ড পরে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। স্লোগান উঠেছে, ‘পিথমপুরকে ভোপাল হতে দেব না’।

তবে রাজ্যের গ্যাস ত্রাণ ও পুনর্বাসন দফতরের ডিরেক্টর স্বতন্ত্রকুমার সিংহ সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, ওই বর্জ্য পিথমপুরে পরিবেশ দূষণ ঘটাবে, এমন দুশ্চিন্তা অমূলক। তিনি বলেন, ‘‘ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনার বর্জ্য একটি কলঙ্ক। ঘটনার ৪০ বছর পর শেষমেশ তা সরানো হতে চলেছে। ওই বর্জ্য যাতে পিথমপুরে পাঠিয়ে যথাসম্ভব নিরাপদে নিষ্কাশন করা হয়, আমরা তা নিশ্চিত করব।” বর্জ্য পরিবহণের জন্য ভোপাল থেকে পিথমপুর পর্যন্ত ২৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘গ্রিন করিডর’ও তৈরি করা হয়েছে। স্বতন্ত্রই জানালেন, ওই বর্জ্য পোড়ানোর পর প্রথমে ছাইয়ের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করে দেখা হবে তাতে কোনও বিষাক্ত পদার্থ অবশিষ্ট রয়েছে কি না। পরীক্ষার পর ওই ছাই একটি দ্বিস্তরীয় পর্দায় ঢেকে জনবসতি থেকে দূরের কোনও এলাকায় এমনভাবে পুঁতে দেওয়া হবে, যাতে কোনও ভাবেই ওই ছাই মাটি কিংবা জলের সংস্পর্শে না আসে।

Advertisement

১৯৮৪ সালের ২ ডিসেম্বর গভীর রাতে ভোপালের ইউনিয়ন কার্বাইড কারখানা থেকে বিষাক্ত মিথাইল আইসোসায়ানেট গ্যাস লিক করে পার্শ্ববর্তী এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। ঘুমের মধ্যেই মৃত্যু হয় অনেকের। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও অনেকে মারা যান। সব মিলিয়ে সরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা ছিল ৩৭৮৭। কিন্তু বেসরকারি মতে মৃতের সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি। এর প্রভাবে নানা শারীরিক ক্ষতি হয় প্রায় পাঁচ লক্ষ মানুষের। তার পর থেকে বন্ধই পড়ে আছে কারখানাটি। আর ৪০ বছর আগের সেই গ্যাস দুর্ঘটনার ফল এখনও ভুগছে ভোপাল। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে রয়ে গিয়েছে বিষাক্ত গ্যাসের প্রভাব।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement