সমুদ্রের তলদেশ থেকে উদ্ধার হওয়া ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার। ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর সৌজন্যে পাওয়া ছবি।
নিখোঁজ হওয়ার ৩৩ দিনের মাথায় মিলল ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর ডর্নিয়ের বিমানের ধ্বংসাবশেষ। তামিলনা়ড়ুর সমুদ্রের তলদেশে প্রায় ৯৫০ মিটার গভীরে মিলেছে ওই বিমানের ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার। তবে এখনও পর্যন্ত কোনও খবর নেই ওই বিমানে থাকা উপকূলরক্ষী বাহিনীর তিন অফিসারের। বিমানের ধ্বংসাবশেষ মেলার খবর প্রকাশ করে আজ প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে, ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার থেকে বিমানের নিখোঁজ হওয়া নিয়ে অনেক তথ্য পাওয়ার আশা করছে তারা। কী ভাবে মাঝ সমুদ্রে সেটি ভেঙে পড়ল, জানা যাবে ওই তথ্য থেকেই।
গত ৮ জুন রাতে চেন্নাইয়ের উপকূলে রুটিন নজরদারি সেরে ফেরার পথে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর এই নজরদারি বিমান। সেই রাতে ন’টা তেইশ মিনিটে চিদম্বরমের তিরুচিরাপল্লির উপকূল থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে রেডারে শেষ বারের মতো ধরা পড়েছিল ওই বিমানের উপস্থিতি। তার পরই রেডার থেকে উধাও হয়ে যায় সেটি। বিমানটি চালাচ্ছিলেন ডেপুটি কম্যান্ডান্ট বিদ্যাসাগর। তাঁর সঙ্গে একই বিমানে ছিলেন কো-পাইলট ডেপুটি কম্যান্ডান্ট সুভাষ সুরেশ এবং নেভিগেটর এম কে সোনি। বিমানটি নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে খোঁজ নেই তিন জনেরই।
৯ জুন সকাল থেকেই নড়ে বসে কেন্দ্রীয় সরকার। একাধিক জাহাজ, ডুবোজাহাজ, বিমানকে লাগানো হয়েছিল ওই বিমানকে খুঁজে বার করতে। ৬৯৩ ঘণ্টা জলে আর ১৯৬ ঘণ্টা আকাশে টানা খোঁজ চালিয়েছে উদ্ধারকারী দল। উপকূলরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে তল্লাশিতে সাহায্য করছিল তামিলনাড়ু পুলিশের একটি দল, ভারতীয় নৌসেনার সদস্যরা। বিনা খরচায় উদ্ধারকাজে সাহায্যের জন্য হাত বাড়ায় রিলায়্যান্স ইন্ডিয়া-সহ একাধিক কর্পোরেট সংস্থা। আজ রিলায়্যান্স ইন্ডিয়ারই জাহাজ, এমভি অলিম্পিক ক্যানিয়ন উদ্ধার করেছে ডর্নিয়েরটির ধ্বংসাবশেষ।
আজকের এই উদ্ধার কাজকে সরকারের বড় সাফল্য বলে মেনে নিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। মন্ত্রকের মুখপাত্র সীতাংশু কর টুইটারে জানিয়েছেন, কুড্ডালোর থেকে ২০ নটিক্যাল মাইল উত্তর-পূর্বে সমুদ্রের ৯৫০ মিটার তলায় মিলেছে ওই ধ্বংসাবশেষ। উপকূলরক্ষী বাহিনীর সদর দফতরের মুখপাত্র কম্যান্ডান্ট আই জে সিংহ জানান ৬ জুলাই সমুদ্রের তলদেশ থেকে সঙ্কেত পেয়েছিল ভারতীয় নৌ বাহিনীর ডুবোজাহাজ সিন্ধুধ্বজ। তার পাঠানো সংকেত গোটা তল্লাশি কাজে বড় রকমের সাহায্য করেছে বলে জানিয়েছেন সিংহ।
তবে বিমানের ধ্বংসাবশেষের খোঁজ মিললেও উপকূলরক্ষী বাহিনীর তিন অফিসারের কী হল, তা জানতে এখনও উদ্বেগে দিন কাটাচ্ছে তাঁদের পরিবার। তল্লাশি কাজে গতি আনতে কিছু দিন আগেই কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন তাঁরা।