তছনছ: নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে জঙ্গিদের গুলির লড়াইয়ে বিধ্বস্ত বাড়ির সামনে গ্রামবাসীদের ভিড়। রবিবার কুলগামে। ছবি: পিটিআই।
১২ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ কনস্টেবল সালিম শাহকে খুনের জবাব দিল নিরাপত্তা বাহিনী। আজ সকালে কুলগাম জেলার খুদওয়ানিতে বাহিনীর সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে নিহত হল সালিম হত্যায় জড়িত তিন জঙ্গি। এক পুলিশ কর্তার কথায়, ‘‘নিহতদের এক জন পাকিস্তানের বাসিন্দা। নাম মুয়াউইয়া। অন্য দু’জনের নাম সুহেল আহমেদ দার ও মুদ্দাসর বাট। তারা স্থানীয় বাসিন্দা। নিহতেরা লস্কর ই তইবা ও হিজবুল মুজাহিদিনের সদস্য।’’
পুলিশ জানিয়েছে, আজ সকালে খুদওয়ানিতে অভিযান চালায় সেনা, জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ ও সিআরপিএফ। নিরাপত্তা বাহিনী তল্লাশি শুরু করার কিছু ক্ষণের মধ্যেই গুলি চালায় গা ঢাকা দিয়ে থাকা জঙ্গিরা। এক পুলিশ কর্তার কথায়, ‘‘নিরাপত্তা বেষ্টনী ছোট হয়ে এলেই লুকিয়ে থাকা জঙ্গিরা গুলি চালাতে শুরু করে।’’ সঙ্গে সঙ্গে জবাব দেয় বাহিনীও। দু’পক্ষের গুলির লড়াইয়ে মৃত্যু হয় তিন জঙ্গির। ঘটনাস্থল থেকে দু’টি একে ৪৭ রাইফেল উদ্ধার হয়েছে। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, স্কুল ছেড়ে দেওয়ার পরে শ্রমিকের কাজ করত সুহেল। পরে জঙ্গি দলে নাম লেখায়। সালেমের আগেও বেশ কয়েকটি খুনে নাম জড়িয়েছে মুয়াউইয়ার। খুনের বাকি ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করা গিয়েছে। তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করছে পুলিশ।
শুক্রবার কুলগামের মুটালহামায় তাঁর বাড়ি থেকে সালিমকে অপহরণ করে জঙ্গিরা। ছুটি কাটাতে সেখানে এসেছিলেন তিনি। গত কাল পাশের গ্রাম থেকে দেহটি পাওয়া যায়। পুলিশ জানিয়েছে, খুনের আগে সালিমের উপর অত্যাচার চালিয়েছিল জঙ্গিরা। ওই কনেস্টবলই ছিলেন সংসারে একমাত্র রোজগেরে। তাঁর বাড়িতে বয়স্ক বাবা-মা, দুই ভাই ও অবিবাহিতা এক বোন রয়েছেন।
চলতি বছর এই নিয়ে উপত্যকায় ২৫ জন পুলিশ আধিকারিককে হত্যা করল জঙ্গিরা। তাঁদের অনেককেই বাড়ি থেকে অপহরণ করে খুন করা হয়েছে। চলতি মাসের গোড়ায় শোপিয়ান জেলায় পুলিশ কনস্টেবল জাভেদ আহমেদকে একই ভাবে বাড়ি থেকে অপহরণ করে হত্যা করে জঙ্গিরা। গত মাসে ইদের ছুটিতে জম্মুর বাড়িতে ফেরার সময়ে গাড়ি থেকে তুলে নিয়ে খুন করা হয় সেনা জওয়ান ঔরঙ্গজেবকে। পুলওয়ামা থেকে তাঁর দেহটি উদ্ধার হয়। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ বলছেন, ‘‘কাশ্মীরি যুবকেরা যাতে বাহিনীতে যোগ দিতে ভয় পান, তা নিশ্চিত করতে বাহিনীর উপরে বার বার হামলা চালাচ্ছে জঙ্গিরা।’’ এক পুলিশ কর্তা বলেছেন, ‘‘বাহিনীর উপর হামলা হলে দ্রুত শেষ করা হবে হামলাকারীদের। আজকের অভিযানে এই বার্তাই দেওয়া হল।’’
স্থানীয় সূত্রে খবর, কুলগামের রেদওয়ানি ও কাতরাসু গ্রামে সুহেল ও মুদ্দাসারের শেষকৃত্যে হাজার হাজার মানুষ জমা হন। সেখানে জড়ো হয়ে শূন্যে গুলি চালায় বেশ কয়েক জন জঙ্গি।