প্রতীকী ছবি।
আন্তর্জাতিক রাগবি ম্যাচে অংশগ্রহণ করানোর অছিলায় বাবা-মায়ের কাছ থেকে প্রচুর টাকা নিয়ে কিশোরদের বিদেশে পাচার করে দেয়। সম্প্রতি এমনই একটি পাচার চক্রের হদিশ পেয়েছে সিবিআই। দিল্লি এবং ফরিদাবাদ থেকে ললিত ডেভিড ডিন, সঞ্জীব রাজ এবং বরুণ চৌধুরীর নামে তিন জন গ্রেফতারও হয়েছে। সিবিআই জানিয়েছে, দিল্লি, হরিয়ানা এবং পঞ্জাব— মূলত এই তিন জায়গাতেই সক্রিয় এই চক্রটি। সম্প্রতি ফ্রান্সে তদন্তকারীরা পাচার হয়ে যাওয়া এমনই একজন কিশোরকে উদ্ধার করেন। তাদের কাছ থেকেই এই পাচার চক্রের হদিশ পায় সিবিআই।
কী ভাবে এই চক্রের খোঁজ মিলল?
সিবিআই সূত্রে খবর, ২০১৬ ফেব্রুয়ারি মাসে দিল্লি, হরিয়ানা থেকে ২৫ জন ছেলেকে নিয়ে ফ্রান্সে রওনা দেয় ধৃত তিন জন। তাদের অভিভাবকদের জানানো হয়েছিল, ফ্রান্সে একটি আন্তর্জাতিক রাগবি ম্যাচ হবে। তার জন্যই তাদের ফ্রান্সে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এর জন্য প্রতিটা পড়ুয়ার অভিভাবকের কাছ থেকে ২৫-৩০ লক্ষ টাকাও নেয়। সত্যিই যে এমন একটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ হতে চলেছে তার প্রমাণ হিসাবে ফ্রান্সের একটি ভুয়ো আমন্ত্রণপত্রও দেখানো হয়। ওই ২৫ জন পড়ুয়াকে বাছাই করার পর সপ্তাহখানেকের জন্য একটি রাগবি প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়। তারপর নকল নথি দেখিয়ে ফ্রান্স দূতাবাসে ভিসার জন্য আবেদন করা হয়। এই ভাবে ২৫ জন পড়ুয়াকে নিয়ে ফ্রান্সে রওনা দেয় অভিযুক্তরা। কিন্তু সেখানে যাওয়ার কিছু দিন পরই তাদের ফেরার টিকিট বাতিল করে দিয়ে দেশে ফিরে আসে পাচারকারীরা। আর ওই ২৫ কিশোরকে ফ্রান্সের একটি গুরুদ্বারে রেখে আসে। সম্প্রতি এমন একজন পড়ুয়া ফ্রান্সের তদন্তকারীদের হাতে পড়ে। তার কাছ থেকে সবটা শোনার পর ভারতের সিবিআইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ফ্রান্স তদন্তকারীরা।
আরও পড়ুন: হাফিজের সভায় প্যালেস্তিনীয় রাষ্ট্রদূত, অস্বস্তিতে নয়াদিল্লি
এই বিষয়টির তদন্ত করতে গিয়ে এমন আরও দুই কিশোরের খোঁজ পেয়েছে সিবিআই। ওই দু’জনও পাচার হয়ে যাওয়া ওই ২৫ জন কিশোরের মধ্যে ছিল। কিন্তু পাচারকারীদের উদ্দেশ্য আঁচ করে নিয়ে তাদের চোখে ফাঁকি দিয়ে ফেরার টিকিট বাতিল করার আগেই তারা দেশে ফিরে আসে। তবে এখনও বাকি ২২ জন কিশোরের কোনও খোঁজ মেলেনি বলে জানিয়েছেন সিবিআইয়ের মুখপাত্র অভিষেক দয়াল। তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছে সিবিআই। এই ২৫ জন ছাড়া আর কোনও কিশোরকে এইভাবে পাচার করা হয়েছে কি না তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।