প্রতীকী চিত্র
শরীরে কোথাও হাড় ভেঙে গেলে চুন হলুদ লাগানো হত আগেকার দিনে। বিভিন্ন আয়ুর্বেদিক তেল দিয়ে চলত মাসাজও। তেমনই মা ভেবেছিলেন, ছেলের ভেঙে যাওয়া গোড়ালিতে তেল মাসাজ করে দিলে হয়তো ব্যথার উপশম হতে পারে। ভেবেছিলেন, মাসাজের গুণে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে ছেলে। কিন্তু তার ফল যে এমন মারাত্মক হতে পারে তা বোধহয় দুঃস্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেননি মা।
গত বছর সেপ্টেম্বর মাস নাগাদ ব্যাডমিন্টন খেলতে গিয়ে গোড়ালিতে মারাত্মক চোট পেয়েছিলেন দিল্লির এক যুবক। গোড়ালির হাড় ভেঙে গিয়েছিল। দিল্লির এইমস-এ ভর্তি হয়েছিলেন ২৩ বছরের ওই যুবক। তাঁর পায়ে প্লাস্টার করে দেন চিকিৎসকরা। কিন্তু এর পরেই শুরু হয় সমস্যা। পায়ের শিরায় রক্ত জমাট বেঁধে যায়, ফুলতে শুরু করে আহত পা’টি। প্লাস্টার খুলে বাড়িতে আসার পরেও সমস্যা থেকে যায়।
আরও পড়ুন: রোগা হতে ওয়েট লস ক্যাম্পে গেল ‘আঙ্কেল ফ্যাটি’
এখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন ওই যুবক
এইমস-এর চিকিৎসক সুধীর গুপ্তা জানালেন, ১০০,০০০ রোগীর মধ্যে ৭০ জনের ক্ষেত্রে ‘ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস’ দেখা যায়। প্লাস্টার করার ফলেই এটা হয়। এ ক্ষেত্রেও ‘ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস’-এর সমস্যায় ভুগছিলেন ওই যুবক। হাসপাতাল থেকে বাড়ি আসার পরও পায়ের যন্ত্রণা কমছিল না তাঁর। তখনই ছেলেকে যন্ত্রণা থেকে উপশম দিতে পায়ে মাসাজ করে দিয়েছিলেন মা। এর কিছু ক্ষণের মধ্যেই মৃত্যু হয় ওই যুবকের।
ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা গিয়েছে, ওই যুবকের পায়ে রক্ত জমাট বেঁধে ছিল। মাসাজ করায় ‘ব্লাড ক্লট’টি পা থেকে পালমোনারি আর্টারিতে চলে যায়। এতেই মৃত্যু হয় ওই যুবকের।
সুধীরবাবু বললেন, ‘‘এই ঘটনা সকলের কাছে একটা উদাহরণ হওয়া উচিত। কখনওই অর্থোপেডিকের পরামর্শ না নিয়ে এ ধরনের কাজ করা উচিত নয়। আয়ুর্বেদিক তেল বা কোনও ক্রিম লাগানো যেতে পারে। কিন্তু জোর করে মাসাজ করা কখনওই উচিত নয়।’’
সম্প্রতি মেডিকো লিগাল জার্নাল নামের একটি ম্যাগাজিনে এই ঘটনাটিকে বিশেষ ভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, সুস্থ থাকতে মাঝে মধ্যে মাসাজ করা ভাল। কিন্তু মনে রাখতে হবে মাসাজ ছোটখাট ব্যথার জন্য আরামদায়ক হলেও জোর করে মাসাজ করা কখনওই উচিত নয়।